দার্জিলিঙে তুষারপাত বন্ধ, ভিড় টাইগার হিলে

কোথায় বরফ! শনিবার সাতসকালে দার্জিলিঙে পৌঁছে বরফ না দেখে অনেকেই হতাশ হয়ে পড়েছিলেন। তখনই খবর মেলে টাইগার হিল নাকি সাদা হয়ে রয়েছে। ব্যস! সেই বার্তা রটে যেতেই সারি সারি গাড়ির গন্তব্য হল টাইগার হিল।

Advertisement

বিশ্বরূপ বসাক

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ৩০ ডিসেম্বর ২০১৮ ০১:৫৮
Share:

পায়ে পায়ে: টাইগার হিলের পথে। শনিবার। নিজস্ব চিত্র

কোথায় বরফ! শনিবার সাতসকালে দার্জিলিঙে পৌঁছে বরফ না দেখে অনেকেই হতাশ হয়ে পড়েছিলেন। তখনই খবর মেলে টাইগার হিল নাকি সাদা হয়ে রয়েছে। ব্যস! সেই বার্তা রটে যেতেই সারি সারি গাড়ির গন্তব্য হল টাইগার হিল। কিন্তু ঘুম থেকে খানিকটা এগোতেই থমকে যায় সব গাড়ি। রাস্তা যে বরফের চাদরে ঢাকা। গাড়ির চাকা পিছলে যাচ্ছে। না হলে, যে পথ গাড়িতে ২০ মিনিটে পাড়ি দেওয়া যায়, সেই টাইগার হিলের চূড়োয় পৌঁছতে প্রায় আড়াই ঘণ্টা লাগে!

Advertisement

তাই দেখা গেল, বরফে মোড়া পাহাড়ি পথে টাইগার হিলের দিকে সারিবদ্ধ ভাবে হাঁটছেন শ’য়ে-শ’য়ে মানুষ। উত্তর ভারতে অনেক সময় এমন দৃশ্য দেখা যায়। এ বার দার্জিলিং পাহাড়েও তা দেখে জিটিএ-র কেয়ারটেকার চেয়ারম্যান বিনয় তামাং বলেছেন, ‘‘কেন দার্জিলিং কুইন অব হিলস তা আরও একবার বুঝিয়ে দিল প্রকৃতি। আমরা টাইগার হিলে থাকার জায়গা করছি। তার আগে প্রকৃতি নিজেই টাইগার হিলকে অপরূপ করে দিল।’’

পাহাড়ে যে বরফ পড়ছে, সে খবর শুক্রবারই ছড়িয়ে যায়। সাদা হয়ে থাকা দার্জিলিং আর তার আশেপাশে অনেক জায়গার ছবি ছেয়ে যায় সোশ্যাল মিডিয়াতেও। এমনিতেই এ বার শীতে দার্জিলিং পাহাড়ে পর্যটক উপচে পড়ছে। তার মধ্যে আরও অনেকে বর্ষশেষের ছুটিতে দার্জিলিং ছোটেন। যেমন পশ্চিম মেদিনীপুর থেকে আসা প্রসেনজিৎ রায়ের কথা শোনা যাক। বরফ পড়ার খবর পেয়ে তাঁরা ৫ জন শিলিগুড়ির বাসে উঠে পড়েছিলেন। এ দিন সকালে শিলিগুড়ি পৌঁছে শেয়ার জিপে সটান দার্জিলিং। সেখান থেকে টাইগার হিল। প্রসেনজিৎ বলেন, ‘‘তার পরে কী হাঁটাটাই না হাঁটলাম! পা পিছলে যাচ্ছে বরফের চাদরে। লাঠি হাতে হাঁটলেও যেন পড়ে যাব মনে হচ্ছিল। কিন্তু, ঝকঝকে রোদ থাকায় অসুবিধে হয়নি। ধীরেসুস্থে হেঁটে সওয়া ২ ঘণ্টার মাথায় পৌঁছেছি টাইগার হিলে। এমন অভিজ্ঞতা আগে কোনও দিন হয়নি। জীবনে ভুলব না।’’

Advertisement

আরও পড়ুন: রিশপের রাস্তায় বরফ দেখে বাঁধ ভাঙল উচ্ছ্বাস

তবে বিপদও কম ছিল না। শুক্রবার বিকেল থেকে রাত অবধি তুষারপাতে টাইগার হিলের পথ প্রায় ৩-৪ ইঞ্চি পুরু বরফের চাদরের নীচে চলে যায়। তাই ঘুম থেকে উপরে দিকে কিলোমিটার খানেক ওঠার পরেই গাড়ি এগোয়নি। একটা গাড়ি সাহস করে কিছুটা যেতে গিয়ে বাঁকের মুখে খাদে পড়ে যেতে যেতে বেঁচেছে। যাত্রীরাই নেমে ঠেলেঠুলে সেটাকে সোজা করে দেন। চালক অর্জুন শেরপা বলেন, ‘‘ঝুঁকি নেওয়াটা ঠিক হয়নি। যাই হোক, তার পরে কাউকে আর গাড়ি নিয়ে যেতে দেওয়া হয়নি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন