car

আ মরি গাড়ির ভাষা

চলতি কা নাম গাড়ি। সেই গাড়িরও নিজস্ব কিছু ‘শব্দ’ থাকে। গাড়ির সামনে-পিছনে, কখনও আবার ফুয়েল ট্যাঙ্কের উপরে সেই লেখায় কখনও থমকে যেতে হয়, চমকে যেতে হয়। চলমান তেমনই কিছু বাহন-লিপি পড়ে দেখলেন গৌরব বিশ্বাস।চলতি কা নাম গাড়ি। সেই গাড়িরও নিজস্ব কিছু ‘শব্দ’ থাকে। গাড়ির সামনে-পিছনে, কখনও আবার ফুয়েল ট্যাঙ্কের উপরে সেই লেখায় কখনও থমকে যেতে হয়, চমকে যেতে হয়। চলমান তেমনই কিছু বাহন-লিপি পড়ে দেখলেন গৌরব বিশ্বাস।

Advertisement
শেষ আপডেট: ১৭ অক্টোবর ২০১৭ ০৭:১৫
Share:

‘শুধু যাওয়া আসা শুধু স্রোতে ভাসা...।’

Advertisement

রবি ঠাকুর বলে গিয়েছেন সেই কবে! কিন্তু শুধু যাওয়া-আসা করলেই তো হবে না। কিছু তো বলারও থাকতে পারে। তাই চাট্টি লিখন।

লিখন বললেই অবশ্য মনের মধ্যে অনেক কিছু ভুরভুরি কেটে ওঠে। ভোটের বাজারে দেওয়াল লিখন (‌স্যোশাল মিডিয়ায় এখন অবশ্য ওয়াল-লিখন), ভোটের পরে প্রার্থী ও জনতার কপাল লিখন। জামানত জব্দ হলে তো কথাই নেই— এক্কেবারে বিধির লিখন! যাকে বলে পাবলিকের মার...

Advertisement

তো আসল কথাটা হচ্ছে কিছু একটা বলতে হবে। কিন্তু বলা মানে তো হাওয়ায় ভাসিয়ে দেওয়া। অতএব লিখতে হবে। যেটা থেকে যাবে। সারা জীবনের দরকার নেই, কিছুদিনই সই! তবে সে লিখন সর্বদা যে সুখের হবে, এমন কথাও হলফ করে ব‌লা যায় না।

গাড়ির কথাই ধরা যাক। বাস, লরি, অটো, টেম্পো তো বটেই, মোটরবাইকের অগ্র-পশ্চাতেও কত কথাই না লেখা থাকে‌! সে কি কেবলই কথার কথা? একেবারেই না। সেই ‘বাহনলিপি’-র অমোঘ ক্ষমতাকে অবজ্ঞা করে, সাধ্যি কার!

ভয় কী পাগল

৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক। নামেই জাতীয়। পিচ উঠে, গর্ত বেরিয়ে জাত গিয়েছে কবেই। নদিয়া থেকে মুর্শিদাবাদে ঢোকার মুখে বড় একটা বাঁকে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছিল। মাঝে-মধ্যেই দেখা যেত পাশের নয়ানজুলিতে পাল্টি খেয়ে পড়ে রয়েছে কোনও না কোনও গাড়ি। স্থানীয় পঞ্চায়েত একটা নোটিসও লটকে দিয়েছিল—‘সামনে বড় বাঁক। দুর্ঘটনা এড়াতে গাড়ি ধীরে চালান।’ সে নোটিস কিছু দিন পরে হাওয়া হয়ে গেল। এর পরে খুঁটির উপরে সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে লেখা হল—‘দুর্ঘটনাপ্রবণ মণ্ডল’। আমরা মজা করে পড়তাম, ‘দুর্ঘটনাপ্রণব মণ্ডল।’ কিন্তু লেখা থাকল লেখার জায়গায়। গতি থাকল অ্যাক্সিলেটরে। চালকদের মতি ফিরল না। গাড়ি চলত আপন বেগে পাগলপারা হয়ে।

অতএব দুর্ঘটনা। সপ্তাহে সাত দিন পালা করে ওই জায়গায় দেহ রাখত ম্যাটাডর, ট্রাক কিংবা অন্য কোনও গাড়ি। ক্রেন এসে একটাকে তুলতে না তুলতেই শূন্যস্থান পূরণের মতো হাজির হতো আর একটা।

কুয়াশায় ঢাকা এক শীত-সকালে দেখা গেল, একটি ট্রাক নয়ানজুলিতে মুখ থুবড়ে পড়ে রয়েছে। সামনের দিকটা ভাল দেখা যাচ্ছে না। চারপাশে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে কাচ, যন্ত্রাংশ। সামনের একটি চাকা খুলে পড়ে গাড়ি থেকে বেশ কিছুটা দূরে। শুধু পিছনের দু’জোড়া চাকা কোনও মতে জানান দিচ্ছে, ঘটনা বেশ গুরুতর। আর জেগে রয়েছে পিলে চমকানো সেই লেখা— ভয় কী পাগল, আমি তো আছি!

কোন আক্কেলে যে ট্রাকের পিছনে এমন বাণী লেখা হয়েছিল কে জানে! তবে রাস্তা দিয়ে যত লোকজন গিয়েছেন (যাঁরা বাংলা ভাষা পড়তে পারেন) তাঁরা কেউই ওই লেখার দিকে না তাকিয়ে পারেননি!

রাখে হরি মারে কে

সে-ও এক শীতকাল। হাড়কাঁপানো ঠান্ডা পড়ছে। টুপ করে সুয্যি পাটে। ঝুপ করে নামছে সন্ধ্যা। তেহট্টের সীমান্ত ঘেঁষা এক গ্রামে আচমকাই মারা গেলেন এক বৃদ্ধ। কাছে-পিঠে শ্মশান আছে। কিন্তু বৃদ্ধের শেষ ইচ্ছে ছিল, মারা গেলে যেন তাঁকে গৌরগঙ্গার দেশেই দাহ করা হয়।

সেই ইচ্ছেপূরণ করতে ভাড়া করা হল ‘ছোট হাতি’। এলাকার কিছু লোকজন, আত্মীয়েরা দেহ নিয়ে রওনা দিলেন নবদ্বীপের উদ্দেশে। রাস্তাও বড় কম নয়। এ দিকে, সন্ধ্যার পরে শীত আরও জাঁকিয়ে পড়েছে। কুয়াশা ঢেকেছে রাস্তা। গাড়ি চলছিল সাবধানেই।

কিন্তু কিছুটা দূর যাওয়ার পরেই গাড়ি থামল। শীতকে বাগে আনতে একটু গলা না ভেজালেই নয়। তা ছাড়া শীত-গ্রীষ্ম-বর্ষা, যে ঋতুই হোক না কেন, ‘হওয়া থেকে মরা’ জল ছাড়া যেন চলে না। শীত বাগে এসেছিল কি না জানা নেই, কিন্তু গতি বাগে ছিল না। কুয়াশা ফুঁড়ে হাওয়ার বেগে ছুটতে শুরু করল ‘ছোট হাতি’।

রাস্তার দু’পাশে, বেশ কিছুটা নীচে সার দেওয়া ঘরবাড়ি, গাছপালা। গাড়ির গতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে সে সবও ছুটছে উল্টো দিকে। আচমকাই বিকট আওয়াজ। সামনে থেকে আসা একটি গাড়ির সঙ্গে একেবারে মুখোমুখি ধাক্কা। মৃতদেহ ছিটকে গিয়ে পড়ল রাস্তার পাশের বাড়ির চালে। সঙ্গের লোকজনও কেউ ছিটকে পড়লেন সেই দেহের উপরে, কেউ রাস্তায়। বেশ কয়েক জন মারা গেলেন। জখমের সংখ্যাও নেহাত কম ছিল না।

গাড়িটা বেমালুম উল্টে পড়েছিল রাস্তার উপরে। চারপাশে হইচই, কান্না, রক্ত, পুলিশ, দমকল, ক্রেন। তড়িঘড়ি চলছে উদ্ধারের কাজ। জখমদের পাঠানো হচ্ছে হাসপাতালে। আচমকাই এক জনকে পাওয়া গেল গাড়ির ঠিক সামনে। উপুড় হয়ে পড়ে রয়েছে। সমস্বরে ছিটকে এল— ‘বেঁচে আছে তো?’ ঠিক তখনই বছর তিরিশের যুবকটি যেন একটু নড়ে উঠল। সঙ্গে-সঙ্গে পুলিশের একটি গাড়ি ওই যুবককে নিয়ে ছুটল হাসপাতালের দিকে। জোরালো টর্চের আলোয় দেখা গেল সেই ‘ছোট হাতি’-র পিছনে লেখা রয়েছে, ‘রাখে হরি, মারে কে!’

আসুন বৌদি

সময়টা আশির দশকের মাঝামাঝি। নবদ্বীপের রাস্তায় দাপিয়ে চলত একটা রিকশা, ‘ময়ূরপঙ্খী’। যেমন বাহনের বাহার, তেমনই তার মালিকের। কী কায়দায় রিকশাটা সব সময়ে নতুন থাকত তা নিয়ে আলোচনা বড় কম হতো না। তবে সবথেকে বড় বিস্ময় ছিল বিবিধ ভারতী। তখনও মফস্‌সলের রাস্তায় তেমন যানজট হতো না। প্যাডেলে চাপ পড়লেই ‘ময়ূরপঙ্খী’ যেন উড়ত। হাওয়ায় ভাসত ‘হাওয়া মে উড়তা যায়ে মেরা লাল দুপট্টা মলমল কা...।’ লতা, কিশোর, রফি, মুকেশে গমগম করত সেই ত্রিচক্রযান। রিকশার সিটের নীচে লুকোনো থাকত রেডিওটা। বাইরে থেকে দেখা যেত ভলিউম আর টিউনিং-এর নব দু’টো। আর ছিল রিকশার পিছনে লেখা একটা লাইন—‘আসুন বৌদি স্বপ্নের ময়ূরপঙ্খীতে।’ শোনা যায় শৌখিন ওই রিকশাচালক সে কালের নামী ‘ওলি’ সুগন্ধী ব্যবহার করতেন, যাতে রিকশা চালানোর সময় আরোহীর নাকে সুগন্ধ যায়।

নবদ্বীপের রাস্তা থেকে সেই ‘ময়ূরপঙ্খী’ হারিয়ে গিয়েছে কবেই। তাই বলে রিকশা-লিপি কিন্তু বন্ধ হয়নি। বরং সময়ের সঙ্গে-সঙ্গে তা আরও অন্য রকম হয়েছে। ‘ময়ুরপঙ্খী’র পরে আরও একটা রিকশার দেখা মিলেছিল নবদ্বীপে। নিতান্ত সাদামাটা একটা রিকশা। আরও সাদামাটা তার চালক। কিন্তু বাহনের পিছনে কালো রঙের একটা সরু পাতে সাদা অক্ষরে লেখা, ‘যুক্তি দিয়ে বিচার করো— সক্রেটিস।’ এর জন্যও বুকের পাটা লাগে বই কী! এটা লেখার বুদ্ধি কার মাথা থেকে বেরিয়েছে? প্রশ্ন শুনে ঘাবড়ে গিয়ে চালক শুধু বলেছিলেন, ‘ওটা কি কোনও খারাপ কথা, দাদা? মালিকের কাছ থেকে ভাড়া নিয়ে চালাই তো। হয়তো তিনিই লিখিয়েছেন। আমি তো লেখাপড়াই জানি না।’

বছর কয়েক আগে বহরমপুর বাসস্ট্যান্ডের কাছে এক রিকশা চালকের সঙ্গে আলাপ হয়েছিল। আক্ষেপ করে বলছিলেন, ‘মানুষ অপরকে হেয় করে বড় আনন্দ পায়, জানেন। হাঁটুর বয়সী ছেলেমেয়েরাও তুই-তোকারি করে। খারাপ লাগে। তবে পেটের জন্য সে অপমানও সহ্য করতে হয়।’ কেন মেহনতি মানুষ কি প্রতিবাদ করতে ভুলে গিয়েছে? হাসতে হাসতে নিজের আসনে বসেন বৃদ্ধ। রিকশা গড়াতে থাকে। চলন্ত সেই রিকশার পিছনের লেখা পড়তে কোনও অসুবিধা হয় না— ‘সম্মান দিলে সম্মান পাবেন।’ সম্প্রতি কলকাতার রাস্তায় দেখা একটি রিকশা-লিখনও মনে রাখার মতো। ‘মানুষ চিনতেই ব্যাটারি শেষ।’

শ্বশুরের আশীর্বাদ

নদিয়ার সীমান্ত ঘেঁষা গঞ্জের এক উঠতি যুবক। নিজের কোনও মোটরবাইক নেই। তবে চালানো শিখে নিয়েছেন বন্ধুদের কাছেই। ইয়ার-দোস্তের বাইক নিয়েই মাঝে-মধ্যেই এ পাড়া-বেপাড়ায় ধুম মাচানো। কিন্তু ষাটের উপরে স্পিড তুলেও অস্বস্তির কাঁটা মাঝে-মধ্যে বিঁধত— ‘এখনও নিজের একটা বাইক হল না মাইরি! এটা কি জীবন হল কালীদা?’

‘কালীদা’ মুশকিল আসান করেননি। করেছিলেন সেই যুবকের শ্বশুরমশাই। হালফিলের মডেল। লাথি মারার দরকার নেই। বোতাম টিপলেই গর্জে ওঠে। লাল রঙের বাইক তো নয়, যেন বাঘের বাচ্চা। গাড়ি তো হল। হোয়াট নেক্সট?

নাহ্, কোনও বিজ্ঞাপন নয়। গাড়ি নিয়ে সোজা ‘আর্ট-ঘরে’। হাতে লেখা চিরকুট। সাদা পাতায় ডট পেন দিয়ে স্ত্রী লিখে দিয়েছেন— ‘শ্বশুরের আশীর্বাদ।’ চিরকুটটা প্রথমে পকেট থেকে বের করে দেখে ভিরমি খাওয়ার জোগাড় হয়েছিল যুবকের। তবে তাঁর কোনও আপত্তি ধোপে টেকেনি। অগত্যা সেই যুবকের সফরসঙ্গী এখন ‘শ্বশুরের আশীর্বাদ’। সঙ্গে ইয়ারবন্ধুদের গায়ে জ্বালা ধরানো হাসি। মোটরচালিত দ্বিচক্রযানটি এখনও গর্জায়। তবে ওই যুবকের মনে হয়, বাঘ নয়। যেন বিড়াল ডাকছে! ম্যাও...

অটো-গ্রাফ

বর্ষার মেঘ, আর অটো চালকের মেজাজ দুই-ই সমান। কখন গর্জাবে আর কখন বর্ষাবে, বোঝা মুশকিল। ফলে সেই অটোলিপি যে একটু অন্য মেজাজের হবে তা বলাই বাহুল্য। অটোতে বোধহয় সবথেকে বেশি গণ্ডগোল হয় খুচরো নিয়ে। নোট বের করলেই অটো চালক এমন ভাবে তাকান, মনে হয় ‘ফ্রি’-তে যেন কেউ কিডনি চাইছে। সেই কারণেই হয়তো দমদমের সেই চালক অটোর গায়ে লিখে রেখেছেন—‘খুচরো ঝামেলা করবেন না।’

তবে অটোর শরীরে শুধুই রাগ ভাবলে ভুল হবে। এখনকার ট্যাক্সিতে ‘নো রিফিউজাল’ লিখে রাখতে হয়। অটো কিন্তু এ ব্যাপারে বরাবর উদার। তার অঘোষিত নীতিই হল, যত পারো যাত্রী তুলে নাও। সেই কারণেই অটোর পিছনে দিব্যি লেখা থাকতে পারে—‘না বলতে নেই।’

শহরের রাস্তায় অটোর সামনের দিকে তাকালে চমকে উঠতে হয়। বাইরে থেকে যাকে আপনি অটোর হ্যান্ডেলের ঠিক উল্টো দিকে যাঁকে বসে থাকতে দেখছেন, তিনি কিন্তু মোটেই চালক নন। আসলে, চালকের আসনে বসে নিরীহ কোনও যাত্রী। তা হলে চালক? তিনিও আছেন। এক্কেবারে সাইডে বসে জিমন্যাস্টের মতো অটোচালকই পারেন এ ভাবে গাড়ি নিয়ে উড়তে। ফলে তার পিছনে ‘ডোন্ট কেয়ার’, ‘চিতা’ কিংবা ‘নায়ক’ লেখা থাকবে এতে আর আশ্চর্য কী!

যেমন ভাবে এক জন অটো-ক্র্যাট (পড়ুন, অটোর চালক কিংবা মালিক) ট্রাফিক সার্জেন্টের মুখের উপর দুম করে বলে দিতে পারেন, ‘মানি না কোনও আইন, দেবো না কোনও ফাইন’। এত সাহস? সে উত্তরও লেখা আছে অটোর শরীরে— ‘আমার দাদা আছে।’ আর কে না জানে, এ দাদা আলাদা!

তবে অটো চালকের রসবোধও ঈর্ষা করার মতো। কলকাতার রাস্তাতেই এক মহিলা অটোয় বসেছেন চালকের বাঁ পাশে। মাঝে-মধ্যে হাওয়ায় উড়ছে আঁচল। হাতেও বেশ কয়েকটি ব্যাগ। ছুটন্ত অটোতে বসে একই সঙ্গে আঁচল, ব্যাগ সামলানোর পাশাপাশি অফিসযাত্রী ওই মহিলাকে পার্স থেকে অটোর ভাড়া বের করতে দেখে চালক বলেছিলেন, ‘বৌদি তো দেখছি জেমস বন্ড!’

হর্ন প্লিজ-ওকে

তামাম ভারতবর্ষে কত রকম যে বাহনলিপি আছে তার ইয়ত্তা নেই। ‘দেখলে হবে খরচা আছে’ কিংবা ‘দেখবি আর জ্বলবি, লুচির মতো ফুলবি’ তো বেশ পরিচিত গাড়ি-লিখন। তা ছাড়া সাহিত্য, সঙ্গীত, ইতিহাস, ভূগোল, দর্শন, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, খেলা, রাজনীতি-সহ নানা বিষয়ও উঠে এসেছে এই বাহনলিপিতে। সম্প্রতি চোখে পড়ল এক ট্রাকের ফুয়েল ট্যাঙ্ক। সেখানে লেখা রয়েছে—‘বেশি খেয়ো না, বাবু বকবে’। শেষ করি ‘হর্ন প্লিজ’ এবং ‘ওকে’ দিয়ে। কমবেশি প্রায় সব গাড়ির পিছনেই এই শব্দ দু’টি লেখা থাকে। কিন্তু কোথা থেকে এল এই শব্দ দু’টি? এর পিছনে লুকিয়ে রয়েছে এক আশ্চর্য ইতিহাস। সন্ধান নিতে গেলে পিছিয়ে যেতে হবে সেই দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের কালে। যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে ডিজেলের অভাবে অনেক সময়েই ট্রাক চালাতে কেরোসিন ব্যবহার করা হত। কেরোসিনে চালিত এই ট্রাকগুলিকে ব্যাপক ঝুঁকি নিয়ে চলতে হত। সামান্যতম দুর্ঘটনায় কেরোসিন-চালিত ট্রাকের বিস্ফোরণের সম্ভাবনা ছিল বিপুল। পিছনের গাড়িকে সতর্ক করার জন্য সেই সময়ে সামরিক ট্রাকের পিছনে লেখা থাকত— ‘হর্ন প্লিজ’ এবং ‘অন কেরোসিন’। সেই লিখন আজও সচল। কেবল ‘অন কেরোসিন’ সংক্ষিপ্ত হয়ে ‘ওকে’ হয়ে গিয়েছে।

গাড়ির বুলি বোঝা গেল তো? ওকে?

অঙ্কন—অর্ঘ্য মান্না

(ঋণ: ‘বাহনলিপি’(আনন্দ)— গৌতমকুমার দে, এবেলা ও দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায়)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন