কংগ্রেস ছাড়ছেন মইনুল, মান্নানের মন্তব্যে বিতর্ক

দলের মহিলা সম্মেলনে এসে দুই কংগ্রেস বিধায়কের তৃণমূলে যোগ দেওয়ার জল্পনাকে ফের উস্কে দিলেন মুর্শিদাবাদ জেলা তৃণমূল সভাপতি মান্নান হোসেন। রবিবার সুতির ছাবঘাটিতে মান্নান মন্তব্য করেন, ‘‘রঘুনাথগঞ্জের বিধায়ক আখরুজ্জামান-সহ জেলার আরও কয়েক জন কংগ্রেস নেতা তৃণমূলে আসতে চেয়েছেন।’’

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

সুতি শেষ আপডেট: ২৭ জুলাই ২০১৫ ০০:৫০
Share:

সম্মেলনে মান্নান হোসেন। — নিজস্ব চিত্র।

দলের মহিলা সম্মেলনে এসে দুই কংগ্রেস বিধায়কের তৃণমূলে যোগ দেওয়ার জল্পনাকে ফের উস্কে দিলেন মুর্শিদাবাদ জেলা তৃণমূল সভাপতি মান্নান হোসেন। রবিবার সুতির ছাবঘাটিতে মান্নান মন্তব্য করেন, ‘‘রঘুনাথগঞ্জের বিধায়ক আখরুজ্জামান-সহ জেলার আরও কয়েক জন কংগ্রেস নেতা তৃণমূলে আসতে চেয়েছেন।’’ তাঁর দাবি, ‘‘১ অগস্ট রঘুনাথগঞ্জে তৃণমূলের সভায় জেলার পর্যবেক্ষক শুভেন্দু অধিকারী ফরাক্কার বিধায়ক মইনুল হকের হাতে দলের পতাকা তুলে দেবেন।’’

Advertisement

বিধানসভা ভোটের আগে মান্নানের এমন মন্তব্য প্রকাশ্যে আসতেই জেলা রাজনীতিতে শোরগোল শুরু হয়েছে। মইনুল বা আখরুজ্জামান, দু’জনেই মান্নানের এমন দাবিকে উড়িয়ে দিয়েছেন। প্রদেশ কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক তথা জম্বু কাশ্মীরের পর্যবেক্ষক মইনুলের প্রতিক্রিয়া, ‘‘কে কি বলেছেন জানি না। তৃণমূলে যোগ দেওয়ার ব্যাপারে আমার সঙ্গে কারও কোনও কথা হয়নি। তৃণমূলে যোগ দিচ্ছি বলেও কাউকে কিছু জানাইনি। কংগ্রেস ছাড়ার কথাও ভাবিনি।’’ এক ধাপ এগিয়ে আখরুজ্জামান বলেন, ‘‘তৃণমূলে যোগ দিতে চেয়েছি, এটা যিনি বলেছেন তিনি আসলে মানসিক ভারসাম্য হারিয়েছেন!’’ শাসক দল এ সব রটিয়ে সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত করতে চাইছে বলেও দাবি করেছেন এই দুই বিধায়ক।

জেলার গোষ্ঠী রাজনীতিতে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর সঙ্গে মইনুলের সম্পর্ক তেমন ভাল নয় বলে মত ওয়াকিবহাল মহলের। ফরাক্কায় অবশ্য প্রভাব রয়েছে মইনুলের। ১৯৯৬ সাল থেকে এ পর্যন্ত চার বার বিধানসভা ভোটে জিতেছেন তিনি। তাঁর দলবদলের ঘটনা সত্যি হলে তা কংগ্রেসের কাছে বড় ধাক্কা সন্দেহ নেই। এ দিন মান্নান শুধু মইনুলের তৃণমূলে যোগদানের কথা বলেই থেমে থাকেননি। দিনক্ষণ জানিয়ে তিনি দাবি করেন, ‘‘১ অগস্ট নয়, মইনুল চাইছেন তাঁর তৃণমূলে যোগদান পর্বের অনুষ্ঠানটি হোক ফরাক্কায় ৫ অগল্ট হোক।’’ সে বিষয়টি বিবেচনা করা হচ্ছে বলেও তিনি জানান। মইনুল নিজে দল ছাড়ার বিষয়টি জল্পনা বলে উড়িয়ে দিলেও ২৯ জুলাই তিনি ফরাক্কার কলেজে অনুগত কংগ্রেস কর্মী ও সমর্থকদের নিয়ে সভা ডেকেছেন। তৃণমূল নেতাদের দাবি, দলীয় কর্মীদের মতামত জানতেই ওই সভা ডেকেছেন বিধায়ক। ওই সভার পরেই আনুষ্ঠানিক ভাবে দল ছাড়ার বিষয়টি জানাবেন বলেও দাবি কিছু তৃণমূল নেতার।

Advertisement

তৃণমূলের এই দাবি অবশ্য মানতে চাননি মইনুলের ঘনিষ্ঠ ফরাক্কা ব্লক কংগ্রেসের সভাপতি অমল মিশ্র। অমলবাবুর দাবি, ‘‘ভোটের আগে নানা বিষয়ে আলোচনার জন্যেই ২৯ জুলাই এলাকার সমস্ত স্তরের কংগ্রেস কর্মীদের নিয়ে ওই সভা ডাকা হয়েছে। সেখানে দলবদলের বিষয়ে আলোচনা হবে বলে জানা নেই।’’ রাজ্য পরিষদীয় দলের নেতা তথা জঙ্গিপুরের বিধায়ক মহম্মদ সোহরাব দলবদলের ঘোষণাকে গুরুত্ব দেননি। তাঁর মত, ‘‘মুর্শিদাবাদের কোনও কংগ্রেস বিধায়ক দল ছাড়ছেন বলে জানা নেই।’’

এ দিন সুতির সমাবেশে ভিড় হয়েছিল ভালই। জেলায় তৃণমূলের ফল আশানুরূপ নয় তা মেনে মান্নান সকলের উদ্দেশে বলেন, ‘‘এই ভিড়কে ভোটবাক্স অবধি নিয়ে যেতে হবে।’’ সে কাজে তিনি কতটা সফল হন, দেখার সেটাই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন