সরাসরি হাইকোর্টের বিরুদ্ধে মুখ খোলেননি। কিন্তু বিসর্জন ইস্যুকে কোর্টে টেনে নিয়ে যাওয়া তাঁর যে একেবারেই পছন্দ হয়নি, সে কথা এ দিন বুঝিয়ে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। ছবি: পিটিআই।
দুর্গাপ্রতিমা বিসর্জন নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের রায়ের পরে ফের সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা ইস্যুতে মুখ খুললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার একডালিয়া এভারগ্রিনের পুজো উদ্বোধনে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্য ‘‘এ রাজ্যে নতুন করে দাঙ্গা লাগানোর চেষ্টা হচ্ছে।’’ সাম্প্রদায়িক অশান্তি ছড়ানোর জন্যই বিসর্জনকে কেন্দ্র করে বিতর্ক তৈরির চেষ্টা হচ্ছে বলে মুখ্যমন্ত্রী এ দিন ইঙ্গিত দেন।
১ অক্টোবর মহরম। তাই ৩০ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যা ৬টার পর থেকে দুর্গাপ্রতিমার বিসর্জন বন্ধ রাখার নির্দেশ জারি করেছিল রাজ্য প্রশাসন। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির স্বার্থেই মহরমের আগের রাতে এবং মহরমের দিন বিসর্জন বন্ধ রাখতে হবে বলে প্রশাসন নির্দেশ দেয়। কলকাতা হাইকোর্টে সেই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানানো হয়েছিল। হাইকোর্ট বৃহস্পতিবার রাজ্য সরকারের নির্দেশিকা খারিজ করে দিয়েছে। বিসর্জন ও মহরম একই সঙ্গে চলবে এবং তা সুষ্ঠু ভাবে চালানোর জন্য রাজ্য প্রশাসন পর্যাপ্ত পুলিশি বন্দোবস্ত করবে। নির্দেশ হাইকোর্টের। রাজ্য প্রশাসনের সিদ্ধান্ত খারিজ করেই থেমে যায়নি হাইকোর্ট। রাজ্য সরকারের কড়া সমালোচনাও শোনা গিয়েছে প্রধান বিচারপতির মুখে। নাগরিকের ধর্মাচরণের অধিকারে হস্তক্ষেপ না করতে রাজ্য সরকারকে পরামর্শ দিয়েছে আদালত। সব ধর্মের মানুষকে সমান চোখে দেখার পরামর্শও আদালত দিয়েছে।
আরও পড়ুন: জোর ধাক্কা কোর্টে, বিসর্জন বন্ধ রাখার নির্দেশ খারিজ
আরও পড়ুন: ধূমপানে বারণ করায় যুবককে পিষে মারল আইনজীবী
এই রায়ের কোনও প্রতিক্রিয়া মুখ্যমন্ত্রী সরকারি মঞ্চ থেকে দেননি। কিন্তু এ দিন সন্ধ্যায় দক্ষিণ কলকাতার নামী ওই পুজো উদ্বোধনে গিয়ে তিনি মুখ খোলেন। উষ্মার সঙ্গেই মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘আমরা মানব ধর্মে বিশ্বাস করি। যে মাটিতে রামকৃষ্ণ-বিবেকানন্দ জন্মেছেন, সেই মাটিতে থেকে আমরা অন্য কারও কাছে মানব ধর্ম শিখব না।’’ মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ‘‘আমি রোজ চণ্ডীপাঠ করি, আল্লার কাছে দোয়াও করি। সবাই এখানে সুখে-শান্তিতে রয়েছে, তা অনেকের সহ্য হচ্ছে না। তাই অশান্তি বাধানোর চেষ্টা করছে।’’ মুখ্যমন্ত্রীর হুঁশিয়ারি, ‘‘কেউ অশান্তি করার চেষ্টা করলে আমার থেকে বড় শত্রু কিন্তু কেউ হবে না।’’