হোলি @ অরগ্যানিক...

জল রং নয়। গুঁড়ো রংয়ে রাঙিয়ে তুলুন প্রিয়তমকে। লিখছেন স্বরলিপি ভট্টাচার্যগত ক’দিন ধরে দু’বেলা গান প্র্যাকটিস করেছে জোড়া বিনুনি। ‘খোল দ্বার খোল, লাগল যে দোল’। ‌আজ রঙের খেলা। পাড়াতুতো দাদাকে ইমপ্রেস করতে হবে তো। কাট টু ২০১৬। এই ছবিটাই এখন ফ্রেমবন্দি। কারণ কবির ভাষায়, ‘এ কলকাতার মধ্যে আছে আর একটা কলকাতা’— যেখানে পাড়ার দোলের জায়গায় হোলি পার্টি মাস্ট। পুরনো জামাকাপড়ে দোল খেলা এখন ব্যাকডেটেড। তরুণ তুর্কিদের চাই স্টাইলিশ সাদা পোশাক।

Advertisement

স্বরলিপি ভট্টাচার্য

শেষ আপডেট: ২২ মার্চ ২০১৬ ২১:৫৪
Share:

গত ক’দিন ধরে দু’বেলা গান প্র্যাকটিস করেছে জোড়া বিনুনি। ‘খোল দ্বার খোল, লাগল যে দোল’। ‌আজ রঙের খেলা। পাড়াতুতো দাদাকে ইমপ্রেস করতে হবে তো।
কাট টু ২০১৬। এই ছবিটাই এখন ফ্রেমবন্দি। কারণ কবির ভাষায়, ‘এ কলকাতার মধ্যে আছে আর একটা কলকাতা’— যেখানে পাড়ার দোলের জায়গায় হোলি পার্টি মাস্ট। পুরনো জামাকাপড়ে দোল খেলা এখন ব্যাকডেটেড। তরুণ তুর্কিদের চাই স্টাইলিশ সাদা পোশাক। সঙ্গে ফাউ-বিউটি ট্রিটমেন্ট। বসন্ত সুখে ইউনিভার্সিটির আড্ডায় গান গাওয়া নয়, বরং হোলির মেহফিলে শ্রোতাদের লাইক পাওয়াই জেন ওয়াইয়ের হোলি স্ট্যাটাস। এসএমএস থেকে ফেসবুক, হোয়াটস্‌অ্যাপ থেকে স্কাইপ, রং না মেখেই দিব্যি চলছে হ্যাপি হোলি! দোলের আগেই রং ছড়িয়েছে নেট-দুনিয়াও। তবে হিসেবে একটু বদল। অরগ্যানিক রঙের দিকেই ঝোঁক বেড়েছে আম-জনতার।

তিলক হোলি
রঙ ছোড়া নয়। পিছন থেকে জাপটে ধরে রঙের ভূত করে দেওয়াও নয়। অরগ্যানিক হোলি খেলতে আজ প্রিয়জনের কপালে দিন আবিরের তিলক। দোকানে খোঁজ করলেই পাবেন জবা ফুল শুকিয়ে তৈরি অরগ্যানিক বাঁদুরে রং, গাঁদা ফুল শুকনো দিয়ে তৈরি অরগ্যানিক হলুদও।

ফুলন কি হোলি
লখনউ বা পুষ্করে ফুলন কি হোলি খুবই জনপ্রিয়। এ বার চালু করে দিন আপনার পাড়াতেও। সকাল সকাল দোকান থেকে কিনে নিন নীল গুলমোহর ফুলের শুকনো পাঁপড়ি দিয়ে তৈরি অরগ্যানিক নীল রঙ।

Advertisement

বলম পিচকারি তুনে মুঝে মারি

Advertisement

না! এ বার এটা হোলি সেলিব্রেশন থেকে জাস্ট ডিলিট করে দিন। ত্বকের চিকিত্সক সঞ্জয় ঘোষ বার বার সতর্ক করলেন, ‘‘অরগ্যানিক ড্রাই রং দিয়ে দোল খেলুন। ত্বকের জন্য জল রং অনেক বেশি ক্ষতিকর।’’

মেকআপ টিপস

নো মেকআপ লুক। এটাই হোক আজকের থিম। আপনি যদি মেকআপ করেই দোল খেলতে যান, তা হলে ভালবাসার মানুষ যিনি অপেক্ষা করে আছেন, আপনাকে প্রথম রং দেবেন বলে, তাঁকে তো বিলকুল ঠকানো হবে! মেকআপ আর্টিস্ট শর্মিলা সিংহ ফ্লোরার সাজেশন, শরীর ঢাকা জামাকাপড় পরে দোল খেলুন। রাস্তায় বেরোনোর আগে মুখে সানস্ক্রিন, সারা গায়ে বডি ওয়েল মাস্ট। মাথায় তেল দিয়ে টেনে বেঁধে নিন চুল। এতে ক্ষতি এড়ানো যাবে অনেকটাই।

খেলব হোলি রং দেব না, অফিস কেন বাদ?

আজ দোল। কিন্তু অনেকেই অফিসমুখী। তাই বলে কি বাদ যাবে সেলিব্রেশন? কখনও না। প্ল্যান হয়ে গিয়েছে পার্টির। কেউ স্রেফ দোলের জন্য কেনা সাদা ডিজাইনার পোশাক পরবেন। কেউ বা ইন্টারনেট ঘেঁটে বের করেছেন ভাঙ-ককটেলের নয়া রেসিপি। এইচআরের কড়াকড়ি সামলে দোলের দিনের পোশাকেই এক আকাশ রঙের রামধনু। সঙ্গে খাওয়াদাওয়া, হুল্লোড় তো কমন ফ্যাক্টর।

বসন্ত জাগ্রত দ্বারে

আবির আগুনের দহন দিনে ফুল ফোটার সঙ্গে শুরু হয়েছে ফুল ঝরারও খেলা। মাঠে নামার আগে সতর্ক করলেন চক্ষু বিশেষজ্ঞ চিকিত্সক শৌভিক বন্দ্যোপাধ্যায়। কী ভাবে?

১) বয়সে বড়রা সানগ্লাস আর ছোটরা সুইমিং গ্লাস পরে দোল খেলুন।

২) রঙের বেলুন ছুড়বেন না। এতে চোখে আঘাত লাগার সম্ভাবনা থাকে।

৩) হাওয়ায় ওড়া আবিরের গুঁড়ো চোখে এসে পড়লে চোখ রগড়াবেন না।

৪) পিচকিরির রং চোখে ঢুকলে কর্নিয়ার টিস্যু ড্যামেজ হতে পারে।

৫) অরগ্যানিক রং ব্যবহার না করলে কেমিক্যাল কনজাংটিভাইটিসও হতে পারে।

৬) কনটাক্ট লেন্স খুলে রেখে রং মাখুন। দোল খেলতে যাওয়ার আগে চোখের চারপাশে মোটা করে নারকোল তেলের প্রলেপ লাগিয়ে নিন।

রঙের রেমিডি

লেটস প্লে হোলি! দিন শুরু করলেন এই স্লোগান দিয়ে। কিন্তু মুহূর্তেই বদলে যেতে পারে ছবিটা। চেনা হাসির আবিরে মিশতে পারে বসন্ত দিনের কান্না। এ বিষয়েও মতামত দিলেন চক্ষু বিশেষজ্ঞ চিকিত্সক শৌভিক বন্দ্যোপাধ্যায়।

১) চোখে রং ঢুকলে কখনওই ঠান্ডা জলের ঝাপটা দেবেন না। বরং কালি ভরার ড্রপার দিয়ে ঠান্ডা জল চোখে দিন। এতে চোখের ভেতরের তাপমাত্রা কমবে। আর কিছু থাকলে তা জলের সঙ্গে ধুয়ে বেরিয়েও যাবে।

২) দোল খেলার সময় অ্যান্টিবায়োটিক ড্রপ, লুব্রিকেটিং আই ড্রপ সঙ্গে রাখুন। সমস্যা হলে প্রতি ঘণ্টায় দিতে পারেন।

৩) দোলে প্রায় সব কিছু বন্ধ থাকে। ফলে বেশি সমস্যা হলে মেডিক্যাল কলেজের আই ডিপার্টমেন্টে চলে আসতে পারেন। এই বিভাগ দোলের দিনও খোলা থাকে।

রং তোলার রংবাজি

দোলের পর দিন মুখে বাঁদুরে রং মেখে কি আর ক্লায়েন্ট মিটিংয়ে যাওয়া সম্ভব? কী ভাবে রং তুলবেন? জানালেন মেকআপ আর্টিস্ট শর্মিলা সিংহ ফ্লোরা।

১)দোল খেলে বাড়ি ফিরে এক বালতি জলে হাইড্রোজেন প্যারাক্সাইড দু’ছিপি দিয়ে স্নান করে ফেলুন।

২)প্রথমে ভাল করে শ্যাম্পু দিয়ে স্নান করে ঘন কন্ডিশনার লাগান।

৩)তেলের সঙ্গে দই মিশিয়ে প্যাক লাগালে রং তাড়াতাড়ি উঠবে।

৪) সবেদা পেস্ট করে মধু মিশিয়ে গায়ের রং তুলতে পারেন।

৫) বেসনের সঙ্গে লেবু এবং মধু মিশিয়ে ঘরোয়া প্যাক তৈরি করে ত্বক পরিষ্কার করুন।

মধুর তোমার শেষ যে না পাই

অরগ্যানিক রং হোক বা বাঁদুরে হোলি— ফাগপূর্ণিমার জোছনা নেশায় মাতাল হতে আপনি তৈরি তো?

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন