ফাইল চিত্র।
উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গের নানা জেলা থেকে হাজারদুয়েক মানুষ যোগ দিলেন কংগ্রেসে। তাঁদের বেশির ভাগই সংখ্যালঘু। এঁদের মধ্যে কেউ কেউ যেমন স্থানীয় স্তরে তৃণমূল ছেড়ে এসেছেন, আবার কিছু এসেছেন সিদ্দিকুল্লা চৌধুরীর পুরনো রাজনৈতিক দল পিডিসিআই এবং ইউডিএফ থেকে। সংখ্যালঘুরা তাঁদের দিকে আসতে চাইছেন বলে প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্ব যখন দাবি করছেন, তখনই আবার টানাপড়েন তুঙ্গে লক্ষ্ণণ শেঠকে দলে নেওয়ার ভাবনা ঘিরে!
বিধান ভবনে বৃহস্পতিবার নবাগতদের হাতে দলের পতাকা তুলে দিয়েছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্র। যোগদানকারীদের মধ্যে বসিরহাট, বাদুড়িয়া এলাকার মাদ্রাসা-সহ কিছু সংখ্যালঘু প্রতিষ্ঠানের পদাধিকারীরাও ছিলেন। সোমেনবাবু বলেন, ‘‘সংখ্যালঘুরা এখন কংগ্রেসের সঙ্গেই থাকতে চাইছেন।’’ তবে একই সঙ্গে তাঁর বক্তব্য, এখন তৃণমূল ছেড়ে বেরোলেন কিন্তু পরে আবার কংগ্রেস-তৃণমূল সমঝোতা হয়ে যায় কি না— এই দোলাচলে অনেকে ভুগছেন বলেই শাসক দল ছাড়তে পারছেন না। যদিও সোমেনবাবু বলে দিয়েছেন, ‘‘বিভিন্ন বৈঠকে দলের সর্বস্তরের মতামত নিয়েছি। সেখানে একটা ব্যাপারে সর্বসম্মতি আছে যে, কেউই তৃণমূলের সঙ্গে জোট চান না। বাকিটা আমাদের দলের সর্বভারতীয় সভাপতি ঠিক করবেন।’’
লক্ষ্ণণবাবু কি কংগ্রেসে যোগ দিচ্ছেন? সোমেনবাবু এ দিন বলেন, ‘‘এখনও পর্যন্ত নয়।’’ তবে সিপিএমের বহিষ্কৃত সাংসদ যে তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন, তা মেনে নিয়েই প্রদেশ সভাপতির বক্তব্য, ‘‘যোগাযোগ তো অনেকেই করছেন। সকলের নাম এখনই প্রকাশ্যে বলতে পারছি না, উচিতও নয়।’’ বিধান ভবনে দুপুরে সোমেনবাবু এই কথা বলার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই বিধানসভায় বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নানকে ফোন করেন লক্ষ্ণণবাবু। তাঁর যোগদানের প্রস্তাবে বিরোধী দলনেতা কেন বাদ সাধছেন, এই ছিল তাঁর বক্তব্য। ক্ষুব্ধ মান্নান ফোন কেটে দেন। লক্ষ্ণণবাবু পরে ফের ফোন করলেও তিনি আর ধরেননি।
পরে প্রশ্ন করা হলে বিরোধী দলনেতা বলেন, ‘‘কংগ্রেস কর্মীদের যারা খুন করেছে, তাদের পাশে নিয়ে তো কংগ্রেস করা যায় না! একটা অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে গিয়ে আর একটা অন্যায় করব?’’ প্রাক্তন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীও একই যুক্তিতে তমলুকের প্রাক্তন সাংসদের আর্জি মানেননি। কংগ্রেসের সচেতক মনোজ চক্রবর্তীর কথায়, ‘‘ওঁর (লক্ষ্মণ) মতো নেতাদের জন্যই বাংলার এই অবস্থা হয়েছে! একটা দল গড়েছিলেন, টেকাতে পারেননি। পরে বিজেপিতে গিয়েও সুবিধা হয়নি। এখন সম্মানের সঙ্গে ওঁর সন্ন্যাস নেওয়া উচিত!’’