Somen Mitra

সোমেন-স্মরণের প্রদীপ নিভল শিখার চিঠিতে

তৃণমূল, সিপিএম-সহ সব দলকে নিয়ে আগামী ২৬ অগস্ট সোমেনবাবুর স্মরণ-সভার আয়োজন করছিল প্রদেশ কংগ্রেস।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২২ অগস্ট ২০২০ ০৪:১২
Share:

—ফাইল চিত্র।

নাটকীয় পট পরবির্তনে বাতিল হয়ে গেল প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্রের স্মরণ-সভা!

Advertisement

কোভিড পরিস্থিতির মধ্যে এমন স্মরণ-সভা করা উচিত হচ্ছে না, এই মর্মে প্রদেশ কংগ্রেসে চিঠি পাঠিয়েছেন প্রয়াত সোমেনবাবুর স্ত্রী ও প্রাক্তন বিধায়ক শিখা মিত্র। পরিবারের এমন আপত্তির কথা জেনে প্রদেশ কংগ্রেসও অনির্দিষ্ট কালের জন্য স্মরণ-সভা স্থগিত করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কিন্তু ওই স্মরণ-সভা কোনও পারিবারিক অনুষ্ঠান ছিল না। প্রয়াত প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির স্মরণে দলের পুরোদস্তুর রাজনৈতিক অনুষ্ঠান শুধু পরিবারের এমন আপত্তিতে বাতিল হয়ে যাবে কেন, সেই প্রশ্ন উঠে গিয়েছে কংগ্রেসের অন্দরেই।

তৃণমূল, সিপিএম-সহ সব দলকে নিয়ে আগামী ২৬ অগস্ট সোমেনবাবুর স্মরণ-সভার আয়োজন করছিল প্রদেশ কংগ্রেস। তাদের আবেদনের প্রেক্ষিতে এবং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে স্মরণ-সভার জন্য বিনা ভাড়ায় নেতাজি ইন্ডোর কংগ্রেসকে দেওয়ার ব্যবস্থা করেছিলেন ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। বাড়তি ভিড় ঠেকাতে স্টেডিয়ামের মূল ফটক বন্ধ রেখে সভা চালানোর জন্য পুলিশের সঙ্গে আলোচনা হয়েছিল। স্টেডিয়ামে মঞ্চ তৈরির জন্য ডেকরেটর্স সংস্থাকে দায়িত্বও দেওয়া হয়ে গিয়েছিল। এই পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবার রাতে শিখাদেবীর চিঠি প্রায় বজ্রপাতের মতোই নেমে এসেছে প্রদেশ কংগ্রেসের মাথায়। দিল্লি থেকে রাতেই প্রদেশ কংগ্রেসের সমন্বয় কমিটির চেয়ারম্যান প্রদীপ ভট্টাচার্য শিখাদেবীর সঙ্গে কথা বলার পরে শুক্রবার জানিয়ে দিয়েছেন, পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত তাঁরা স্মরণ-সভা স্থগিত রাখছেন। সভা আয়োজনের যাবতীয় চিঠি তৈরি হয়েছিল প্রদীপবাবুর নামেই।

Advertisement

সোমেনবাবুর মৃত্যুর পরে এখনও প্রদেশ সভাপতি ঠিক হয়নি। এমতাবস্থায় প্রদেশ কংগ্রেসের ‘নেতৃত্ব ও সহযোগী’দের সম্বোধন করে চিঠি পাঠিয়েছেন শিখাদেবী। সেখানে তিনি লিখেছেন, ‘তাঁদের প্রিয় নেতার প্রতি আমাদের সহকর্মী, সহযোগী ও দলের কর্মীদের আবেগ আমি বুঝি। কিন্তু এখন যে বিশেষ সামাজিক পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে আমাদের যেতে হচ্ছে, তার প্রেক্ষিতে এই সময়ে এমন স্মরণ-সভার আয়োজনে আমার তীব্র আপত্তি জানাচ্ছি’। শুধু ইন্ডোরেই নয়, সভায় যাওয়া-আসার পথেও কেউ সংক্রমিত হতে পারেন এবং সেই ঝুঁকি নেওয়া উচিত হবে না বলে উল্লেখ করেছেন সোমেন-পত্নী।

এর পরে প্রদীপবাবুর বক্তব্য, ‘‘পরিবারের আপত্তি যখন আছে, আমরা এখন স্মরণ-সভা করছি না। পরিস্থিতির বদল হলে তখন ভাবা যাবে।’’ যদিও লোকসভায় কংগ্রেসের দলনেতা অধীর চৌধুরী বলছেন, ‘‘এটা তো পরিবারের অনুষ্ঠান নয়, পুরোপুরি দলের ব্যাপার। কারও সঙ্গে কোনও আলোচনা না হয়ে সোমেনদা’র স্মরণ-সভা এ ভাবে বাতিল হয়ে গেল, এটা শুনে অদ্ভুত লাগছে! লোকসভার অধিবেশন বসতে চলেছে, অনেক রাজ্যে বিধানসভাও বসছে। স্বাস্থ্যবিধি মেনেই অনুষ্ঠান করা যেত।’’ রাজ্যের বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নানের মতে, ‘‘সোমেনদা কোনও ব্যক্তি বা পরিবারের সম্পত্তি নন। তাঁর স্মরণ-সভার সঙ্গে দলের নেতা-কর্মীদের আবেগ জড়িত। সেটা মাথায় রাখলে ভাল হত!’’

কংগ্রেসের অন্দরেই আরও প্রশ্ন, সোমেনবাবুর শ্রাদ্ধের পারিবারিক আয়োজনের সময়েই স্মরণ-সভার কথা ঠিক হয়েছিল। প্রায় শেষ মুহূর্তে করোনা পরিস্থিতির কথা মাথায় এল কেন? আমহার্স্ট স্ট্রিটে এবং হাওড়া, হুগলির মতো জেলায় স্মরণ-সভা হয়ে গিয়েছে। করোনা পরিস্থিতির কথা বললে সব সভাই তো বন্ধ করতে হত!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন