দক্ষিণের কড়চা

ভোট বড় বালাই! ভোট এলে মজে বঙ্গদেশ। এ বার ভোট নিয়েই এল রঙ্গ-রসিকতার বই। সে বইতে ‘‘১৯৫২ থেকে ২০১৪ পর্যন্ত নির্বাচনী যুদ্ধের কালে দৈনিকে, দেওয়ালে উঠে আসা ভোটের ছড়া তো থাকলই, থাকল পুরানো সাময়িকপত্রে ও দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত ভোটের রঙ্গ রস।

Advertisement
শেষ আপডেট: ০৫ এপ্রিল ২০১৬ ০২:১৮
Share:

ভোট বড় বালাই

Advertisement

ভোট বড় বালাই! ভোট এলে মজে বঙ্গদেশ। এ বার ভোট নিয়েই এল রঙ্গ-রসিকতার বই। সে বইতে ‘‘১৯৫২ থেকে ২০১৪ পর্যন্ত নির্বাচনী যুদ্ধের কালে দৈনিকে, দেওয়ালে উঠে আসা ভোটের ছড়া তো থাকলই, থাকল পুরানো সাময়িকপত্রে ও দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত ভোটের রঙ্গ রস। আলোচনা থাকল ভোটকালে পণ্যদ্রব্যের বিজ্ঞাপন দিয়ে ভোট আদায়ের করণ কৌশল সম্পর্কে আলোচনা।’’ ‘বর্ণপরিচয়’ থেকে প্রকাশিত হয়েছে ঝাড়গ্রামের শিক্ষক আবীর করের বই ‘ভোটের রঙ্গ-রসিকতা’। বেশ কয়েক দশকের দেওয়াল লিখন, ভোট প্রচারের ছবির সঙ্গে এ বইতে পাঠকের উপরি পাওনা দুটি ভোট প্রহসন। প্রথম ক্যালকাটা মিউনিসপ্যালিটি ভোট সাধারণের মনে যে উদ্দীপনা ও কৌতূহল, তারই কথা ‘ভোটমঙ্গল’ ও ‘দেবাসুরের মিউনিসপ্যাল বিভ্রাট’-এ সংকলিত হয়েছে। শুধু ভোটের দেওয়াল লিখন নয়, লেখকের আলোচনা এসেছে রাজনৈতিক দলগুলিকে নিয়ে চালু জোকস, ভোটে বিজ্ঞাপন বা বিজ্ঞাপনে ভোট নিয়ে রসসিক্ত আলোচনাও। ছবি-সহ এই লেখাগুলিকে লেখক তিনটি শীর্ষকে ভাগ করেছেন। উদ্ধৃতি, প্যারোডি এবং রসরঙ্গে চাপান-উতোর। লেখার সঙ্গে পাঠক এ বই পড়তে পড়তে দেখে নিতে পারেন পাতায় পাতায় অসংখ্য ছবি। এ বইয়ে আদতে গ্রাম বাংলার দেওয়ালে ভোট ছন্দের সুর, পরস্পরকে আক্রমণ করে রাজনৈতিক দলগুলির কোন্দল-সবই যেন শুনতে পাওয়া যায়। এবং সব কিছুর মধ্যেই দেশ ও এই রাজ্যের ভোটযজ্ঞের একটি ধারাবাহিক-প্রচার বিশ্লেষণ মেলে লেখকের মিঠে গদ্যে। সরগরম ভোট বাজারে সুমুদ্রিত এ বই পাঠককে ফুরফুরে রঙ্গ-রসে মাতিয়ে তুলবে, সন্দেহ নেই!

Advertisement

যোগে নৃত্য

ভারত ভূমির সুদীর্ঘ ইতিহাসের সঙ্গে জড়িয়ে আছে যোগ চর্চা আর নৃত্যের প্রাণ। সনাতন হিন্দু ধর্মের পরতে পরতে ছড়িয়ে রয়েছে যোগমুদ্রার আঙ্গিক। যার সঙ্গে ধ্রুপদী নৃত্যের যোগ অবিচ্ছিন্ন। এ দু’য়ের অন্তরে বিজ্ঞানের গতায়াতও যে কম নয়, তা প্রমাণ হয়েছে আধুনিক গবেষণায়। জড় জীবনের দু’টি স্তম্ভ হিসাবে যদি ধরা যায় শরীর আর আত্মা বা মনকে তবে সে দুইয়ের সঙ্গে আনন্দের যোগ নৃত্যের। ভরতের নাট্যশাস্ত্রেও আদি নটরাজের ‘আনন্দ-তাণ্ডব’-এর উল্লেখ করা হয়েছে। ভরতনাট্যমের ছাত্র রাহুল দেব মণ্ডল আরও একবার যেন ফিরিয়ে নিয়ে গিয়েছেন সেই ইতিহাসের নাটমন্দিরে। ইংরেজিতে লেখা তাঁর বই ‘নৃত্য-যোগ সূত্র’ প্রকাশিত হয়েছে কিছু দিন আগে। ভারতীয় পুরাণ, নৃত্যের ইতিহাস, নব রস, মুদ্রা আর আদিদেব নটরাজের প্রসঙ্গে উঠে এসেছে নাচের সঙ্গে যোগের সম্পর্ক। উত্তর ২৪ পরগনার বারাসতের বাসিন্দা রাহুল ভরতনাট্যমের ছাত্র হলেও, তাঁর গবেষণার বিষয়ই হল এই যোগ ও নৃত্যের সম্পর্ক। তাই তাঁর বইয়ে অবধারিত ভাবেই রয়েছে নৃত্যশিল্পীদের জন্য যোগচর্চার গুরুত্বের কথাও। একেবারে শেষ রয়েছে শ্রীমতি রুক্মিনীদেবী অরুণ্ডেলের সংক্ষিপ্ত জীবনীও। ৮০ পাতার বইটিতে বিশেষ আকর্ষণ অবশ্যই রাহুলের অসামান্য নৃত্য ভঙ্গিমার চিত্র।

খাঁটুরা শিল্পাঞ্চলি

সম্প্রতি উত্তর ২৪ পরগনার গোবরডাঙার খাঁটুরা শিল্পাঞ্জলি সংস্থার পক্ষ থেকে হয়ে গেল ২৯ তম খাঁটুরা শিল্পাঞ্জলি উৎসব। স্থানীয় গোবরডাঙা খাঁটুরা উচ্চ বিদ্যালয়ে চার দিনের ওই উৎসব হয়। উদ্বোধন করেন গোবরডাঙা পুরসভার পুরপ্রধান সুভাষ দত্ত। ছিল সারা বাংলা একাঙ্ক নাটক প্রতিযোগিতা। মঞ্চস্থ হয় পোস্টমর্টেম, মহাভারতীয়, ত্রিস্বর্গ, মেঘমল্লার-সহ কয়েকটি নাটক। আলোচনা সভায় উঠে আসে শিক্ষাঙ্গনে সংস্কৃতি চর্চা। উদ্যোক্তাদের পক্ষে মলয় কুমার বিশ্বাস জানান, স্কুল পড়ুয়াদের লেখাপড়ার পাশাপাশি সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে যুক্ত করতেই এই আয়োজন।

বাগেশ্রীর সুর

উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতের সুর বেঁধে দিল বসন্তের সন্ধ্যার বাঁধন। সম্প্রতি হাওড়ার উদয়নারায়ণপুরের একটি সভাগৃহে হয়ে গেল উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতের আসর। উদ্যোক্তা ছিল গড়ভবানীপুর সিংটিমহল। বাগেশ্রী রাগে ছোট খেয়ালের মধ্যে দিয়ে অনুষ্ঠানের সূচনা হয়। এর পরে বেহালায় পরিবেশিত হয় খাম্বাজ এবং কলাবতী রাগ। সন্তুরে পরিবেশিত হয় ঝিঝট রাগ। সঞ্চালনায় ছিলেন নিমাই আদক।

কাকদ্বীপ থেকে কলকাতা

দক্ষিণ ২৪ পরগনা জুড়ে চলা নারী পাচারের অভিযোগের কথা বড় পর্দায় ফুটিয়ে তুলতে চায় কাকদ্বীপের খুদে নাট্য প্রতিভা রাজদীপ পাঁজা। নবম শ্রেণির এই ছাত্র শিশু কিশোর অ্যাকাডেমির অনূর্ধ্ব ১৭ নাটকের দলে সুযোগ পেয়ে জাতীয় নাট্য কর্মশালায় যোগ দিয়েছিল। একই সঙ্গে চলছে লেখালেখিতে হাত পাকানো। রাজদীপের নাট্যচর্চা শুরু হয়েছিল পঞ্চম শ্রেণি থেকে। ২০১৩ সালে আনন্দবাজারের রবিবাসরীয়তে বের হয় তাঁর প্রথম লেখা গল্প ‘ফড়িংবাবুর পোকা গেলা’। কাকদ্বীপের ‘নোনা থিয়েটার’-এর সঙ্গে যুক্ত দেবাশিস মান্নার কাছে তখন থেকেই শুরু নাটকের হাতেখড়ি। ২০১৪ সালে শিশু কিশোর অ্যাকাডেমির হয়ে দেবেশ চট্টোপাধ্যায়ের ‘বীরেশ্বর’ নাটকে বিদ্যাসাগরের ভূমিকায় অভিনয়। পরের বছরও শিশু কিশোর অ্যাকাডেমির হয়ে ‘জব্দ হলেন রাজামশাই’ নাটকে দারোয়ানের চরিত্রে অভিনয় করে নজর কাড়ে এই কিশোর। রবীন্দ্রসদন, মিনার্ভা, শিশির মঞ্চে অভিনয় করেছে রাজদীপ। চলছে নানা পত্র-পত্রিকায় কবিতা, প্রবন্ধের প্রকাশ। ২০১৫ সালে কলকাতার একটি প্রকাশনা সংস্থা থেকে প্রকাশিত হয়েছে রাজদীপের ছোট গল্প ‘তিতাসের চাওয়া পাওয়া’। ওই বছরই জাতীয় নাট্যোৎসব এবং কলকাতা আন্তর্জাতিক শিশু চলচ্চিত্র উৎসবের কর্মশালায় যোগ দেয় সে। কাকদ্বীপ শিশু শিক্ষায়তনের এই ছাত্র ২০১৫-এ স্কুলের সেরা ছাত্রের সম্মান পায়। কাকদ্বীপ থেকে কলকাতা উজিয়ে নিয়মিত নাটকের মহড়ায় তার কামাই নেই। তার ইচ্ছে, কাকদ্বীপের কিশোরদের নিয়ে দল তৈরি করা। কিন্তু গোটা কাকদ্বীপে নাটক করার কোনও অডিটোরিয়াম নেই। রাজদীপের আক্ষেপ, ‘‘কাকদ্বীপের অনেকের মধ্যে মঞ্চ কাঁপানোর সম্ভাবনা রয়েছে। কিন্তু নিজের এলাকায় অভিনয় দেখবার সুযোগ কই!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন