আজও ইডি-র কাছে যাবেন না শোভনের স্ত্রী

নারদ-কাণ্ডে মেয়রের নাম জড়িয়ে যাওয়ার পরে তাঁকে ডেকে পাঠিয়েছিল সিবিআই এবং ইডি। দু’টি সংস্থাকেই মেয়র জানিয়েছেন, তিনি নারদ-কর্তা ম্যাথু স্যামুয়েলকে চেনেন না।

Advertisement

সুনন্দ ঘোষ

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৪ অক্টোবর ২০১৭ ০৩:৪৮
Share:

ফাইল চিত্র।

ইডি-র ডাকে এ বারও আসছেন না কলকাতার মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়ের স্ত্রী রত্নাদেবী। এখনও তিনি লন্ডনে রয়েছেন বলে সূত্রের খবর।

Advertisement

আজ, বুধবার সল্টলেকের সিজিও কমপ্লেক্সে হাজিরা দেওয়ার কথা ছিল রত্নাদেবীর। কিন্তু পুজোর মধ্যেই ই-মেল করে তিনি জানিয়েছেন যে, তিনি আসতে পারবেন না।

এই নিয়ে দ্বিতীয় বার ইডি-র সমন পেয়ে হাজিরা দিলেন না মেয়র-পত্নী। কেন্দ্রীয় এই গোয়েন্দা সূত্রের খবর, নিয়ম অনুযায়ী, তৃতীয় বার সমন পাঠানো হবে রত্না চট্টোপাধ্যায়কে। তার পরেও তিনি হাজিরা না দিলে তাঁর বিরুদ্ধে ‘আইনানুগ’ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এমনকী তাঁর বিরুদ্ধে আদালতে নালিশ জানিয়ে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির জন্যও আবেদন করতে পারে ইডি।

Advertisement

নারদ-কাণ্ডে মেয়রের নাম জড়িয়ে যাওয়ার পরে তাঁকে ডেকে পাঠিয়েছিল সিবিআই এবং ইডি। দু’টি সংস্থাকেই মেয়র জানিয়েছেন, তিনি নারদ-কর্তা ম্যাথু স্যামুয়েলকে চেনেন না। কোনও টাকাও নেননি। এমনকী তাঁর ব্যক্তিগত সম্পত্তি, টাকা-পয়সার খোঁজও তিনি রাখেন না। সে সব তাঁর স্ত্রী দেখভাল করেন। এর পরেই সিবিআই ও ইডি-র নজরে আসেন রত্নাদেবী। অগস্টের প্রথম সপ্তাহেই লন্ডন চলে যান রত্নাদেবী। সঙ্গে যান তাঁর মেয়ে। ছেলে ছিলেন আমেরিকায়। সেখান থেকে ছেলেও চলে আসেন লন্ডনে।

সিবিআই ও ইডি-র তদন্তকারীদের বক্তব্য, শোভন যে হেতু রত্নাদেবীর নাম উল্লেখ করেছেন, তাই বাধ্য হয়েই ডেকে পাঠানো হচ্ছে তাঁকে। নারদে যে রত্নাদেবী জড়িত নন, তা আপাত ভাবে তদন্তকারীদের কাছে পরিষ্কার। এক বার রুটিনমাফিক জিজ্ঞাসাবাদ করেই তাঁকে ছেড়ে দেওয়ার কথা। কিন্তু এ ভাবে বারবার সমন পেয়েও রত্নাদেবী না এলে, বাধ্য হয়ে তাঁর বিরুদ্ধেই আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে হবে বলে মনে করছেন গোয়েন্দা সংস্থার কর্তারা।

আরও পড়ুন:পুরনো সেই চিঠিই এখন কাঁটা মুকুলের

প্রথমে গত ৪ সেপ্টেম্বর মেয়র-পত্নীকে তলব করেছিল ইডি। কিন্তু তার আগের দিন ই-মেল করে ইডি-কে রত্নাদেবী জানিয়ে দেন, অসুস্থতার জন্য আসতে পারবেন না। এক মাস সময় চান তিনি।

পারিবারিক সূত্রে জানা গিয়েছে, ছেলে ও মেয়ে এর মধ্যে কলকাতায় ফিরে এলেও মেয়র পত্নী এখনও রয়েছেন লন্ডনেই।

এর আগে লন্ডন থেকে রত্নাদেবী জানিয়েছিলেন, শোভনবাবু রাজনীতি নিয়ে ব্যস্ত থাকেন বলেই ব্যবসার সমস্ত কাজকর্ম তাঁকেই দেখতে হয়। ফলে, ই়ডি ডেকে পাঠানোয় তিনি খুব একটা অবাকও হননি। রত্নাদেবীর দাবি, তিনি স্বচ্ছ ভাবে ব্যবসা করেন। কাজেই ব্যবসা সংক্রান্ত যে কোনও নথিই তিনি তুলে দিতে পারেন।

ইতিমধ্যে রত্নাদেবীর ব্যবসা ও সম্পত্তির হিসেব-নিকেশের বিস্তারিত তথ্য পেতে সেন্ট্রাল বোর্ড অব ডিরেক্ট ট্যাক্সেস-এর দ্বারস্থ হয় ইডি ও সিবিআই। সেখান থেকে নির্দেশ আসে আয়কর দফতরের কাছে। আয়কর অফিসারেরা রত্নাদেবীর কাছে আয়কর রিটার্ন সংক্রান্ত বেশ কিছু ব্যাখ্যা চেয়ে পাঠান। অভিযোগ, তাঁর আয়কর রিটার্নে হিসেবের বহু গরমিল পাওয়া গিয়েছে। কিন্তু রত্নাদেবী আয়কর কর্তাদের প্রশ্নের কোনও জবাব দেননি

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন