মকরামপুরে সভা মমতার

মঞ্চেই ডালের বড়া, থাকছে স্টলও

কথা রাখতে আসছেন দিদি। তৈরি নারায়ণগড়, তৈরি ডালের বড়াও। দ্বিতীয় দফায় শপথ নেওয়ার পর মুখ্যমন্ত্রীর জেলা সফর শুরু হচ্ছে আজ, সোমবার নারায়ণগড় দিয়ে। ভোটপ্রচারে এসে দলের প্রার্থী প্রদ্যোত ঘোষকে জেতানোর আর্জি জানিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলে, ‘‘যদি সূর্যবাবুকে হারাতে পারেন তবে প্রথম সভা করব নারায়ণগড়ে। সে দিন কিন্তু বেলদার ডালের বড়া খাওয়াতে হবে।’’

Advertisement

বরুণ দে

মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ১৩ জুন ২০১৬ ০৭:০২
Share:

রবিবার সকালেও বাঁশ বাঁধার কাজ চলেছে মকরামপুরের সভামঞ্চে। ছবি: রামপ্রসাদ সাউ

কথা রাখতে আসছেন দিদি। তৈরি নারায়ণগড়, তৈরি ডালের বড়াও।

Advertisement

দ্বিতীয় দফায় শপথ নেওয়ার পর মুখ্যমন্ত্রীর জেলা সফর শুরু হচ্ছে আজ, সোমবার নারায়ণগড় দিয়ে। ভোটপ্রচারে এসে দলের প্রার্থী প্রদ্যোত ঘোষকে জেতানোর আর্জি জানিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলে, ‘‘যদি সূর্যবাবুকে হারাতে পারেন তবে প্রথম সভা করব নারায়ণগড়ে। সে দিন কিন্তু বেলদার ডালের বড়া খাওয়াতে হবে।’’ নারায়ণগড়ের মকরামপুরের সভায় তাই দিদিকে ডালের বড়া খাওয়ানোর ব্যবস্থা থাকছেই।

সে কথায় সিলমোহর দিয়েছেন স্বয়ং প্রদ্যোত ঘোষ, “ডালবড়া বিক্রেতারা এসে বলে গিয়েছেন, ওঁরা দিদিকে ডালবড়া খাওয়াতে চান। সভামঞ্চেই খাওয়াবেন।’’ দিদিকে খাওয়ানোর জন্য ডালবড়া তৈরির প্রস্তুতিও শুরু হয়ে গিয়েছে বলে খবর। তৃণমূলের নারায়ণগড় ব্লক সভাপতি মিহির চন্দও জানিয়েছেন সোমাবারের সভায় অবশ্যই ডালের বড়ার ব্যবস্থা থাকছে। জেলা নেতারা ইতিমধ্যেই পুলিশের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলে রেখেছেন।

Advertisement

বেলদার সুভাষপল্লিতেই ডালের বড়ার সুখ্যাতি। মুখ্যমন্ত্রীর জন্য সেখান থেকেই আসবে ডালের বড়া। তবে শুধুমাত্র নেত্রীর জন্য নয়। সভামঞ্চের অদূরে একাধিক স্টলের ব্যবস্থা করা হতে পারে বলে জানা গিয়েছে তৃণমূল সূত্রে। সেখানে সাধারণ মানুষের জন্য ডালের বড়ার সঙ্গে থাকবে অন্যান্য তেলেভাজার আয়োজনও। জেলা তৃণমূলের এক নেতা বলছেন, “দিদি আগেও বেলদায় এসে ডালের বড়া খেয়েছেন। বেলদার ডালের বড়া বিখ্যাত ছিল। এখন আরও বিখ্যাত হয়ে উঠছে!” আরেক নেতার কথায় ঝাঁঝ, ‘‘পিছনে অনেকেই ‘তেলেভাজা শিল্প’ বলে ব্যঙ্গ করেছিলেন। দ্বিতীয় দফায় মানুষ বুঝিয়ে দিয়েছেন দিদির উপর তাঁদের আস্থা অটুট। এটা তারই উদ্‌যাপন।’’

নারায়ণগড়ের সভা ঘিরে মানুষের প্রত্যাশাও যথেষ্ট। তৃণমূলের জেলা সভাপতি দীনেন রায় বলেন, “দিদি সমস্ত বিষয় সম্পর্কে খোঁজখবর রাখেন। কী কী করা দরকার জানেন।” দীনেনবাবুরও দাবি, সোমবারের সভায় লক্ষাধিক মানুষের জমায়েত হবে।

মুখ্যমন্ত্রীর সভাস্থল কানায় কানায় ভরিয়ে দিতে চেষ্টার ত্রুটি রাখছেন না পুলিশ-প্রশাসনের কর্তারাও। ভাড়া করা হয়েছে প্রায় ৩৬০টি বাস। এ ছাড়া, দলীয় ভাবে বেশ কিছু বাস ভাড়া করেছে তৃণমূলও। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা বাস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের জেলা সম্পাদক মৃগাঙ্ক মাইতি বলেন, “সবমিলিয়ে প্রায় ৪০০ বাস ভাড়া নেওয়া হয়েছে। কিছু গাড়ি ব্লকে যাবে। কিছু গাড়ি থানায় যাবে। দলীয় ভাবেও কিছু বাস ভাড়া নেওয়া হয়েছে।”

প্রতিটি বাসে ৪০ জন করে থাকার কথা। অর্থাৎ, নারায়ণগড়ে যেতে পারবেন প্রায় ১৪ হাজার ৪০০ সমর্থক। প্রশাসনের একটি সূত্রের দাবি, বাসে করে বিভিন্ন প্রকল্পের উপভোক্তাদের নিয়ে যাওয়া হবে। বেশি মানুষ আসবেন কেশিয়াড়ি, নয়াগ্রাম, পিংলা, খড়্গপুর গ্রামীণ থেকে।

তৃণমূলের কেশিয়াড়ি ব্লক সভাপতি জগদীশ দাস বলেন, “সভার জন্য দলীয় ভাবে গাড়ি ভাড়া করা হয়েছে। পিক-আপ ভ্যান, ছোট গাড়ি মিলিয়ে প্রায় ৫৫টি গাড়ি ও ২০টি বাস।”

শাসক দলের দাবি, মকরামপুরের সভায় লক্ষাধিক মানুষের জমায়েত হবে। তবে তাপমাত্রা চিন্তায় রেখেছে শাসক দলকে। এক জেলা নেতার স্বীকারোক্তি, “দুপুরের পর তো বাড়ির বাইরে বেরোনোই যাচ্ছে না। সভায় লোক ভরানো খুব সহজ হবে না!” তৃণমূলের অন্য এক নেতার মতে, “পুলিশ-প্রশাসন বাসে করে বিভিন্ন প্রকল্পের উপভোক্তাদের নিয়ে আসার ব্যবস্থা করছে। ফলে, লোক ভরানো কঠিন হবে না। সরকারি উদ্যোগে আসা বাসগুলো ঠিক সময় পৌঁছলেই মাঠ ভরে যাবে।”

অন্যান্য বারের মতো এ বারও মুখ্যমন্ত্রী ‘স্বপ্নের ফেরিওয়ালা’ হয়েই সভায় আসবেন বলে খবর। এ দিনের সভা থেকে ৩২টি প্রকল্পের উদ্বোধন এবং ১৪টি প্রকল্পের শিলান্যাস করবেন। মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে এর আগে বহুবার জঙ্গলমহলের জেলা পশ্চিম মেদিনীপুরে এসেছেন মমতা। প্রতিবারই একগুচ্ছ প্রকল্পের শিলান্যাস এবং উদ্বোধন করেছেন। শাসক দলের একটি অংশের ব্যাখ্যা, এ বারের বিষয়টা একটু আলাদা। সূর্য মিশ্র নারায়ণগড়ে পরাজিত। ফলে, মুখ্যমন্ত্রী তো তাঁর দু’হাত উজাড় করে দেবেনই। জেলা তৃণমূলের এক নেতা মনে করিয়ে দিলেন, “দিদির দ্বিতীয় ইনিংসের প্রথম সভা। নারায়ণগড়ের জন্য দিদি অনেক কিছুই করবেন। কিছু চমকও থাকবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন