নামের তালিকায় তুঙ্গে জল্পনা, হিসেব মোর্চায়

শনিবার বৈঠকে অংশগ্রহণকারীদের তালিকা প্রকাশ হতেই তুঙ্গে উঠেছে তর্ক। প্রতিনিধি দলে কট্টরপন্থী অর্থাৎ গুরুঙ্গের কাছের লোকদের সংখ্যা বেশি, নাকি নরমপন্থীদের, তা নিয়ে হিসেবনিকেশ চলছে মোর্চার ঘরে-বাইরে।

Advertisement

কিশোর সাহা

শেষ আপডেট: ২৭ অগস্ট ২০১৭ ০৩:২৪
Share:

পাহাড়ে পরপর বিস্ফোরণে অভিযুক্ত বিমল গুরুঙ্গের পক্ষে নবান্নের বৈঠকে যোগ দেওয়া অসম্ভব। তাই মোর্চার প্রতিনিধি কে বা কারা হবেন, তা নিয়ে আলোচনা চলছিলই। আর শনিবার বৈঠকে অংশগ্রহণকারীদের তালিকা প্রকাশ হতেই তুঙ্গে উঠেছে তর্ক। প্রতিনিধি দলে কট্টরপন্থী অর্থাৎ গুরুঙ্গের কাছের লোকদের সংখ্যা বেশি, নাকি নরমপন্থীদের, তা নিয়ে হিসেবনিকেশ চলছে মোর্চার ঘরে-বাইরে।

Advertisement

শনিবার মোর্চার তরফে প্রতিনিধি দলের তালিকা ঘোষণা করেছেন দলের চিফ কো-অর্ডিনেটর বিনয় তামাঙ্গ। তিনি ছাড়াও প্রতিনিধি দলে থাকবেন কার্শিয়াঙের অনিত থাপা, ডুয়ার্সের রোহিত রাই, কালিম্পঙের আরবি ভূজেল ও তরাই ও সুকনা এলাকার নেত্রী শিরিং দহেল। বিনয় বলেছেন, ‘‘দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সংখ্যাগরিষ্ঠের মতামতের ভিত্তিতেই প্রতিনিধি দল ঠিক হয়েছে। পাহাড়ের সব জায়গার প্রতিনিধিদের রাখা হয়েছে। তরাই-ডুয়ার্সের প্রতিনিধিত্বও রয়েছে। কোনও দলাদলি নেই।’’

কিন্তু, মোর্চার অন্দরের খবর, লাগাতার বন্‌ধ, স্কুল-কলেজ অচল রাখা, এ সব নিয়ে গুরুঙ্গের সঙ্গে সম্প্রতি বিনয়ের কিছুটা মতানৈক্য তৈরি হয়েছে। বিনয় বরাবরই পড়াশোনাকে আন্দোলনের বাইরে রাখতে চান। এ ছাড়া আলোচনার ব্যাপারেও বিনয় গোড়া থেকেই আগ্রহী। সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রী বিনয়ের চিঠি পাওয়ার কথা স্বীকার করেছেন। কিন্তু, গুরুঙ্গের চিঠি পাননি বলে স্পষ্ট জানিয়েছেন। ফলে এখন রাজ্যের কাছে বিনয়ের গ্রহণযোগ্যতা যে অনেক বেশি, তা স্পষ্ট। তাই প্রতিনিধি দলে বিনয় ঘনিষ্ঠের সংখ্যা বেশি হওয়ায় আলোচনা ফলপ্রসূ হওয়ার আশা করছে পাহাড়ের অন্য দলগুলিও।

Advertisement

আরও পড়ুন:গ্রেটার রাজ্য চায়, সতর্কতা প্রশাসনে

যেমন, অনিত ও আরবি একদা গুরুঙ্গ ঘনিষ্ঠ হলেও এ বার আন্দোলন শুরুর পরে তাঁদের বেশ কিছু প্রস্তাব গুরুঙ্গ মানতে না চাওয়ায় তাঁরা ক্ষুব্ধ। সম্প্রতি বিনয়-আরবি ও অনিত এক সুরে কথা বলছেন বলেই খবর। সেই তুলনায় শিরিং দহেল ও রোহিত কিছুটা নিরাপদ অবস্থানেই থাকতে পছন্দ করেন। কারণ, পাহাড়ে আন্দোলন করলেও সারা বছর দু’জনকেই সমতলের বাসিন্দাদের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে হয়। জিএনএলএফ-এর এক প্রবীণ নেতা মনে করেন, বৈঠকে বিনয়-অনিত-আরবির কথার উপরে কিছু বলার চেষ্টা দহেল অন্তত করবেন না। সে ক্ষেত্রে একা রোহিতের পক্ষে উল্টো পথে হাঁটা প্রায় অসম্ভব।

বৈঠকের সিদ্ধান্ত মোর্চার কট্টরপন্থীরা মানতে না চাইলে কী হবে, সে প্রশ্নও উঠছে। সে ক্ষেত্রে মোর্চায় ভাঙনের আশঙ্কাও উড়িয়ে দিচ্ছেন না অনেকেই। তবে মোর্চার এক শীর্ষ নেতার মতে, দলনেতা বেশি দিন আড়ালে থাকলে যে কোনও সংগঠনেই নেতৃত্ব নিয়ে টানাপড়েন তৈরি হয়। কিন্তু, পাহাড় ছন্দে ফিরলে দল সেই অবস্থা সামলে নিতে পারবে বলেই মনে করেন তিনি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement