তিন-তিন বার নোটিস পাঠানোর পরে নারদ-কাণ্ডে তিনি হাজিরা দিয়েছিলেন এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট বা ইডি-র সল্টলেকের দফতরে। এবং সেখানে নারদ নিউজের কর্ণধার ম্যাথু স্যামুয়েলের কাছ থেকে টাকা নেওয়ার কথা অস্বীকার করেছিলেন কলকাতার মেয়র তথা রাজ্যের অন্যতম মন্ত্রী শোভন চট্টোপাধ্যায়।
বুধবার শোভনবাবুকে এই মামলায় ডেকেছে সিবিআই। তিনি যাবেন কি না, মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত তার উত্তর পাওয়া যায়নি। তবে ম্যাথুর কাছ থেকে টাকা নেওয়ার প্রশ্নে শোভনবাবু তাদের কী বলেন, তা জানতে উৎসুক সিবিআই। নারদ মামলায় ইতিমধ্যে নোটিস পাঠানো হয়েছে দমদমের তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়ের কাছেও। কাল, বৃহস্পতিবার তাদের অফিসে হাজির হওয়ার জন্য সৌগতকে তলব করেছে সিবিআই। তদন্তকারী সংস্থার এক কর্তা অবশ্য জানান, ওই সময় সংসদীয় কমিটির বৈঠক রয়েছে বলে আইনজীবী মারফত চিঠি পাঠিয়ে সময় চেয়েছেন সৌগতবাবু।
গত বিধানসভা ভোটের আগে স্টিং অপারেশনের ভিডিও ফুটেজ প্রকাশ করে ম্যাথুর তরফে অভিযোগ করা হয়, রাজ্যের শাসক দলের বেশ কিছু তাবড় নেতা তাঁর কাছ থেকে টাকা নিয়েছেন। সেই ঘটনায় মেয়রের নাম জড়িয়ে তাঁকে হয়রান করা হচ্ছে বলে নিউ মার্কেট থানায় অভিযোগ দায়ের করেন শোভনবাবুর স্ত্রী রত্না চট্টোপাধ্যায়। ইডি এখন মেয়রের স্ত্রীকেও জিজ্ঞাসাবাদ করতে চাইছে। সেই জন্য ৪ সেপ্টেম্বর তাঁকে ইডি-র অফিসে তলব করা হয়েছে। ইডি-র বক্তব্য, নারদ-কাণ্ডে অভিযুক্তদের নিকটজনদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করা দরকার। হিসেব নেওয়া দরকার তাঁদের সম্পত্তিরও। আর মেয়র জেরার মুখে জানিয়েছেন, তাঁর টাকার হিসেব রাখেন রত্নাদেবী। তাই তাঁকেও জিজ্ঞাসাবাদ করতে চায় তারা।
এক তদন্তকারী জানান, নারদের ভিডিও ফুটেজে দেখা গিয়েছে, নিজের অফিসে সিগারেট খেতে খেতে নোটের বান্ডিল রেখে দিচ্ছেন কলকাতার মেয়র ও রাজ্যের পরিবেশমন্ত্রী শোভনবাবু। কলকাতা হাইকোর্টের তত্ত্বাবধানে সেই ফুটেজের ফরেন্সিক পরীক্ষায় দেখা গিয়েছে, তা জাল নয়।
ইডি এবং সিবিআইয়ের সমন্বয়ের ভিত্তিতে নারদ মামলার তদন্ত চলছে বলে জানান এক তদন্তকারী। তাই ইডি-র কাছে দেওয়া শোভনবাবুর বয়ান গুরুত্ব দিয়ে বিচার করা হবে। শোভনবাবুর সব ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের খোঁজ শুরু হয়েছে। মেয়র যে পুরসভায় নিজের অফিসেই টাকা নিচ্ছিলেন, তার সাক্ষীও তাদের হাতে এসেছে বলে সিবিআইয়ের দাবি।