হুইলচেয়ারে গান গেয়েই জয়

এ বার জাতীয় স্তরের ‘প্রতিবন্ধী সৃজনশীল শিশু’র পুরস্কার পেল বছর নয়ের বালিকা।

Advertisement

দেবমাল্য বাগচী

খড়্গপুর শেষ আপডেট: ১০ ডিসেম্বর ২০১৮ ০১:২১
Share:

বিজয়িনী: জাতীয় পুরস্কার হাতে উর্জস্বতী। ছবি: দেবরাজ ঘোষ

পায়ে ভর দিয়ে দাঁড়ানোর শক্তি নেই। বেঁকে যাচ্ছে মেরুদণ্ড। হাত হচ্ছে অসাড়। দিনের বেশিটাই কাটে হুইলচেয়ারে। কিন্তু তা পড়াশোনা আর গানের তালিমে বাধা হয়নি। সুরেলা গলাতেই খড়্গপুরের খরিদা বাঙালিপাড়া মিলনমন্দির এলাকার উর্জস্বতী রায়চৌধুরী পেয়েছিল রাজ্য পুরস্কার। এ বার জাতীয় স্তরের ‘প্রতিবন্ধী সৃজনশীল শিশু’র পুরস্কার পেল বছর নয়ের বালিকা।

Advertisement

জন্মের পর থেকে ‘স্পাইনোমাসকুলার অ্যাট্রোফি’ রোগে আক্রান্ত উর্জস্বতী। আইআইটি চত্বরের একটি বেসরকারি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে আর পাঁচজন সাধারণ পড়ুয়ার সঙ্গেই চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ে সে। মেধায় অন্যদের সঙ্গে পাল্লাও দেয়। আর অবসরে কখনও রং-তুলি, কখনও আবার সাত সুরের সাধনায় ডুবে থাকে সে।

গানেই ২০১৬ সালের ৩ ডিসেম্বর মিলেছিল ‘রাজ্য পুরস্কার’। আর এ বার ৩ ডিসেম্বর, বিশ্ব প্রতিবন্ধী দিবসে দিল্লির বিজ্ঞান ভবনে উপরাষ্ট্রপতি বেঙ্কাইয়া নায়ডুর হাত থেকে ‘জাতীয় পুরস্কার’ পেয়েছে উর্জস্বতী। শনিবার বাড়ি ফিরেছে মেয়ে। উর্জস্বতীর বাবা উত্তীয় রায়চৌধুরী বিদ্যুৎ বণ্টন বিভাগের পাঁশকুড়ার গৌরাঙ্গপুরের ডিভিশনাল ইঞ্জিনিয়ার। মেয়ের গান শেখা মায়ের কাছে। উত্তীয় বলেন, “দেশের ১৭২জন শিশু এই জটিল রোগে আক্রান্ত। তাদের মধ্যে আমাদের মেয়েই প্রথম এই জাতীয় পুরস্কার পেল।’’ আরও যোগ করেন, ‘‘অনেক অভিভাবকই সন্তানের এমন রোগে ভেঙে পড়েন। আপনারা ভেঙে না পড়ে আমার মেয়েকে দেখে উৎসাহিত হন।”

Advertisement

দিল্লি ঘুরে এসে উর্জস্বতীও খুশি। সে বলে, “দিল্লিতে গিয়ে খুব আনন্দ হয়েছে। উপ-রাষ্ট্রপতি আমাকে পুরস্কার দিয়েছেন।’’ আরও ভাল গান শেখার পাশাপাশি বিজ্ঞানী হওয়ার স্বপ্ন দেখে সে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন