SSC Exam

এসএসসি পরীক্ষা চলছে, রাজ্যের ৬৩৬টি কেন্দ্রেই কড়া নজরদারি ও নিরাপত্তা, শেষ হবে দুপুর দেড়টায়

নির্দিষ্ট সময়েই রাজ্যের ৬৩৬টি কেন্দ্রে স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি)-এর নবম-দশমে নিয়োগের পরীক্ষা শুরু হল। পরীক্ষা দিচ্ছেন ৩ লক্ষ ১৯ হাজার ৯১৯ জন। পরীক্ষার্থীদের মধ্যে রয়েছেন ভিন্‌রাজ্যের প্রায় ৩১ হাজার জনও।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১২:০১
Share:

পরীক্ষার আগে পরীক্ষার্থীদের দেহ তল্লাশি করা হচ্ছে। রবিবার কলকাতার একটি পরীক্ষাকেন্দ্রে। —নিজস্ব চিত্র।

নির্দিষ্ট সময়েই রাজ্যের ৬৩৬টি কেন্দ্রে স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি)-এর নবম-দশমে নিয়োগের পরীক্ষা শুরু হল। পরীক্ষা দিচ্ছেন ৩ লক্ষ ১৯ হাজার ৯১৯ জন। পরীক্ষার্থীদের মধ্যে রয়েছেন ভিন্‌রাজ্যের প্রায় ৩১ হাজার জনও। এসএসসি সূত্রে খবর, তাঁদের সংখ্যা মোট পরীক্ষার্থীদের ১০ শতাংশ।

Advertisement

২০১৬ সালের এসএসসি পরীক্ষা ঘিরে বিস্তর দুর্নীতি এবং অনিয়মের অভিযোগ উঠেছিল। তাতে স্বাভাবিক ভাবে মুখ পুড়েছিল কমিশন এবং রাজ্য সরকারের। সুপ্রিম কোর্টেও ২০১৬ সালের প্যানেল বাতিল হয়ে গিয়েছে। তাতে চাকরি খুইয়েছেন প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক এবং শিক্ষাকর্মী। শীর্ষ আদালতেরই নির্দেশে সেই পরীক্ষাই আবার নতুন করে হচ্ছে। রবিবার নবম-দশম শ্রেণিতে শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষা। ৮ বছর ৯ মাস পরে ফের এসএসসি-র মাধ্যমে শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষা হচ্ছে।

পরীক্ষাকেন্দ্রে ঢোকার আগে পরীক্ষার্থীদের লাইন সামলাচ্ছেন এক পুলিশকর্মী। পশ্চিম মেদিনীপুরের একটি পরীক্ষাকেন্দ্রে। —নিজস্ব চিত্র।

এই পরীক্ষা ঘিরেও কম বিতর্ক হয়নি। চাকরি হারানোদের মধ্যে সুপ্রিম কোর্ট যাঁদের দাগি বা টেন্টেড বলে চিহ্নিত করেছিল, তাঁরা নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে চেয়ে কলকাতা হাই কোর্ট এবং শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। পরীক্ষার সূচি পরিবর্তনের আর্জিও জানানো হয়েছিল। সুপ্রিম কোর্ট অবশ্য দু’টি আর্জিই খারিজ করে দেয়। শীর্ষ আদালত স্পষ্ট ভাবে জানিয়ে দেয়, এক জন দাগিও নতুন নিয়োগে অংশ নিতে পারবেন না। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনেই গত ৩০ সেপ্টেম্বর ‘দাগি’দের তালিকা প্রকাশ করে স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি)। ১,৮০৬ জন ‘দাগি’ অযোগ্যের তালিকা প্রকাশ করা হয়। তবে এ বার বিতর্ক সরিয়ে পরীক্ষা স্বচ্ছ ভাবে হবে বলেই আশাবাদী পরীক্ষার্থীরা।

Advertisement

অ্যাডমিট দেখিয়ে পরীক্ষাকেন্দ্রে ঢুকছেন পরীক্ষার্থীরা। দক্ষিণ ২৪ পরগনার একটি পরীক্ষাকেন্দ্রে। —নিজস্ব চিত্র।

২০১৬ সালে এসএসসি-র পরীক্ষায় বসা এক পরীক্ষার্থী জানান, নিয়োগে দুর্নীতির কারণেই অপেক্ষমাণ তালিকা (ওয়েটিং লিস্ট)-য় নাম চলে গিয়েছিল তাঁর। এ বারও পরীক্ষায় বসেছেন তিনি। পরীক্ষায় বসার আগে ওই পরীক্ষার্থী বলেন, “২০১৬ সালে আমার যে রকম পরীক্ষা হয়েছিল, এত দিন বাদে আমি ততটা ভাল পরীক্ষা দেব, তেমন আমি আশা করছি না। কিন্তু আদালতের নির্দেশ মেনে পরীক্ষা নেওয়া হচ্ছে। এ বার হয়তো স্বচ্ছতার সঙ্গে যোগ্য যাঁরা, তাঁরা সুযোগ পাবেন। আমি আশাবাদী।” বিহারের মুজফ্ফ‌রপুর থেকে পরীক্ষা দিতে এসেছেন মহাবীর ঝাঁ। পরীক্ষাকেন্দ্রে ঢোকার আগে তিনি বলেন, “পরীক্ষা নিয়ে দুর্নীতি সব রাজ্যেই হয়। বাংলায় অনেক দিন পর এই পরীক্ষা হচ্ছে। আমার যে বিষয়, তাতে অনেক শূন্যপদ রয়েছে। তাই আমি এখানে আবেদন করেছি। আমরা চাই আর দুর্নীতি নয়, যোগ্যতার ভিত্তিতে যেন সকলে চাকরি পায়।”

লাখ লাখ চাকরিপ্রার্থীই শুধু পরীক্ষা দিচ্ছেন না রবিবার। পরীক্ষা স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি)-এরও! রবিবারের পরীক্ষা নিয়ে শনিবার সকালেই সাংবাদিক বৈঠক করেছিলেন এসএসসির চেয়ারম্যান সিদ্ধার্থ মজুমদার। তিনি জানান, পরীক্ষা শুরু হবে দুপুর ১২টা থেকে। প্রশ্নপত্র বিতরণ শুরু হবে সকাল ১১টা ৪৫ থেকে। তখন শুধু নিজের নামটুকুই লিখতে পারবেন পরীক্ষার্থীরা। উত্তর লেখা শুরু করা যাবে দুপুর ১২টা থেকে। পরীক্ষা শেষ হবে দুপুর দেড়টায়। বিশেষ ভাবে সক্ষমেরা আধ ঘণ্টা বেশি সময় পাবেন। পরীক্ষা শেষ না-হওয়া পর্যন্ত কেউ হল থেকে বেরোতে পারবেন না। এসএসসির পরীক্ষা নিয়ে শনিবার বিকেল ৪টেয় জেলাশাসকদের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন রাজ্যের মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ। নবান্ন সূত্রে খবর, ওই বৈঠকে প্রত্যেকটি জেলা প্রশাসনকে নির্দিষ্ট কিছু নির্দেশিকা দিয়েছেন মুখ্যসচিব। নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয়ে কোনও ফাঁক রাখতে চাইছে না কমিশন এবং‌ রাজ্য প্রশাসন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement