Madhyamik examination

মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক বাতিলের সুপারিশ বিশেষজ্ঞ কমিটির, চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে নবান্ন

বিশেষজ্ঞদের রিপোর্টে বলা হয়েছে, করোনা আবহে পড়ুয়াদের স্কুলে গিয়ে পরীক্ষা দেওয়া বাস্তবসম্মত নয়। সবটাই সুপারিশের আকারে পেশ করা হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৫ জুন ২০২১ ০৫:৫৫
Share:

ফাইল চিত্র।

অতিমারির মধ্যে দিল্লির জোড়া বোর্ড সিবিএসই এবং সিআইএসসিই-র দ্বাদশ শ্রেণির (আইএসসি) চূড়ান্ত পরীক্ষা আগেই বাতিল করা হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের গড়া ছয় সদস্যের বিশেষজ্ঞ কমিটিও একই কারণে রাজ্যে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা বাতিলের সুপারিশ করল। ওই কমিটির রিপোর্ট শুক্রবার জমা পড়েছে স্কুলশিক্ষা দফতরে।

Advertisement

শিক্ষা সূত্রের খবর: বিশেষজ্ঞদের রিপোর্টে বলা হয়েছে, করোনা আবহে পড়ুয়াদের স্কুলে গিয়ে পরীক্ষা দেওয়া বাস্তবসম্মত নয়। সবটাই সুপারিশের আকারে পেশ করা হয়েছে। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে রাজ্য সরকারই।

জীবনের প্রথম দু’টি বড় পরীক্ষা বাতিলের সুপারিশের পাশাপাশি ওই দুই স্তরের ছাত্রছাত্রীদের মূল্যায়ন কী ভাবে হবে, তার সম্ভাব্য পন্থা-পদ্ধতিও জানিয়েছে বিশেষজ্ঞ কমিটি। সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর: বিশেষজ্ঞ কমিটির মতে, উচ্চ মাধ্যমিকের পরীক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে হোম অ্যাসাইনমেন্টের মাধ্যমে মূল্যায়ন হতে পারে। এর সঙ্গে থাকবে ল্যাবরেটরি-ভিত্তিক বিষয়ে ৩০ নম্বর এবং ‘নন-ল্যাব’ বিষয়গুলির ২০ নম্বরের প্রজেক্টে ছাত্রছাত্রীদের প্রাপ্ত নম্বর। স্কুলের মাধ্যমে উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের কাছে ইতিমধ্যেই সেই নম্বর জমা পড়েছে। কমিটি চাইছে, পরীক্ষার্থীদের মূল্যায়নের ক্ষেত্রে ওই সব নম্বরকে গুরুত্ব দেওয়া হোক।

Advertisement

বিশেষজ্ঞ কমিটির রিপোর্ট অনুযায়ী, মাধ্যমিকের ক্ষেত্রে পরীক্ষার্থীদের নবম শ্রেণির বার্ষিক অথবা প্রথম সামেটিভ, ষাণ্মাসিক ও বার্ষিক পরীক্ষার নম্বরের গড় কষে নম্বর দেওয়া যেতে পারে। সেই সঙ্গে মাধ্যমিকের ১০ নম্বরের অন্তর্বর্তী প্রস্তুতিকালীন মূল্যায়নকেও গুরুত্ব দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।

জুলাইয়ে উচ্চ মাধ্যমিক এবং অগস্টে মাধ্যমিক পরীক্ষা হবে বলে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ২৭ মে জানিয়েছিলেন। শিক্ষা শিবির সূত্রের খবর, এর পরে পরীক্ষা হওয়া না-হওয়ার ব্যাপারে নানা মতামত আসতে থাকে। ইতিমধ্যে সিবিএসই-র দ্বাদশ এবং আইএসসি পরীক্ষাও বাতিল হয়ে যায়। তার পরে গঠিত হয় রাজ্যের এই বিশেষজ্ঞ কমিটি।

সব কিছু যাচাই করে কমিটির রিপোর্টে যে-সব বিষয়ে জোর দেওয়া হয়েছে, তার মধ্যে আছে: করোনার দাপটে ইতিমধ্যে সিবিএসই এবং আইসিএসই, আইএসসি পরীক্ষা বাতিল হয়ে গিয়েছে। গত এক বছরে অনলাইনে স্কুল যে-সব পরীক্ষা নিয়েছে, তার ফলাফলের ভিত্তিতে পরীক্ষার্থীদের মূল্যায়নে উদ্যোগী হয়েছে ওই সব বোর্ড। আরও সাতটি রাজ্য দশম ও দ্বাদশের বোর্ড পরীক্ষা বাতিল করেছে। সিবিএসই এবং সিআইএসসিই-র বোর্ড পরীক্ষা বাতিল করার সিদ্ধান্তে বৃহস্পতিবার সন্তোষ প্রকাশ করেছে সুপ্রিম কোর্ট। দেশের কোনও একটি রাজ্যের বোর্ড এই পরিস্থিতিতে পড়ুয়াদের স্কুলে এনে পরীক্ষা নিলে এবং পরীক্ষার্থীদের কেউ সংক্রমিত হলে বিষয়টি অন্য মাত্রা নিতে পারে। অতিমারি নিয়ন্ত্রণে ভ্যাকসিন দেওয়ার যে-কর্মকাণ্ড চলছে, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীরা সরকারি ভাবে এখনও তার আওতায় আসেননি। ওই দুই স্তরে মোট ২১ লক্ষ পরীক্ষার্থীর মধ্যে ১৮ বছরের বেশি বয়সি পড়ুয়ার সংখ্যা খুবই কম। ভ্যাকসিন না-দিয়ে স্কুলে হাজির হয়ে পরীক্ষা দিতে বলা বাস্তবসম্মত নয় বলেই মনে করছে কমিটি। কারণ, অল্পবয়সিদের মধ্যে করোনা সংক্রমণের হার বৃদ্ধির প্রবণতা দেখা দিয়েছে। এই সমস্ত দিক বিচার-বিবেচনা করে বিশেষজ্ঞ কমিটি সশরীরে পরীক্ষা নেওয়া বাস্তবসম্মত নয় বলে রিপোর্টে জানিয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন