Bengal BJP President Election

প্রদেশ পরিষদ সদস‍্যদের নাম চাওয়া হল, রাজ‍্য বিজেপি-তে শুরু সভাপতি নির্বাচন প্রক্রিয়া, জাতীয় সভাপতি জুনের শেষে?

সূত্রের খবর, জুন মাসের শেষ সপ্তাহের মধ্যে বিজেপি-র জাতীয় সভাপতি নির্বাচনও সেরে ফেলা হবে। জুনের তৃতীয় সপ্তাহে মনোনয়ন-সহ নির্বাচনী প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার কথা। চতুর্থ সপ্তাহে হওয়ার কথা সভাপতি নির্বাচন। অর্থাৎ, জেপি নড্ডার পরবর্তী নেতা নির্বাচন। যদিও এ নিয়ে এখনও আনুষ্ঠানিক ভাবে মুখ খুলছেন না কেউই।

Advertisement

ঈশানদেব চট্টোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ২৯ মে ২০২৫ ১৩:১০
Share:

—ফাইল চিত্র।

মুখে উচ্চবাচ্য না থাকলেও কাজে ফুটে উঠছে লক্ষণ। বিজেপির রাজ্য সভাপতি নির্বাচন নিয়ে নানা গুঞ্জন চলছিল দলের ভিতরে-বাইরে। কোনও প্রশ্নেরই স্পষ্ট উত্তর মিলছিল না। কিন্তু সাংগঠনিক নির্বাচনের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা সব জেলা থেকে প্রদেশ পরিষদ সদস্যদের নাম চেয়ে পাঠানোয় আবার আলোচনার কেন্দ্রে ‘সভাপতি নির্বাচন’। সে নির্বাচন যে হতে চলেছে, তা অবশ্য অস্বীকার করছেন না রিটার্নিং অফিসার। প্রদেশ পরিষদ সদস্যদের তালিকা প্রকাশ্যে আনার ক্ষেত্রেও বিরল ‘স্বচ্ছতা’ দেখা যাচ্ছে রাজ্য বিজেপি-তে।

Advertisement

একই সঙ্গে সূত্রের খবর, জুন মাসের শেষ সপ্তাহের মধ্যে বিজেপি-র জাতীয় সভাপতি নির্বাচনও সেরে ফেলা হবে। জুনের তৃতীয় সপ্তাহে মনোনয়ন-সহ নির্বাচনী প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার কথা। চতুর্থ সপ্তাহে হওয়ার কথা সভাপতি নির্বাচন। অর্থাৎ, জেপি নড্ডার পরবর্তী নেতা নির্বাচন। যদিও এ নিয়ে এখনও আনুষ্ঠানিক ভাবে মুখ খুলছেন না কেউই।

আপাতত রাজ্য বিজেপিতেও আলোচনা রাজ্যের সভাপতি নির্বাচন নিয়েই। অর্থাৎ, সুকান্ত মজুমদারের উত্তরসূরি কে হবেন, তা নিয়ে।

Advertisement

বিজেপিতে সাংগঠনিক কাঠামোয় বদল আনতে হলে বা দলের গঠনতন্ত্রে কোনও পরিবর্তন ঘটাতে গেলে প্রদেশ পরিষদ এবং জাতীয় পরিষদ অপরিহার্য। সভাপতি নির্বাচনের ক্ষেত্রেও ভোটদানের অধিকার শুধু এই দুই পরিষদের সদস্যদের। দেশের প্রত্যেক লোকসভা কেন্দ্র থেকে এক জন করে প্রতিনিধি থাকেন জাতীয় পরিষদে। তাঁরা সর্বভারতীয় সভাপতি নির্বাচন করেন। আর প্রত্যেক বিধানসভা কেন্দ্র থেকে এক জন করে প্রতিনিধি থাকেন প্রদেশ পরিষদে। তাঁরা সংশ্লিষ্ট রাজ্যের সভাপতিকে নির্বাচিত করেন।

রাজ‍্য রিটার্নিং অফিসার হিসেবে বঙ্গ বিজেপির সাংগঠনিক নির্বাচন দেখভালকারী নেতা দীপক বর্মণ এ বার সেই প্রদেশ পরিষদ নতুন করে গঠনের জন‍্য সব জেলা সভাপতির কাছ থেকে নাম চেয়েছেন। বিধানসভা কেন্দ্রপিছু এক জন করে প্রতিনিধির নাম জেলা সভাপতিরা পাঠিয়েও দিয়েছেন। জুন মাসের প্রথম সপ্তাহেই প্রদেশ পরিষদ সদস্যদের নামের পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রকাশ করার কথা।

হঠাৎ প্রদেশ পরিষদ সদস্যদের নাম চাওয়া কেন? এই মুহূর্তে রাজ‍্য বিজেপির সাংগঠনিক কাঠামোয় কোনও বদলের সম্ভাবনা নেই। সংগঠনে নতুন কোনও পদ তৈরি করা হচ্ছে না বা কোনও সাংগঠনিক কমিটির বা বিভাগের সীমানা পুনর্বিন্যাসও হচ্ছে না যে, প্রদেশ পরিষদের বৈঠক ডেকে সিদ্ধান্ত পাশ করাতে হবে। সভাপতি নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু করাই এর একমাত্র কারণ হতে পারে।

রাজ‍্য রিটার্নিং অফিসার তথা রাজ‍্য বিজেপির অন‍্যতম সাধারণ সম্পাদক দীপক সে কথা অস্বীকার করছেন না। তাঁর কথায়, ‘‘সভাপতি নির্বাচন তো করতেই হবে। সেটা তো আমাদের সাংগঠনিক প্রক্রিয়া।’’ কে সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত হতে চলেছেন, সে বিষয়ে দীপক মুখ খুলছেন না। তিনি বলছেন, ‘‘সভাপতি যিনিই হোন না কেন, তাঁর নামটা প্রদেশ পরিষদের মাধ‍্যমেই নির্বাচিত হতে হবে। আশা করছি, জুন মাসের প্রথম সপ্তাহের মধ্যেই প্রদেশ পরিষদ সদস্যদের নামের পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রকাশ করে দিতে পারব।’’

বিজেপির গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, যত ক্ষণ না নতুন সর্বভারতীয় সভাপতির নাম ঘোষিত হচ্ছে, তত ক্ষণ বিভিন্ন রাজ‍্য তাদের সাংগঠনিক নির্বাচন প্রক্রিয়া চালাতে পারবে। কিন্তু পরবর্তী মেয়াদের জন‍্য সর্বভারতীয় সভাপতি কে হচ্ছেন বা থাকছেন, তা ঘোষিত হলেই গোটা দেশে সাংগঠনিক নির্বাচন প্রক্রিয়া শেষ। যে সব রাজ্যে সভাপতি নির্বাচন তখনও বাকি থেকে যাবে, সে সব রাজ্যে তখন আর নির্বাচন হবে না। নতুন সর্বভারতীয় সভাপতি একে একে ঘোষণা করে দেবেন সেই রাজ্যগুলির সভাপতিদের নাম। তাই সর্বভারতীয় সভাপতি পদে কে আসছেন, তা যত ক্ষণ না ঘোষিত হচ্ছে, তত ক্ষণ পশ্চিমবঙ্গ বিজেপির সামনে নির্বাচন প্রক্রিয়ার মাধ‍্যমে সভাপতি বেছে নেওয়ার সুযোগ থাকছে। রাজ‍্য নেতৃত্বের আশা, তাঁরা সেই সুযোগ কাজে লাগাতে পারবেন। অর্থাৎ, সর্বভারতীয় সভাপতির নাম ঘোষিত হওয়ার আগেই পশ্চিমবঙ্গের সভাপতি নির্বাচন প্রক্রিয়া সেরে ফেলতে পারবেন।

রাজ‍্য বিজেপির একটি অংশের বক্তব্য, বিধানসভা নির্বাচন যেহেতু ১০ মাস দূরে, তাই এই মুহূর্তে সভাপতি বদল করে গোটা কাঠামোকে নতুন করে সাজানোর ঝুঁকি না-ও নেওয়া হতে পারে। তবে অন‍্য একটি অংশের মতে, সুকান্ত কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। তাই ‘এক ব্যক্তি, এক পদ’ নীতি মেনে তাঁকে সভাপতিত্ব থেকে সরতে হবে। কে তাঁর বিকল্প হতে পারেন, তা নিয়ে অবশ্য রাজ‍্য বিজেপির অন্দরে কোনও ঐকমত্যের আভাস নেই। ফলে সভাপতি নির্বাচন প্রক্রিয়া অনুষ্ঠিত হলেও সেই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সুকান্তের জায়গায় অন‍্য কেউ উঠে আসবেন, এমন কোনও ইঙ্গিত এখনও পর্যন্ত কেউ দিতে পারছেন না।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement