ইমতিয়াজ কবির
ভাষা দিবসের অনুষ্ঠানে তৃণমূলের যুবনেতাকে মঞ্চে ডেকে ‘অতিথি বরণ’ করা হয়নি। সেই রাগে দফায়-দফায় ভাঙচুর চালানো হল ইসলামপুরের মুর্শিদাবাদ আদর্শ মহাবিদ্যালয়ে।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সোমবারও বলেছেন, বিক্ষোভের নামে ভাঙচুর তিনি বরদাস্ত করবেন না। কিন্তু এ দিন ঠিক সেটাই ঘটল।
মুর্শিদাবাদের ডোমকল মহকুমার ওই কলেজে ভাষা দিবসের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে সকালেই পড়ুয়ারা কলেজে এসে গিয়েছিলেন। বেলা ১২টা নাগাদ জিয়াগঞ্জ কলেজের অধ্যক্ষ যখন বক্তৃতা করছেন, তখন এক দল ছেলে ছাত্র সংসদ অফিস থেকে লাঠি-উইকেট নিয়ে এসে চড়াও হয়। চলে ভাঙচুর। বিকেলে ফের এক দফা ভাঙচুর চলে বলে অভিযোগ। সন্ধ্যা পর্যন্ত ঘেরাও করে রাখা হয় শিক্ষকদের।
কলেজের ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক বাসব ঘোষের অভিযোগ, ‘‘যুব তৃণমূল নেতা ইমতিয়াজ কবিরের দাবি ছিল, তাঁকে প্রধান অতিথি হিসেবে মঞ্চে ডাকতে হবে। এক বহিরাগতকে অতিথি করা হবে কেন? রাজি হইনি বলেই তাঁর দলবল ভাঙচুর করেছে।’’ ইমতিয়াজ অবশ্য তা মানতে চাননি। তাঁর দাবি, ‘‘অতিথি বরণের কথা ডাহা মিথ্যা। আমন্ত্রণপত্র পেয়ে সকাল থেকে পরিক্রমায় যোগ দিয়েছি। সভা চলাকালীন দর্শকাসনে বসেছি।’’
আরও পড়ুন: মার্চের শুরুতে অভিষেক ফের ময়দানে
ইমতিয়াজের মতে, এক দল ছাত্র তাদের সাধারণ সম্পাদককে গুরুত্ব না দেওয়া নিয়ে ‘হই-হট্টগোল’ করেছে। ‘‘ছাত্রদের শান্ত থাকতে বলে তখনই বেরিয়ে এসেছি,’’ দাবি যুবনেতার। জেলা যুব তৃণমূল সভাপতি সৌমিক হোসেনের দাবি, ‘‘দলের কেউ জড়িত নয়। কর্তৃপক্ষ ছাত্রদের গুরুত্ব না দেওয়ায় হট্টগোল হয়েছে।’’ কলেজের টিএমসিপি পরিচালিত ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক জামশেদ মিঞাও বলেন, ‘‘কোনও ব্যাপারে আমাদের গুরুত্ব দেওয়া হয় না। তাই হট্টগোল হয়েছে। ভাঙচুর হয়নি।’’ কলেজ পরিচালন সমিতির সদস্য তথা তৃণমূলের রানিনগর ১ ব্লক সভাপতি আমিনুল হাসান ওরফে বাপি অবশ্য বলেন, ‘‘এক জন বহিরাগত হয়ে ইমতিয়াজ কবির কেন কলেজে এমন ঘটালেন, বুঝলাম না। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর কটাক্ষ, ‘‘দিদিকে দেখেই তো ভাইরা শিখেছে! ভূতের মুখে রামনাম কেউ শুনবে?’’
প্রশ্নের মুখে পুলিশের ভূমিকাও। বাসববাবুর অভিযোগ, ‘‘ভাঙচুর হচ্ছে দেখে ইসলামপুর থানায় ফোন করলে ওসি বলেন, ‘আপনাদের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি আপনাদেরই মেটাতে হবে। এক বার মঞ্চে তুলে নিলেই তো হত! আমরা সাহায্য করতে পারব না।’ এর পরে কী করে ভরসা রাখব?’’ রাত পর্যন্ত কলেজের তরফে থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়নি।