কুশপুতুল পোড়ানো হচ্ছে ঝাড়গ্রামের তৃণমূল সাংসদ উমা সরেনের। দাঁতনে, সোমবার।- নিজস্ব চিত্র।
যে জঙ্গলমহলের আদিবাসী বিক্ষোভ এক সময়ের শাসক সিপিএমের বড় মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিল, যে ‘জঙ্গলমহলের হাসি’ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রচারের বড় মুখ, এ বার সেখানেই বেনজির ক্ষোভের মুখে পড়তে হল বর্তমান শাসক দলকে। ঘটনার সূত্রপাত আদিবাসীদের নিয়ে তৃণমূল সাংসদের একটি মন্তব্য।
একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলনে প্রতিনিধিত্ব করে সাংসদ উমা সরেন কুর্মিদের আদিবাসী সম্প্রদায়ভুক্ত বলে মন্তব্য করেন। তার জেরেই আজ সোমবার, গোটা পশ্চিম মেদিনীপুর এবং ঝাড়গ্রামের বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে আদিবাসীদের মিছিল, প্রতিবাদ চলল। পাশাপাশি পোড়ানো হল সাংসদের কুশপুতুলও।
আদিবাসীদের সংগঠন ‘ভারত জাকাত মাঝি পারগানা মহল’ এ দিন দাঁতন হাসপাতাল থেকে সরাইবাজার পর্যন্ত মিছিল করে। বিক্ষোভ হয় ঝাড়গ্রামেও।
ঝাড়গ্রামের তৃণমূল সাংসদ উমা সরেনের ছবি নিয়ে বিক্ষোভ দাঁতনে। সোমবারের নিজস্ব চিত্র।
আদিবাসীদের দাবি, সাংসদ সরেন তফশিলি জাতি (এসসি), তফশিলি উপজাতি (এসটি) সম্প্রদায়ের মাহাতদের একই শ্রেণিভুক্ত বলে মন্তব্য করেছেন। কিন্তু আদিবাসীরা মনে করেন, সাংসদের ওই মন্তব্যটি ত্রুটিপূর্ণ। যাঁরা আদিবাসী নন, তাঁদের আদিবাসী বলা ঠিক হয়নি। এ ছাড়াও এসসি, এসটি আইনকে লঘু করে দেখানো হয়েছে।
সংগঠনের তরফে নিমাই হেমব্রম ও সূর্যকান্ত মুর্মু বলেন, "মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে আন্তর্জাতিক সম্মেলনে যোগ দিয়ে ঝাড়গ্রামের সাংসদ তাঁর বক্তব্যে আদিবাসীদের অসম্মানিত করেছেন। আমাদের আশাহত করেছেন তিনি। তারই প্রতিবাদ জানাচ্ছি।"
আরও পড়ুন- এ বার ভোট-অঙ্কে ঢুকে পড়ল বাঘও
আরও পড়ুন- জঙ্গলমহল জানে আমি কে, আচমকাই মুখ খুললেন ভারতী ঘোষ
আদিবাসীরা মনে করেছিলেন, জেনিভায় গিয়ে ঝাড়গ্রামের সাংসদ তাঁদের সংস্কৃতি ও কৃষ্টিকে আন্তর্জাতিক স্তরে তুলে ধরবেন। কিন্তু সেই আশা ও বিশ্বাসে সাংসদ আঘাত হেনেছেন বলে দাবি আদিবাসীদের।
সংগঠনের জেলা স্তরের নেতা রবীন টুডু বলেন,"যাঁরা আদিবাসী নন, তাঁদের ‘আদিবাসী’ আখ্যা দিয়েছেন সাংসদ। ১৯৮৯ সালের এসসি, এসটি আইন তিনি লঘু করেছেন। আমরা এর তীব্র বিরোধিতা করছি।"