China

করোনা-ভয়ে বাতিল গবেষণা সফর

রায়গঞ্জ শহরের মোহনবাটী বাজার লাগোয়া নিশীথ সরণী এলাকার বাসিন্দা ত্রিস্রোতা।

Advertisement

গৌর আচার্য 

রায়গঞ্জ শেষ আপডেট: ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০১:৩২
Share:

ত্রিস্রোতা ভৌমিক। নিজস্ব চিত্র

চিনের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণামূলক কাজে যোগ দেওয়ার কথা ছিল রায়গঞ্জের এক ছাত্রীর। আগামী ১ মার্চেই সেখানে যাওয়ার কথা ছিল তাঁর। কিন্তু সে দেশে করোনাভাইরাসের হানায় আপাতত চিনে যেতে পারলেন না ত্রিস্রোতা ভৌমিক।

Advertisement

রায়গঞ্জ শহরের মোহনবাটী বাজার লাগোয়া নিশীথ সরণী এলাকার বাসিন্দা ত্রিস্রোতা। তাঁর বাবা তীলকতীর্থ রায়গঞ্জ করোনেশন হাইস্কুলে হিসাবশাস্ত্রের শিক্ষক। মা লিপিকা জানান, তাঁদের একমাত্র মেয়ে ত্রিস্রোতা ছোট থেকেই বিভিন্ন শ্রেণির পরীক্ষায় ভাল ফল করেছেন। বিদেশে উচ্চশিক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। মারণ-ভাইরাসের ভয়ে তা থম্‌কে গেল। তিলকের কথায়, ‘‘চিনের পরিস্থিতি কবে স্বাভাবিক হবে, সেই চিন্তায় রয়েছি।’’

পারিবারিক সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০০৩ সালে রায়গঞ্জ গার্লস হাইস্কুল থেকে মাধ্যমিক পাস করেন ত্রিস্রোতা। ২০০৫ সালে করোনেশন হাইস্কুল থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাশ করেন। ২০০৮ সালে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ভূতত্ত্ববিদ্যা নিয়ে স্নাতক হন। ২০১০ সালে একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর পরীক্ষা পাশ করেন। তার পরে করেন পিএইচডি-ও। মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় ত্রিস্রোতা ৯০ শতাংশের উপর নম্বর পেয়েছেন। স্নাতক ও স্নাতকোত্তর স্তরে পান ৭০ শতাংশের কিছু বেশি নম্বর।

Advertisement

ত্রিস্রোতার বক্তব্য, পিএইচডি করার পরে তিনি মেডিক্যাল ভূগর্ভস্থ জলস্তরের সঙ্গে কয়লা মিশে জলদূষণ ও সেই দূষণের জেরে বিভিন্ন অসুখ সম্পর্কে গবেষণার সিদ্ধান্ত নেন। সেই মতো, চিনের হান্ডান শহরের হেবেই ইঞ্জিনিয়ারিং বিশ্ববিদ্যালয়ে অনলাইনে আবেদন জানান। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ গত বছর সেপ্টেম্বর মাসে তাঁকে সেখানে গবেষণামূলক কাজে যোগ দেওয়ার অনুমতি দেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে তাঁকে ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যে ভিসা পাঠিয়ে দেওয়ার কথাও জানানো হয়।

ত্রিস্রোতা বলেন, ‘‘১ মার্চ থেকে চিনের ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে দু’বছরের ওই গবেষণামূলক কাজে যোগ দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু করোনাভাইরাস সংক্রমণের আতঙ্কে কিছুদিন আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে আমাকে ইমেল পাঠিয়ে ও ফোন করে আমাকে সেখানে যেতে নিষেধ করা হয়। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে আমাকে ভিসা পাঠানো হবে বলে জানানো হয়েছে।’’

তিনি জানান, হান্ডান শহরে ২০ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন বলে বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে তাঁকে জানানো হয়েছে। ১৭ ফ্রেব্রুয়ারি শীতের ছুটি শেষ হওয়ার পরে বিশ্ববিদ্যালয় খোলার কথা রয়েছে। কিন্তু করোনাভাইরাসের জেরে সে দিন বিশ্ববিদ্যালয় খুলবে কিনা, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত তাঁর ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে গবেষণামূলক কাজে যোগ দেওয়া আটকে গিয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন