ছাত্র-সংঘর্ষ, কলেজ চত্বরে গুলি

কলেজ-সংলগ্ন টিএমসিপির একটি অফিস কিছু দিন আগে এবিভিপি দখল করে নিয়েছিল বলে অভিযোগ ওঠে। এ দিন সেই অফিসেরই দখল নিতে হাজির হয় টিএমসিপি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২২ অগস্ট ২০১৯ ০১:৩২
Share:

ঋষি বঙ্কিমচন্দ্র কলেজের সামনে পুলিশি পাহারা। বুধবার। নিজস্ব চিত্র

তৃণমূল এবং বিজেপির ছাত্র সংগঠনের গোলমালে গুলি চলল নৈহাটির ঋষি বঙ্কিমচন্দ্র কলেজ চত্বরে। দু’পক্ষের মারপিটে উত্তেজনা ছড়ায় কলেজ ক্যাম্পাসের ভিতরেও।

Advertisement

বুধবার দুপুরে এই ঘটনায় জখম হয়েছেন দু’পক্ষের কয়েক জন। আতঙ্কিত হয়ে পড়েন পড়ুয়ারা। দুপুরের পরে ক্লাস বন্ধ হয়ে যায়। রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় কলেজ-সংলগ্ন রাস্তা। পুলিশ এসে পরিস্থিতি সামাল দেয়। নামানো হয় র‌্যাফ। গোলমালের আশঙ্কায় পুলিশ পিকেট বসানো হয়েছে কলেজের বাইরে। কলেজের মধ্যে গোলমালের খবর অবশ্য মানেননি অধ্যক্ষ সঞ্জীব সাহা। তাঁর বক্তব্য, ‘‘কলেজে কিছু হয়নি। তবে উত্তেজনা থাকায় পুলিশ ডাকা হয়েছিল।’’

গোলমালের সূত্রপাত কলেজের বাইরেই। সেখানে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের একটি অফিস পুনর্দখলকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়ায়। লোকসভা ভোটের পরে ব্যারাকপুর মহকুমায় শক্তিবৃদ্ধি ঘটেছে বিজেপির। তার শাখা সংগঠনগুলিরও এখন বাড়বাড়ন্ত। তবে ইদানীং জমি দখল করতে মরিয়া ঘাসফুল শিবিরও।

Advertisement

কলেজ-সংলগ্ন টিএমসিপির একটি অফিস কিছু দিন আগে এবিভিপি দখল করে নিয়েছিল বলে অভিযোগ ওঠে। এ দিন সেই অফিসেরই দখল নিতে হাজির হয় টিএমসিপি। এক দল যায় কলেজের অধ্যক্ষকে স্মারকলিপি দিতে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, টিএমসিপির ছেলেরা পার্টি অফিসে ঢুকতেই এবিভিপির সমর্থকদের সঙ্গে বচসা শুরু হয়। মারপিট বাধে। এবিভিপির অভিযোগ, কলেজের মধ্যেও তাঁদের সদস্যদের ধরে পেটাতে শুরু করে টিএমসিপির লোকজন। বিজেপির ছাত্র সংগঠনের নেতা অয়ন দাস জানান, কমনরুমে ঢোকামাত্রই টিএমসিপির জনা পনেরো মহিলা সদস্য তাঁকে ঘিরে ধরে মারতে শুরু করেন। তিনি কলেজের বাইরে বেরিয়ে পুলিশ ডাকতে গেলে ফের মারা হয়। তাঁদের একাধিক মহিলা সদস্যকে মারধর করা হয়েছে বলে অভিযোগ এবিভিপির। এক ছাত্রী জ্ঞান হারান বলেও তাঁর দাবি। ততক্ষণে গোলমাল ছড়িয়ে পড়েছে কলেজের বাইরেও। সেখানেও দু’পক্ষের মারপিট বাধে। কয়েক রাউন্ড গুলি চলে। আতঙ্কিত হয়ে পড়েন আশেপাশের এলাকার মানুষ জন, ব্যবসায়ীরা।

টিএমসিপির ব্যারাকপুর মহকুমার সভাপতি অভিজিৎ দত্ত বলেন, ‘‘লোকসভা ভোটের আগে কলেজে এবিভিপির কোনও অস্তিত্বই ছিল না। ভোটের পরে ওরা আচমকাই আমাদের পার্টি অফিসের দখল করে নেয়। কলেজে বহিরাগতদের ভিড় বাড়ে। কমন রুমে বিজেপি নেতাদের ছবি টাঙিয়ে দেয়। বহিরাগতদের আনাগোনা নিয়ে পড়ুয়াদের আপত্তি ছিল বলেই এ দিন আমরা স্মারকলিপি দিতে গিয়েছিলাম।’’ তাঁরা পুরনো পার্টি অফিসে ঢুকতে গেলে গুলি চালায় বিজেপির লোকজন। কয়েক জনকে মারধরও করেছে। পার্টি অফিস যে টিএমসিপির ছিল, তা মানছেন এবিভিপি নেতা অয়নও। তিনি বলেন, ‘‘ইদানীং আমাদের ছেলেরাই ওখানে বসত। এ দিন টিএমসিপির লোক পার্টি অফিসে ঢুকে মারধর শুরু করে। গুলিও চালায়।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন