খুলল দরজা: দ্বিতীয় দরজা খুলে দাড়িভিট স্কুলে ঢুকলেন মহকুমাশাসক মণীশ মিশ্র। শনিবার। নিজস্ব চিত্র
দেখতে দেখতে ৫১ দিন হয়ে গেল। সে দিনের ঘটনা এখনও ভুলতে পারছি না। তার পর নানা দুশ্চিন্তার মধ্য দিয়ে গিয়েছে। সামনে টেস্ট পরীক্ষা। স্কুলে যে পড়াশোনা চলছিল, সেই ছন্দটা নষ্ট হয়ে গিয়েছে। যা-ই হোক, শেষ পর্যন্ত এ দিন যে স্কুল খুলল, তা যেন ঈশ্বরের আশীর্বাদ। শুক্রবার রাতেও চিন্তা করছিলাম, এর পরেও স্কুল না খুললে পরীক্ষা কী করে দেব। কেউই কিছু পরিষ্কার করে বলছেন না। স্কুল খুলবে বলে তাই এ দিন গিয়েওছিলাম। প্রশাসন আশ্বাস দিয়েছে, সুস্থভাবে স্কুল চলবে। এখন দেখা যাক সোমবার থেকে সব ঠিক হয় কি না।
তবে এ দিনও স্কুলে গিয়ে ২০ সেপ্টেম্বরের কথা বারবার মনে পড়ছিল। শিক্ষক চেয়ে আন্দোলন করতে গিয়ে আমরা দুই দাদাকে হারিয়েছি। আন্দোলন সামলাতে গিয়ে আইনরক্ষকরা নির্মম ব্যবহার করেছে। বাসিন্দারাও সকলে বলছেন পুলিশি অত্যাচারের কথা। তাদের লাঠির আঘাতে ক্ষতের চিহ্ন এখনও রয়েছে আমার ডান পায়ে। তাই এ পরেও সে দিনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি হবে না, সেই নিশ্চয়তা কোথায়।
এ দিন স্কুল খোলা হল ঠিকই। মহকুমাশাসক বললেন, স্কুল নিয়মিত চলবে। কিন্তু স্কুলে সব কিছুই লন্ডভন্ড হয়ে আছে। স্কুল খোলা হল ঠিকই। কিন্তু শিক্ষকের অভাবে পড়াশোনার একটা সমস্যা তো রয়েইছে। সেই অসুবিধা কবে ঠিক হবে জানি না। শিক্ষক চেয়ে যে ছাত্রছাত্রীরা যে আন্দোলন করেছিলাম, স্কুলের সেই সমস্যা কবে মিটবে— তা-ও কেউ জানালেন না। এত বড় ঘঠনার পরও স্কুলে পর্যাপ্ত শিক্ষক মিলবে তো? এই প্রশ্ন কিন্তু রয়েই গিয়েছে। এটা এখনই প্রশাসনের তরফে যদি গুরুত্ব দিয়ে দেখা না হয়, তবে ফের সমস্যা হতে পারে।
আমরা চাই, স্কুল চলুক সুস্থ ভাবে। তেমনই দুই দাদা রাজেশ এবং তাপসকে যারা মারল, তাদের চিহ্নিত করে শাস্তির ব্যবস্থা করা হোক। বিষয়গুলো যথাযথ ভাবে গুরুত্ব দিয়ে মেটানোর চেষ্টা করলে সেটাই আমাদের কাছে হবে বড় পাওনা।