শিক্ষাভ্রমণ সরকারি অফিসে, শুরু বিতর্ক

এত দিন স্কুল থেকে শিক্ষামূলক ভ্রমণে যাওয়া হত নদী, পাহাড়, সমুদ্রের মতো নিসর্গপ্রকৃতির কাছে বা ইতিহাসের দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ জায়গায়। এ বার শিক্ষামূলক ভ্রমণে সরকারি অফিসে যাবে স্কুলপড়ুয়ারা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১১ জানুয়ারি ২০১৯ ০৩:৫৯
Share:

—প্রতীকী ছবি।

এত দিন স্কুল থেকে শিক্ষামূলক ভ্রমণে যাওয়া হত নদী, পাহাড়, সমুদ্রের মতো নিসর্গপ্রকৃতির কাছে বা ইতিহাসের দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ জায়গায়। এ বার শিক্ষামূলক ভ্রমণে সরকারি অফিসে যাবে স্কুলপড়ুয়ারা।

Advertisement

পশ্চিমবঙ্গ সমগ্র শিক্ষা মিশনের একটি নির্দেশিকায় জানানো হয়েছে, সরকারি অফিসে কী ভাবে কাজ হয়, কী ধরনের পরিষেবা মেলে, কী ধরনের কাজের সুযোগ আছে— এ-সবই ঘুরিয়ে দেখাতে হবে স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের। শিক্ষামূলক ভ্রমণে পড়ুয়াদের সরকারি অফিসে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে কেন, ইতিমধ্যেই সেই প্রশ্ন তুলেছে শিক্ষা শিবিরের একাংশ।

শিক্ষাভ্রমণে পড়ুয়াদের কোনও ঐতিহাসিক জায়গা অথবা কোনও দ্রষ্টব্য স্থানে নিয়ে যাওয়াই রেওয়াজ। যাদবপুর বিদ্যাপীঠের প্রধান শিক্ষক পরিমল ভট্টাচার্য জানান, তাঁদের স্কুলের ছাত্রদের সাধারণত বটানিক্যাল গার্ডেন, জাদুঘর, চিড়িয়াখানার মতো জায়গাতেই নিয়ে যাওয়া হয়। যেখানে পড়ুয়ারা বেড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে শিক্ষার উপাদানও খুঁজে পায়। ‘‘সরকারি অফিসে ঘুরে হয়তো এক জন পড়ুয়া বড় হয়ে এমন কোনও অফিসে চাকরি করার স্বপ্ন দেখতে পারে। তাই হয়তো এই উদ্যোগ,’’ বলেন পরিমলবাবু।

Advertisement

এই উদ্যোগকে আদৌ স্বাগত জানাতে পারছেন না প্রেসিডেন্সি কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ অমল মুখোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘সরকারি অফিসে ঘুরে সপ্তম বা অষ্টম শ্রেণির একটি পড়ুয়া কী শিখবে? ওরা কী অফিস ম্যানেজমেন্টের ট্রেনিং নিচ্ছে? ফাইল কোথা থেকে কোথায় যাচ্ছে, তা দেখে পড়ুয়ার কী শিক্ষা হবে?’’

হিন্দু স্কুলের প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক তুষার সামন্তের বক্তব্য, কোন অফিসে ঘুরতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে, সেটা দেখা দরকার। হয়তো এমন কোনও অফিসে নিয়ে যাওয়া হল, যেখানে শুধু কয়েকটা টেবিল-চেয়ার, কিছু কম্পিউটার আর স্তূপাকার ফাইল আছে, এমন অফিসে নিয়ে গিয়ে কোনও লাভ নেই। ‘‘তবে বন বা মৎস্য দফতরে নিয়ে গেলে পড়ুয়ারা শিক্ষার অনেক উপাদান খুঁজে পেতে পারে,’’ বলেন তুষারবাবু। বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির সহ-সাধারণ সম্পাদক স্বপন মণ্ডলের মতে, ‘‘শিক্ষাভ্রমণে সরকার থেকে এত শর্ত না-চাপানোই ভাল ছিল।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন