পাশের হারে ফের জেলাকে টেক্কা পূর্বের

গত কয়েক বছর ধরেই মাধ্যমিকে পাশের হারে শীর্ষে থাকছে পূর্ব মেদিনীপুর। সেই তুলনায় অনেকটাই পিছিয়ে পশ্চিম মেদিনীপুর। এ বারও যেখানে পূর্বের পাশের হার ৯৪ শতাংশ, সেখানে পশ্চিমের পাশের হার ৮৬ শতাংশ। কিন্তু কেন? শিক্ষকদের একাংশ মনে করছেন, এর কারণ এই জেলার মধ্যেই রয়েছে জঙ্গলমহল। ওই এলাকা শিক্ষার দিক থেকেও একটু পিছিয়ে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ২৩ মে ২০১৫ ০২:৫৪
Share:

মার্কশিট হাতে পেয়ে উচ্ছ্বসিত মেদিনীপুর রামকৃষ্ণ মিশনের ছাত্ররা। ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল।

গত কয়েক বছর ধরেই মাধ্যমিকে পাশের হারে শীর্ষে থাকছে পূর্ব মেদিনীপুর। সেই তুলনায় অনেকটাই পিছিয়ে পশ্চিম মেদিনীপুর। এ বারও যেখানে পূর্বের পাশের হার ৯৪ শতাংশ, সেখানে পশ্চিমের পাশের হার ৮৬ শতাংশ। কিন্তু কেন? শিক্ষকদের একাংশ মনে করছেন, এর কারণ এই জেলার মধ্যেই রয়েছে জঙ্গলমহল। ওই এলাকা শিক্ষার দিক থেকেও একটু পিছিয়ে। বেলপাহাড়ি, গোয়ালতোড়, শালবনির মতো ব্লকে এমন প্রত্যন্ত বেশ কয়েকটি এলাকা রয়েছে, যেখানে শিক্ষার আলো এখনও সে ভাবে পৌঁছয়নি। তবে গত কয়েক বছর ধরেই পরিস্থিতির উন্নতি হতে শুরু করেছে। ওই সব এলাকায় শিক্ষার আলো পৌঁছতে শুরু করেছে।

Advertisement

মেদিনীপুর কলেজিয়েট স্কুলের সহ- শিক্ষক মধুসূদন গাঁতাইত বলেন, “কেন পূর্বের থেকে পশ্চিমে পাশের হার কম, এককথায় এটা বলা সত্যিই মুশকিল। এ জেলার কিছু এলাকা পড়াশোনার দিক থেকে একটু পিছিয়ে ছিল। তবে, এখন পরিস্থিতির বদল হচ্ছে। প্রত্যন্ত এলাকাতেও পরিকাঠামো গড়ে উঠছে। ফলে, আগামী দিনে পাশের হার আরও বাড়বে।” জেলার শিক্ষা দফতরের এক আধিকারিকের কথায়, “সার্বিক ভাবে পাশের হারে পশ্চিম একটু পিছিয়ে। তবে শুধুমাত্র ঘাটাল মহকুমার কথাই যদি ধরা হয়, তাহলে দেখা যাবে পাশের হার সেই ক্ষেত্রে বেশি। জঙ্গলমহলে পাশের হার কম থাকে। স্বাভাবিক ভাবে সার্বিক ভাবে যখন পাশের হারের হিসেব করা হয়, তখন সেখানে তার প্রভাব পড়ে।”

অবশ্য জেলায় মেধার অভাব নেই। পশ্চিম মেদিনীপুরের বেশ কয়েকজন ছাত্রছাত্রী এ বারও মাধ্যমিকে ভাল ফল করেছে। জেলার দু’জন ছাত্র রাজ্যের মেধা- তালিকায় জায়গা পেয়েছে। মেদিনীপুরের মতো শহরাঞ্চলেও ফলাফল মোটের উপর ভাল। শিক্ষা দফতর সূত্রে খবর, গত চার বছরে জঙ্গলমহল এলাকার বেশ কিছু স্কুল উচ্চমাধ্যমিকে উন্নীত হয়েছে। এরফলে জঙ্গলমহল এলাকার ছেলেমেয়েরা উপকৃত হয়েছে। তাদের আর পড়াশোনার জন্য দূরের স্কুলে যেতে হয় না। বেশ কিছু স্কুলে বিজ্ঞান বিভাগও চালু রয়েছে।

Advertisement

জেলা পরিষদের শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ শ্যামপদ পাত্রও বলছেন, “আগে অনেকে গ্রামের কাছাকাছি স্কুলে মাধ্যমিক পড়তে পারত না। এখন সেই পরিস্থিতির পরিবর্তন হয়েছে। কাছাকাছি স্কুলে মাধ্যমিক পড়ার সুযোগ মিলছে। এর সুফল আগামী দিনে মিলবে।’’ তাঁর কথায়, “এটা তো ঠিক জঙ্গলমহল এলাকা দীর্ঘদিন ধরে উপেক্ষিত। ওই সব এলাকার সর্বত্র শিক্ষার প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো ছিল না। গত চার বছরে পরিকাঠামোর অনেকটাই উন্নতি হয়েছে।” ঝাড়গ্রামের এক শিক্ষকের কথায়, “পূর্ব মেদিনীপুরে তমলুক, কাঁথির মতো এলাকা রয়েছে। ওই সব এলাকা শিক্ষার দিক থেকে বরাবরই এগিয়ে। পশ্চিমেও ধীরে ধীরে পরিকাঠামোগত সমস্যার সমাধান হচ্ছে। আশা করি, ভবিষ্যতে এ জেলাতেও ভাল ফল হবে। পাশের হারও বাড়বে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন