Subhaprasanna on The Kerala Story

শুভাপ্রসন্ন যে ‘বেলাগাম’ কথা বলেননি সেটা সবাই বুঝল! ‘কেরালা স্টোরি’ রায়ে সরব ‘উল্লসিত’ শিল্পী

‘দ্য কেরালা স্টোরি’ ছবির উপরে রাজ্যের নিষেধাজ্ঞায় সুপ্রিম কোর্টের স্থগিতাদেশের পর আনন্দবাজার অনলাইনের তরফে শুভাপ্রসন্নের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। এই ‘সুপ্রিম’ রায়ে তিনি যে খুশি, তা বুঝিয়ে দেন শিল্পী।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৮ মে ২০২৩ ১৬:৫৮
Share:

‘দ্য কেরালা স্টোরি’র নিষেধাজ্ঞায় সুপ্রিম কোর্টের স্থগিতাদেশের পর মুখ খুললেন শিল্পী শুভাপ্রসন্ন। ফাইল চিত্র।

বাংলায় ‘দ্য কেরালা স্টোরি’ নিষিদ্ধ করেছিল রাজ্য সরকার। সেটা রাজ্যের ‘বেঠিক’ সিদ্ধান্ত বলে মন্তব্য করেছিলেন শাসকদল তৃণমূল ‘ঘনিষ্ঠ’ শিল্পী শুভাপ্রসন্ন। সমালোচনার মুখেও পড়তে হয় তাঁকে। অনেকেই ‘বেলাগাম’ বলেছিলেন শুভাপ্রসন্নকে। এখন সেই ছবির উপরে নিষেধাজ্ঞায় সুপ্রিম কোর্ট স্থগিতাদেশ দিতেই পাল্টা আক্রমণ করলেন শিল্পী। তুললেন সেই তাঁকে ‘বেলাগাম’ বলার প্রসঙ্গ।

Advertisement

রাজ্যের নিষেধাজ্ঞার ১০ দিনের মাথায় বৃহস্পতিবার দেশের শীর্ষ আদালত স্থগিতাদেশ দিল। অর্থাৎ, রাজ্যে এই ছবি দেখায় আপাতত আর কোনও বাধা রইল না। সুপ্রিম কোর্টের স্থগিতাদেশের পর মুখ খুললেন শাসকদলের ‘ঘনিষ্ঠ’ শিল্পী শুভাপ্রসন্ন ভট্টাচার্য। আনন্দবাজার অনলাইনকে জানিয়ে দিলেন, শীর্ষ আদালতের এই আদেশে তিনি খুশি।

‘কেরালা স্টোরি’ নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সিদ্ধান্তে প্রথম থেকেই অসন্তুষ্ট ছিলেন শুভাপ্রসন্ন। সেই অসন্তোষ তিনি গোপনও করেননি। নিষেধাজ্ঞা জারির পরের দিনই আনন্দবাজার অনলাইনকে শিল্পী বলেছিলেন, ‘‘আমি কোনও শিল্পপ্রচেষ্টার বিরোধিতা পছন্দ করি না। এ ক্ষেত্রে আমি সমর্থন করতে পারছি না।’’ শুভার এই বিরোধিতার পর তৃণমূলের তরফে তাঁকে থামানোর চেষ্টাও করা হয়। প্রথমে ফোনে ‘ধমক’ এবং পরে শুভাকে প্রসন্ন করতে শিল্পীর বাড়িতে যান তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। কিন্তু কোনও চেষ্টাতেই চিঁড়ে ভেজেনি।

Advertisement

রাজ্যের নিষেধাজ্ঞায় সুপ্রিম কোর্টের স্থগিতাদেশের পর আনন্দবাজার অনলাইনের তরফে আবার শুভার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তিনি বলেন, ‘‘যে কোনও শিল্পীরই স্বাধীনতা থাকা উচিত। আমাদের মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যের শৃঙ্খলা ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা করেই ছবিটি হয়তো বন্ধ করেছিলেন। কিন্তু আজ সুপ্রিম কোর্ট জানিয়ে দিল, এটা ঠিক নয়। আমি এখনও মনে করি, ছবিটি যাঁরা দেখার, তাঁরা দেখবেনই। যাঁরা বর্জন করার, তাঁরা তা-ই করবেন। এই স্বাধীনতা থাকলে ভাল।’’

‘কেরালা স্টোরি’ নিয়ে তিনি রাজ্যের নিষেধাজ্ঞার বিরোধিতা করার পর অনেকেই শিল্পীর সমালোচনায় মুখর হয়েছিলেন। অনেকে আবার বলেছিলেন, শুভা তৃণমূল বিরোধী কথা বলছেন। সেই প্রশ্নে শিল্পী বলেন, ‘‘আমি কারও বিরোধিতা করিনি। করতেও চাই না। প্রশাসক হিসাবে মুখ্যমন্ত্রীকে অনেক কিছু ভাবতে হয়। তিনি তাঁর নিরিখে যা করার করেছিলেন। আমি আমার নিরিখে যা বলার বলেছি। এখানে আলাদা করে কোনও বিতর্কের কারণ নেই।’’

শুভাপ্রসন্নের ‘কেরালা স্টোরি’ মন্তব্যের পরে তৃণমূলের অনেকেই শিল্পীর সমালোচনা করেছিলেন। কুণাল ঘোষ, মদন মিত্র ছাড়াও যুবনেত্রী সায়নী ঘোষ ‘ব্যক্তিগত’ আক্রমণ করেন। তাঁদের নাম না নিয়েই বৃহস্পতিবার জবাব দিয়েছেন শুভাপ্রসন্ন। তিনি বলেন, ‘‘ওঁদের কারও প্রতিই আমার ব্যক্তিগত কোনও রাগ নেই। সকলের সঙ্গে আমার ভাল সম্পর্ক। সুপ্রিম কোর্টের এই রায়ের পর ওঁরাও বুঝলেন, শুভাপ্রসন্ন খুব একটা বেলাগাম কথা বলেননি।’’

বাঙালি পরিচালক সুদীপ্ত সেনের ‘দ্য কেরালা স্টোরি’ মুক্তি পেয়েছে গত ৫ মে। মুক্তির আগে থেকেই এই ছবিকে ঘিরে দানা বেঁধেছে বিতর্ক। ছবির বিষয়বস্তু রাজ্যে অপ্রীতিকর পরিস্থিতি তৈরি করতে পারে বলে আশঙ্কা ছিল রাজ্য প্রশাসনের। গত ৮ মে মুখ্যমন্ত্রী বাংলায় ছবিটি নিষিদ্ধ ঘোষণা করেন। এ প্রসঙ্গে শিল্পী শুভাপ্রসন্নের যুক্তি ছিল, ‘‘নিষেধাজ্ঞার ফলে ছবিটা বেশি প্রচার পেয়ে গেল! ভাল বা মন্দ বিচার করার দায়িত্ব মানুষের উপরেই ছাড়া উচিত। সেন্সর বোর্ড যখন ছাড় দিয়েছে, তখন প্রদর্শনে বাধা কোথায়?’’ সেই সঙ্গে বলেছিলেন, ‘‘এই সিদ্ধান্তের পিছনে কোনও রাজনৈতিক উদ্দেশ্য রয়েছে কি না জানি না। তবে থাকলেও কোনও সুবিধা মিলবে না বলেই আমার ধারণা।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement