মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মন্ত্রী। নিজস্ব চিত্র
গঙ্গাসাগর মেলায় যাত্রী স্বাচ্ছন্দ্য, নিরাপত্তা আগের চেয়ে অনেক বাড়ানো হয়েছে— গঙ্গাসাগর মেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনে এসে এমনই দাবি করলেন জনস্বাস্থ্য কারিগরিমন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়।
রবিবার কপিল মুনির আশ্রম চত্বরে একটি অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন আরও দুই মন্ত্রী গিয়াসউদ্দিন মোল্লা এবং মন্টুরাম পাখিরা। ছিলেন জেলাশাসক এবং প্রশাসনিক কর্তারাও। পরে তিনি সব পরিবেশ মানিয়ে নিতে পারে এরকম কয়েকটি তীর্থযাত্রীদের ছাউনি ঘুরে দেখেন। খোঁজ নিয়েছেন মুড়িগঙ্গায় ড্রেজিংয়ের অবস্থা নিয়েও।
সুব্রতবাবু বলেন, ‘‘এই সরকার ক্রমাগত মেলার উন্নতির জন্য টাকা, সময় ব্যয় করে চলেছে। মেলা যাতে আরও সুষ্ঠু ভাবে হয় তার জন্য মুখ্যমন্ত্রী নিজে এসে ঘুরে গিয়েছেন।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘আগে কাদার মধ্যে প্রাণ হাতে করে অপরিচ্ছন্ন পরিবেশে আসতে হত তীর্থযাত্রীদের। এখন মেলার গুণগত মান অনেকটাই বেড়েছে।’’ তিনি পরিষ্কার করে দিয়েছেন, মেলার মধ্যে চিহ্নিত রান্নার জায়গার বাইরে আগুন জ্বালানো একেবারেই চলবে না। রবিবার গঙ্গাসাগরে কপিল মুনির আশ্রমের সামনে দফতরের হাই মাস্ট লাইট এবং ফোয়ারা চালু করে মেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনপর্ব সারেন তিনি।
পরে মেলা চত্বরে তীর্থযাত্রীদের ছাউনি দেখতে যান। মেলার চিরাচরিত ২০০ ছাউনির বাইরে এ বার প্রায় ৩০ হাজার বর্গফুট এলাকায় বিশাল ছাউনি তৈরি করা হয়েছে। যেগুলি সবরকমের পরিবেশ সইতে পারবে। জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, বয়স্ক এবং অসুস্থ বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে ওই বিশেষ ছাউনিতে থাকার অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।
এ দিন মেগা কন্ট্রোলরুমও ঘুরে দেখেন তিনি। আমেরিকার ওয়াশিংটন পুলিশের কন্ট্রোলরুমের আদলে তৈরি বিশাল কন্ট্রোল রুম থেকেই বাবুঘাট থেকে গঙ্গাসাগর পর্যন্ত সিসিটিভি নজরদারি চলবে। তাজা ফুটেজ ছাড়াও রেকর্ড রাখা হবে ১০ থেকে ১৭ জানুয়ারি পর্যন্ত। মেলার সময় প্রতিদিন জঞ্জাল সাফাইয়ের জন্য বিশেষ পদক্ষেপ করছে প্রশাসন। ১ হাজার প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত সাফাইকর্মী বাসস্ট্যান্ড, মেলা চত্বর জুড়ে যে কোনও জঞ্জাল পরিষ্কার করে ফেলবে দ্রুত। কোথাও কোনও ময়লা দেখা যাবে না বলেই দাবি করছে প্রশাসন।
এ দিনই সুব্রতবাবু ড্রেজিংয়ের অবস্থা নিয়ে খোঁজ খবর নেন। ভেসেল পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত কর্মীদের দাবি, বড় যাত্রিবাহী ভেসেল রবিবারও পাঁচ ঘণ্টা বন্ধ রাখতে হয়েছে ভাটার সময়। তবে জেলাশাসক ওয়াই রত্নাকর রাও অবশ্য সেই দাবি খারিজ করে আশ্বাস দিয়েছেন, মেলার সময় মাত্র এক ঘণ্টার কিছু কম সময় পরিষেবা ব্যাহত হতে পারে। তাঁর কথায়, ‘‘ররিবার থেকেই কাজে আরও জোর দিতে বলা হয়েছে পলি কাটার দায়িত্বে থাকা কেন্দ্রীয় সংস্থাকে। আগামী দু-তিন দিনে পরিষেবার সময় আরও বেড়ে যাবে।’’