অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পাশ-ফেল প্রথা ফিরিয়ে আনার পক্ষে মত দিয়েছে একাধিক শিক্ষা বিষয়ক কমিটি। সেই মতকে সরাসরি সমর্থনও করেছে পশ্চিমবঙ্গ সহ দেশের অধিকাংশ রাজ্য সরকার। কিন্তু তা সত্ত্বেও পাশ ফেল প্রথা ফিরিয়ে আনার ক্ষেত্রে সচেষ্ট হচ্ছে না কেন্দ্র বা রাজ্য কেউই। এই অভিযোগকে সামনে রেখেই ফের পথে নামতে চলেছে এসইউসিআই ও ছাত্র সংগঠন ডিএসও। বৃহস্পতিবার দুপুরে কলেজ স্কোয়ার থেকে মিছিল করে রানি রাসমনি রোডে আইন অমান্য আন্দোলনের ডাক দিল সংগঠন। তবে পাশ-ফেল প্রথা ফিরিয়ে আনার পক্ষে আন্দোলন চললেও এ রাজ্যের শিক্ষা কমিশন কিন্তু কিছুটা অন্য রকমের মত দিয়েছে।
কী রকম?
শিক্ষা কমিশন সূত্রের খবর, সম্প্রতি কমিশনের বৈঠকে স্থির হয়েছে, পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত কোনও ভাবেই পাশ ফেল প্রথা ফিরিয়ে আনা যাবে না। তার বদলে একটি শিশুকে সঠিক শিক্ষায় শিক্ষিত করতে দায়িত্ব নিতে হবে শিক্ষক, অভিভাবক এবং সংশ্লিষ্ট গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্যদের। রাজ্যের শিক্ষা দফতরে তা সুপারিশ করা হবে বলে জানান কমিশনের চেয়ারম্যান সমীর ব্রহ্মচারী। তিনি জানান, ষষ্ঠ থেকে অষ্টম পর্যন্ত পাশ ফেল থাকছে। তবে তা একটু অন্য রকম। যে কোনও তিনটি বিষয়ে পাশ করলেই পড়ুয়াকে পরের শ্রেণিতে তুলে দেওয়ার সুপারিশ করেছে কমিশন। পরিবর্তে যে সমস্ত বিষয়ে ওই পড়ুয়া নির্ধারিত নম্বর পেল না, সেই সমস্ত বিষয় পরের শ্রেণিতে ফের পরীক্ষা নেওয়া হোক। এবং নবম থেকে অঙ্ক, ইংরাজীর বদলে যদি কোনও পড়ুয়া সঙ্গীত, খেলা, নাচ বা যে কোনও ধরনের সহপাঠক্রমিক কাজে যুক্ত হতে চায় তাহলে তাঁকে সেটা করতে দেওয়া হোক।
এই নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে। সংগঠনের তরফ থেকে দাবি করা হয়েছে কেন্দ্রী সরকার বা শিক্ষা কমিশন, তাদের যে কোনও পদক্ষেপই হোক না কেন রাজ্য সরকার নিজে থেকেই পাশ ফেল প্রথা চালু করতে পারে। কারণ শিক্ষা বিষয়ক যে কোনও সিদ্ধান্তই সংবিধান অনুসারে যৌথ দায়িত্বে পড়ে। কিন্তু সেখানেও রাজ্য সরকারের গড়িমসির পিছনে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য রয়েছে বলে অভিযোগ আন্দোলনকারীদের একাংশের।
তবে অধিকাংশ শিক্ষাবিদদের মতে, যে কোনও শিক্ষায় মূল্যায়নের প্রয়োজন রয়েছে। না হলে সঠিক পদ্ধতিতে শিক্ষা প্রক্রিয়া চলছে কিনা তা বোঝা যাবে না। ফলে তাঁদের অধিকাংশই পাশ ফেল প্রথা ফের পিরিয়ে আনার পক্ষেই মত দিয়েছেন। যে কারণে ডিএসও ওই আন্দোলনের পথে যাবে বলে জানান ডিএসও-র নেতৃত্বরা।