ED Attacked in Sandeshkhali

জঙ্গিযোগের তির সুকান্তের, তৃণমূলের পাল্টা

সন্দেশখালির মতোই বনগাঁয় শঙ্কর আঢ্যের গ্রেফতারির সময়ে যে হামলা হয়েছে, তার জন্য তৃণমূলকেই দায়ী করেছে বিরোধীরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৭ জানুয়ারি ২০২৪ ০৫:২২
Share:

বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। —ফাইল চিত্র।

সন্দেশখালির ঘটনা নিয়ে বিরোধীদের সম্মিলিত আক্রমণের মুখে পড়েছে তৃণমূল।

Advertisement

শনিবার বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের দাবি, ‘‘শাহজাহানের জঙ্গি-যোগ আছে।’’ তাঁর হুমকি, এ রাজ্যে বিজেপি ক্ষমতায় এলে এ সব জায়গায় ‘বুলডোজ়ার’ চলবে। পাল্টা রাজনৈতিক প্রতিহিংসা আর প্ররোচনার অভিযোগে একযোগে বিজেপি ও কেন্দ্রীয় এজেন্সির দিকে আঙুল তুলেছে তৃণমূল কংগ্রেস।

ইডি-র তদন্তকারীদের উপরে হামলার প্রেক্ষিতে বিজেপির রাজ্য সভাপতি বলেন, ‘‘আমাদের কাছে খবর আছে, রোহিঙ্গাদের নিয়ে এসে শাহজাহান শেখ ভেড়ির পাশে অবৈধ কলোনি তৈরি করেছে। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের কাছে সেই খবর আছে। বাংলাদেশের জামাতের সঙ্গে শাহজাহানের ঘনিষ্ঠ যোগ আছে।’’

Advertisement

সন্দেশখালির মতোই বনগাঁয় শঙ্কর আঢ্যের গ্রেফতারির সময়ে যে হামলা হয়েছে, তার জন্য তৃণমূলকেই দায়ী করেছে বিরোধীরা। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর দাবি, “ভাইপোর আপ্ত সহায়ক শুক্রবার রাতেই শাহজাহানকে পালিয়ে যেতে বলেছে। এই ‘বাঘের’ (শাহজাহান শেখ) অবস্থাও ‘বীরভূমের বাঘের’ (অনুব্রত মণ্ডল) মতো হতে চলেছে।” প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী রাজ্যে রাষ্ট্রপতির শাসন চেয়েছেন। তবে তাঁর মন্তব্য, “বিজেপি বড় বড় বাতেলা করছে। চ্যালেঞ্জ করছি, কিছু করে দেখাক। ভিতরে ভিতরে ওদের অন্য কথা চলছে।” সিপিএম নেতা বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যের কথায়, “সব দুর্নীতির সঙ্গে তৃণমূলের মাথারা যুক্ত। রাষ্ট্রপতি শাসনের জন্য পরিকল্পনা করে লোকসভা ভোটে সহানুভূতি পেতে চাইছেন তাঁরা।”

প্রকাশ্যে প্ররোচনার কথা বললেও দলের নাম জড়িয়ে যাওয়ায় চূড়ান্ত অস্বস্তিতে পড়েছে তৃণমূল। এই ঘটনায় দলের ক্ষতি হয়েছে মেনে নিয়ে সাংসদ শতাব্দী রায় এ দিন বলেন, “দল এটা সমর্থন করে না। কাউকে আঘাত করতে বলেওনি।” তবে তাঁর যুক্তি, “১০০ জায়গার মধ্যে দু’টি জায়গায় এই ঘটনা ঘটেছে বলে আইনশৃঙ্খলা খারাপ বলা যায়!” রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর কথায়, “২০২১ সালের ভোটের পর থেকে লাগাতার তৃণমূলের উপরে এজেন্সিগুলিকে লেলিয়ে দেওয়া হচ্ছে।”

দিল্লি, কেরলে এই রকম বাধার ঘটনা, কলকাতা বন্দর এলাকায় দেহরক্ষী-সহ এক পুলিশকর্তার খুনের উদাহরণ টেনে তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, “বিজেপি বা সিপিএমের এ নিয়ে কথা বলার কোনও অধিকার নেই।... ঘটনার পরে ইডি রাজ্য পুলিশের কাছে চিঠি দিয়েছে। আগে কেন তা জানানো হল না?” সেই সঙ্গেই তিনি বলেন, “রোহিঙ্গা, বাংলাদেশে পালিয়ে যাওয়ার গল্প ফাঁদার আগে দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে প্রশ্ন করুন বিজেপি নেতারা। সীমান্ত তাঁর অধীনে।” শ্রীরামপুরের তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় শনিবার জাঙ্গিপাড়ায় বলেন, “দুর্ভাগ্য, যখন দেখছি জ্ঞান এত কম থাকা সত্ত্বেও কী করে কিছু ব্যক্তি সাংবিধানিক পদে গেলেন। তাই তাঁরা বেলাগাম কথা বলে যাচ্ছেন।’’ তৃণমূল সাংসদের ইঙ্গিত রাজ্যপাল এবং হাই কোর্টের এক বিচারপতির দিকে বলেই মনে করছে রাজনৈতিক শিবিরের একাংশ।

শাহজাহানের বিরুদ্ধে সীমান্ত দিয়ে পাচারের অভিযোগ তুলেছে বিজেপি। সুকান্ত বলেন, “নির্বাচন কমিশনকে চিঠি লিখব। বিপুল সংখ্যক কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে ভোট করাতে হবে এখানে। বিশেষত অন্য বুথগুলিতে হার্মাদরা ভর্তি।” তাঁর দাবি, রাজ্যে নিরপেক্ষ ভোট করতে হলে ‘ভাল’ অফিসারদের আনতে হবে।” সুকান্তের খোঁচা, “তৃণমূলের কারও রাশিয়ার বান্ধবী, কেউ বিদেশে টাকা পাঠাচ্ছে, কেউ বিদেশি মুদ্রা বিনিময় করে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন