Suo Moto

স্বতঃপ্রণোদিত মামলা ডিসানের অগ্রিম-কাণ্ডে

কলকাতার ওই বেসরকারি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে অগ্রিম দু’লক্ষ টাকা না দেওয়ায় বৃদ্ধার চিকিৎসা না করার অভিযোগ উঠেছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৩ অগস্ট ২০২০ ০৬:১৮
Share:

ডিসান হাসপাতালের অ্যাকাউন্টে জমা পড়েছিল টাকার এই রসিদটি। —ফাইল চিত্র।

ডিসান হাসপাতালে করোনা আক্রান্ত লায়লা বিবির (৬০) মৃত্যুর ঘটনায় স্বতঃপ্রণোদিত মামলা দায়ের করল স্বাস্থ্য কমিশন। কমিশনের চেয়ারম্যান অসীম বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, এই প্রথমবার কমিশন স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে মামলা দায়ের করল।

Advertisement

কলকাতার ওই বেসরকারি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে অগ্রিম দু’লক্ষ টাকা না দেওয়ায় বৃদ্ধার চিকিৎসা না করার অভিযোগ উঠেছে। তার ফলে পূর্ব মেদিনীপুরের তমলুক শহর সংলগ্ন বাড়খোদা গ্রামের বাসিন্দা লায়লা বিবির অ্যাম্বুল্যান্সেই মৃত্যু হয় বলে অভিযোগ। পার্ক সার্কাস এলাকার একটি নার্সিংহোম থেকে তাঁকে ডিসান হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। এই ঘটনায় গত কয়েকদিনে স্বাস্থ্য দফতর এবং স্বাস্থ্য কমিশন বেসরকারি হাসপাতালের খরচে রাশ টানতে যে সকল অ্যাডভাইজ়রি জারি করেছে, তার যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন উঠে গিয়েছে। বস্তুত, সেই সকল অ্যাডভাইজ়রির সূত্র ধরেই আনন্দপুরের বেসরকারি হাসপাতাল এবং পার্ক সার্কাসের নার্সিংহোমের ভূমিকা খতিয়ে দেখার দাবি উঠেছে।

এ দিন কমিশনের চেয়ারম্যান বলেন, ‘‘যেখানে ওই রোগী ভর্তি ছিলেন এবং যেখানে গিয়ে তিনি ভর্তি হতে পারেননি, দু’টি হাসপাতালের কাছেই আমি আমার দফতরকে বক্তব্য জানতে বলেছি। ৯ অগস্ট পরের শুনানিতে মামলাটি শোনার চেষ্টা করব। এর আগে হোয়াটসঅ্যাপে আমরা দু’টি মামলা নিয়েছি। এই মামলাটি খবরের কাগজ ও পারিপার্শ্বিক খবরের ভিত্তিতে নেওয়া।’’

Advertisement

মৃতার ছেলে নাজিম জানাচ্ছেন, মাত্র দু’দিনের ব্যবধানে তিনি বাবা এবং মাকে হারালেন। সোমবার রাতে মায়ের মৃত্যুর আগেই গত ৮ অগস্ট তাঁর বাবা হানিফ খান মারা গিয়েছেন। নাজিমের কথায়, ‘‘হৃদরোগে অসুস্থ বাবাকে হাওড়ার একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিলাম। সঙ্গে মা-ও ছিলেন। সেখানে চিকিৎসক পরীক্ষার পর কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে গত ৮ অগস্ট দুপুরে বাবা মারা যান। তার পরে মা-ও অসুস্থ হয়ে পড়েন।” মায়ের মৃত্যুতে আর্থিক ক্ষতিপূরণ চাইছেন না তিনি। তাঁর মুখে শুধু একটাই কথা, ‘‘আমরা চাই এই গাফিলতির জন্য যাঁরা দায়ী, তাঁদের শাস্তি হোক। আর মায়ের মতো যেন এ ভাবে বিনা চিকিৎসায় কারও মৃত্যু না হয়।’’ নাজিম খান জানিয়েছেন, তাঁরা আনন্দপুর থানার পাশাপাশি স্বাস্থ্য কমিশনেও অভিযোগ দায়ের করেছেন। আগামী ১৯ অগস্ট এই মামলার শুনানি হতে পারে বলে খবর। স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগম জানিয়েছেন, রোগীর পরিবারের অভিযোগ খতিয়ে দেখতে তদন্তকমিটি গঠন করা হয়েছে।

কলকাতার লেদার কমপ্লেক্স দমকল কেন্দ্রে কর্মরত নাজিম জানান, তাঁদের অনুমতিতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষই মায়ের শেষকৃত্য করেছেন। তিনি এবং তমলুকে তাঁর পরিবারের অন্য সদস্যেরা নিয়ম মেনে বাড়িতে গৃহ পর্যবেক্ষণে রয়েছেন। এঁদের মধ্যে তিন জনের করোনা পরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে বুধবার। ডিসান হাসপাতালে মায়ের চিকিৎসার অগ্রিম হিসেবে যে টাকা জমা দিয়েছিলেন, তা ফেরত দেওয়ার ব্যাপারে হাসপাতালের তরফে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট চাওয়া হয়েছিল। তবে টাকা এখনও অ্যাকাউন্ট-এ ঢোকেনি বলে জানান নাজিম।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement