সাত্তোর মামলায় বারবার আদালতে গরহাজির

নির্যাতিতার স্বামীর বিরুদ্ধে জারি গ্রেফতারি পরোয়ানা

অভিযুক্ত পুলিশকর্মীরা আদালতে হাজির থাকলেও সাক্ষ্যদানে বারবার গরহাজির থাকছেন অভিযোগকারীই। সাত্তোরের বধূ নির্যাতন মামলায় এ বার তাই সেই অভিযোগকারী তথা নির্যাতিতার স্বামীর বিরুদ্ধেই জামিনযোগ্য গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করল আদালত।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

সিউড়ি শেষ আপডেট: ২৫ অগস্ট ২০১৫ ০০:৪০
Share:

সিউড়ি আদালতে হাজিরা দিতে দেখা গেল অভিযুক্ত পুলিশ অফিসার কার্তিকমোহন ঘোষকে। সোমবার তোলা নিজস্ব চিত্র।

অভিযুক্ত পুলিশকর্মীরা আদালতে হাজির থাকলেও সাক্ষ্যদানে বারবার গরহাজির থাকছেন অভিযোগকারীই। সাত্তোরের বধূ নির্যাতন মামলায় এ বার তাই সেই অভিযোগকারী তথা নির্যাতিতার স্বামীর বিরুদ্ধেই জামিনযোগ্য গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করল আদালত। সোমবার সিউড়ির মুখ্য বিচার বিভাগীয় ম্যজিস্ট্রেট ইন্দ্রনীল চট্টোপাধ্যায় এই নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন মামলার সরকারি আইনজীবী কুন্তল চট্টোপাধ্যায়। নির্যাতিতার স্বামীর অবশ্য দাবি, আদালতে হাজিরা দেওয়ার কোনও নোটিস তিনি হাতে পাননি।

Advertisement

প্রসঙ্গত, বোমাবাজিতে অভিযুক্ত এক বিজেপি সমর্থকের খোঁজে সাত্তোরের এক বধূকে তাঁর বাপেরবাড়ি বুদবুদের কলমডাঙায় গিয়ে পুলিশ ও তৃণমূলের নেতাকর্মীরা অত্যাচার করেছিল বলে অভিযোগ উঠেছিল। এক মহিলার উপর এমন নৃশংস ব্যবহারের কথা শুনে শিউড়ে উঠেছিলেন সকলে। তোলপাড় হয়েছিল রাজ্য রাজনীতি। আদালতের নির্দেশে জানুয়ারি মাসের ওই ঘটনার তদন্তভার নেয় সিআইডি। পাড়ুই ও বুদেবুদে দু’টি পৃথক মামলা রুজু হয়। দু’টি অভিযোগ মিলিয়ে তাতে নাম ছিল এসডিপিও (বোলপুর) অম্নানকুসুম ঘোষ, সিআই বোলপুর চন্দ্রশেখর দাস, ওসি এসওজি কার্তিকমোহন ঘোষ, ইলামবাজারের তৎকালীন ওসি শেখ মহম্মদ আলি-সহ পুলিশকর্মী ও পাড়ুই এলাকার কিছু তৃণমূল নেতাকর্মীর। যদিও প্রথম থেকে পুলিশকর্মী ও অধিকারিকদের সে দিনের অভিযানে থাকার কথা মেনে নিলেও পুলিশের বাইরে অন্য কেউ ছিলেন না বলেই দাবি করে এসেছিলেন জেলা পুলিশের শীর্ষ কর্তারা।

গত ১৭ এপ্রিল সিআইডি-র দেওয়া চার্জশিটেও পুলিশ কর্মীদের যুক্ত থাকার কথা বলা হয়েছিল। চার্জশিটে কার্তিকমোহনবাবু ছাড়াও এসওজি-র দুই কনস্টেবল দীপক বাউড়ি, কাশীনাথ দাস এবং ইলামবাজার থানার মহিলা কনস্টেবল আল্পনা লোহারের নাম ছিল। ওই চার জনই ঘটনায় জড়িত বলে সিআইডি চার্জশিটে দাবি করেছিল। সিউড়ি সিজেএম আদালতে অভিযুক্ত চার পুলিশ কর্মীর বিরুদ্ধে গত ৬ মে চার্জও গঠিত হয়েছে। সাক্ষ্যগ্রহণের প্রথম দিন ছিল গত ১৮ মে। যদিও সাক্ষ্য গ্রহণের প্রথম দিন থেকেই অনুপস্থিত ছিলেন নির্যাতিতার স্বামী। এর পরও একাধিকবার সাক্ষ্যগ্রহণের দিন আদালতে ধার্য হয়েছে। চলতি মাসেই আদালতে ওই মামলায় তিনটি দিন ধার্য হয়েছিল। কিন্তু, অভিযোগকারী আসেননি। সোমবারও অভিযুক্ত কার্তিকমোহনবাবুর আইনজীবী সুবীরকুমার সিংহ বারবার আদালতে অভিযোগকারী বা মূল সাক্ষীর অনুপস্থিতির কথা বিচারকের নজরে আনেন। তার পরেই বিচারক নির্যাতিতার স্বামীর বিরুদ্ধে জামিনযোগ্য গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির নির্দেশ দেন।

Advertisement

এ দিন এই প্রসঙ্গ না তুললেও নির্যাতিতার পরিবার অবশ্য দাবি করে এসেছে, সিআইডি-র যে চার্জশিটের উপর ভিত্তি করে মামলা চলছে, সেই তদন্তই পক্ষপাতদুষ্ট। তাঁরা বিষয়টি নিয়ে উচ্চ আদালতেও গিয়েছেন। আইনজীবীদের ধারণা, সে কারণেই হয়তো সাক্ষ্যদান থেকে বিরত থকতে চাইছে ওই পরিবার। যদিও নির্যাতিতার স্বামী বলছেন, ‘‘এ রকম কোনও নোটিসই আমরা পাইনি। নোটিস না আসার জন্যই আদালতে হাজির থাকতে পারিনি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন