Suvendu Adhikari-Kuntal Ghosh

শুভেন্দুর স্বস্তি, কুন্তলেরও, সুপ্রিম কোর্টের দুই নির্দেশে হাই কোর্টের দুই রায় খারিজ ও স্থগিত

কলকাতা হাই কোর্ট বলেছিল, শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা যাবে। সুপ্রিম কোর্ট সেই নির্দেশ খারিজ করে দিয়েছে। অন্য দিকে, কুন্তল ঘোষকেও আপাতত ২৫ লক্ষ টাকা জরিমানা দিতে হচ্ছে না।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৪ অগস্ট ২০২৩ ২২:০৭
Share:

শুভেন্দু অধিকারী (বাঁ দিকে) এবং (ডান দিকে) কুন্তল ঘোষ। —ফাইল চিত্র।

দু’জন দুই শিবিরের। তবে শুক্রবার দু’জনেরই স্বস্তি মিলল সুপ্রিম কোর্টে। তা-ও আবার একই বেঞ্চে। প্রথম জন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। দ্বিতীয় জন নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় আপাতত জেলবন্দি যুব তৃণমূলের বহিষ্কৃত নেতা কুন্তল ঘোষ। ঘটনাচক্রে, শুক্রবারই সুপ্রিম কোর্টে মোদী পদবি অবমাননা মামলায় স্বস্তি পেয়েছেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীও। যদিও তা পৃথক বেঞ্চে।

Advertisement

কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি ইন্দ্রপ্রসন্ন মুখোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ নির্দেশ দিয়েছিল, শুভেন্দুর বিরুদ্ধে যদি কোনও তথ্যপ্রমাণ থাকে, তা হলে এফআইআর দায়ের করা যাবে। সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে শীর্ষ আদালতে গিয়েছিলেন বিরোধী দলনেতা। ২০ জুলাইয়ের সেই নির্দেশ শুক্রবার খারিজ করে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়, বিচারপতি জেবি পারদিওয়ালা এবং বিচারপতি মনোজ মিশ্রের বেঞ্চ কলকাতা হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতিকে অনুরোধ করেন নতুন করে মামলাটি শোনার জন্য।

অন্য দিকে, ইডি-সিবিআইয়ের বিরুদ্ধে কুন্তল যে চাপ দেওয়ার অভিযোগ এনেছিলেন, সেই মামলায় হাই কোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিংহ ২৫ লক্ষ টাকা জরিমানার নির্দেশ দিয়েছিলেন তাঁকে। সুপ্রিম কোর্টের যে বেঞ্চ শুভেন্দুকে স্বস্তির বার্তা শুনিয়েছে, সেই বেঞ্চই শুক্রবার কুন্তলের জরিমানার উপরেও স্থগিতাদেশ দিয়েছে। ডিওয়াই চন্দ্রচূড়, বিচারপতি জেবি পারদিওয়ালা এবং বিচারপতি মনোজ মিশ্রের বেঞ্চ জানায়, নিজের অভিযোগ জেলা বিচারকের কাছে জানাতে পারবেন কুন্তল। একই সঙ্গে কুন্তলকে ২৫ লক্ষ টাকার যে জরিমানার নির্দেশ দিয়েছিলেন কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি সিংহ, সেই জরিমানার উপর স্থগিতাদেশও দিয়েছে শীর্ষ আদালত।

Advertisement

শুভেন্দুর মামলা

গত ২০ জুলাই হাই কোর্টের বিচারপতি মুখোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ বিরোধী দলনেতার বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের সংক্রান্ত যে নির্দেশ দিয়েছিল, তা খারিজ করে দিয়েছে শীর্ষ আদালত। প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ বলেছে, হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতিকে স্বাধীনতা দেওয়া হল, এই মামলার গ্রহণযোগ্যতা বিচার করে উপযুক্ত নির্দেশ দেওয়ার জন্য। হাই কোর্টের ওই নির্দেশের পরেই শুভেন্দুর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয় থানায়। গত ২৫ জুলাই প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগে শুভেন্দুর বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের হয় পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার মোহনপুর থানায়। পঞ্চায়েত ভোটের দিন মোহনপুর থানার রামপুরা এলাকায় ব্যালট বাক্স পুকুরে ফেলে দেওয়ার ঘটনা ঘটেছিল। এফআইআরে দাবি করা হয়, ওই ঘটনায় নন্দীগ্রামের বিধায়কের প্ররোচনা রয়েছে। সুপ্রিম-নির্দেশের পর আপাতত, তা নিয়ে কোনও পদক্ষেপ করতে পারবে না পুলিশ।

কুন্তলের মামলা

গত ২৯ মার্চ শহিদ মিনারের সভা থেকে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি করেছিলেন, হেফাজতে থাকার সময় মদন মিত্র, কুণাল ঘোষকে তাঁর নাম করতে বলেছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। পরের দিন কুন্তলকে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় আদালতে হাজির করানো হয়েছিল। সে দিন কুন্তল দাবি করেন, অভিষেকের নাম বলার জন্য তাঁকে ‘চাপ’ দিচ্ছে ইডি, সিবিআই। এই সংক্রান্ত অভিযোগ জানিয়ে নিম্ন আদালতে চিঠিও দেন কুন্তল। পুলিশি হস্তক্ষেপ চেয়ে চিঠি পাঠান কলকাতার হেস্টিংস থানায়। তার পর কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় তাঁর পর্যবেক্ষণে জানান, প্রয়োজনে সিবিআই বা ইডি অভিষেককে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারবে। সেই একই নির্দেশ বহাল রাখেন হাই কোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিংহও। তার পরে অভিষেককে ডেকেছিল সিবিআই। তৃণমূলের ‘নবজোয়ার’ কর্মসূচির মাঝে নিজাম প্যালেসে তলব করা হয়েছিল অভিষেককে। কর্মসূচি থামিয়ে বাঁকুড়া থেকে কলকাতায় ফিরে হাজিরা দিয়েছিলেন অভিষেক। দীর্ঘ ক্ষণ জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল তাঁকে। পরে তৃণমূল সাংসদকে তলব করেছিল ইডিও। কিন্তু অভিষেক হাজিরা দেননি। পরে এই সংক্রান্ত মামলায় কুন্তলকে ২৫ লক্ষ টাকা জরিমানা করেছিলেন বিচারপতি সিংহ। সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন কুন্তল। আদালত এ-ও বলেছে, নিজের অভিযোগ জেলা বিচারকের কাছে জানাতে পারবেন কুন্তল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন