Police Neutrality in question

পুলিশ আধিকারিকদের ভাষণের ভিডিয়ো-সহ জ্ঞানেশ কুমারকে চিঠি শুভেন্দুর, পুলিশ সংগঠনকে ভোটের কাজে না-রাখার দাবি

পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ ওয়েলফেয়ার কমিটি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ক্ষমতায় ফেরানোর লক্ষ‍্যে কাজ করতে পুলিশকর্মীদের সরাসরি নির্দেশ দিচ্ছে বলে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর অভিযোগ। ওই সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত কারওকে ভোটের কাজে রাখা যাবে না বলে দাবি জানিয়ে কমিশনকে চিঠি দিলেন তিনি।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৫ নভেম্বর ২০২৫ ১২:৫২
Share:

গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ ওয়েলফেয়ার কমিটির বিরুদ্ধে দেশের মুখ‍্য নির্বাচন কমিশনারকে চিঠি দিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। নির্দিষ্ট তিন পুলিশ আধিকারিকের নাম করে এবং তাঁদের ভাষণের ভিডিয়ো পাঠিয়ে ওই অভিযোগ জানিয়েছেন তিনি। চিঠিতে বিরোধী দলনেতার দাবি, পুলিশ ওয়েলফেয়ার কমিটির সঙ্গে যুক্ত কাউকে যেন আগামী বিধানসভা নির্বাচনে ভোট সংক্রান্ত কোনও কাজে লাগানো না হয়।

Advertisement

সম্প্রতি পুলিশকর্মীদের ওই সংগঠনের আয়োজনে পূর্ব মেদিনীপুরের দিঘায় মহিলা পুলিশকর্মীদের একটি রাজ‍্য স্তরের সম্মেলন হয়েছে। সেই সম্মেলনে কলকাতা পুলিশের ডেপুটি কমিশনার পদমর্যাদার আধিকারিক তথা মুখ‍্যমন্ত্রীর ‘আস্থাভাজন’ হিসাবে পরিচিত শান্তনু সিংহ বিশ্বাস যে ভাষণ দিয়েছেন, শুভেন্দু মঙ্গলবার তার ভিডিয়ো সাংবাদিক বৈঠক ডেকে দেখিয়েছেন। বিজিতাশ্ব রাউত নামে এক ইন্সপেক্টর এবং রুহুল আমিন আলি শাহ নামে এক সাব-ইন্সপেক্টরের ভাষণের অংশবিশেষও তিনি দেখান। শুভেন্দু জানান, ওই ভিডিয়ো দেশের মুখ‍্য নির্বাচন কমিশনার জ্ঞানেশ কুমারকে পাঠানো হয়েছে। মঙ্গলবার সকালেই ইমেল করে চিঠি ও ভিডিয়ো পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন। সাংবাদিক বৈঠকে উল্লেখ না করলেও চিঠিতে রয়েছে পূর্ব মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার সৌম্যদীপ ভট্টাচার্যের নামও।

অভিযোগ প্রসঙ্গে তাঁদের বক্তব্য জানার জন্য তিন আধিকারিকের সঙ্গেই যোগাযোগ করেছিল আনন্দবাজার ডট কম। শান্তনু ফোন ধরেছিলেন। তাঁকে বিষয়টি বলার পরেই ফোনটি কেটে যায়। তার পরে আর তাঁর ফোনে যোগাযোগ করা যায়নি। বিজিতাশ্বের ফোনটি ধরে অন্য এক জন জানান, তিনি একটি বৈঠকে ব্যস্ত রয়েছেন। কথা বলতে পারবেন না। রুহুলের ফোন বারংবার ‘ভয়েসমেল’-এ চলে যাচ্ছে। তাঁর সঙ্গে ওই বিষয়ে কথা বলতে চেয়ে সেখানে বার্তা দেওয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্ট তিন আধিকারিকের বক্তব্য জানা গেলে তা এই প্রতিবেদনে সংযুক্ত করা হবে।

Advertisement

শুভেন্দু দাবি করেছেন, পুলিশ ওয়েলফেয়ার কমিটি কোনও ‘রাজনৈতিক সংগঠন’ নয়। সেই কারণেই তারা ‘রাজনৈতিক’ কথা বলতে পারে না। তাঁর কথায়, ‘‘সরকার লিখিত ভাবে এই সংগঠন তৈরি করে দিয়েছিল।’’ বিরোধী দলনেতার ব‍্যাখ‍্যা, যে হেতু পুলিশ কর্মীরা সরাসরি রাজনৈতিক সংগঠন করতে পারেন না, সে হেতু সরকারি উদ‍্যোগেই এই সংগঠন গড়ে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সেই সংগঠনের মঞ্চ থেকে ভাষণ দিয়ে এখন পুলিশকর্তারা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারকে টিকিয়ে রাখার লক্ষ‍্যে কাজ করার জন‍্য পুলিশকর্মীদের নির্দেশ দিচ্ছেন। বিরোধী দলনেতা বলেন, ‘‘ফেব্রুয়ারি মাসে নির্বাচনী আচরণবিধি কার্যকর হয়ে যাবে বলে ধরে নিতে পারি। তখন থেকে শুরু করে ভোট সম্পন্ন হওয়া পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ ওয়েলফেয়ার কমিটির সঙ্গে যুক্ত কেউ যাতে ভোটের কাজের সঙ্গে প্রত‍্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে না থাকে, আমরা তা কমিশনকে নিশ্চিত করতে বলেছি।’’ তাঁর বক্তব্য, কমিশন যাতে এখন থেকেই বিকল্প ব‍্যবস্থার কথা ভেবে নিতে পারে এবং তার প্রস্তুতি নিতে পারে, সে কথা মাথায় রেখে আদর্শ আচরণবিধি কার্যকর হওয়ার তিন মাস আগেই তিনি কমিশনকে ওই বিষয়ে অবহিত করে রাখলেন। শুভেন্দুর কথায়, ‘’কেন্দ্রীয় বাহিনী সব কাজ পারবে না। কিছু কাজ পুলিশকেই করতে হয়। সেই কাজ অন‍্য রাজ‍্য থেকে পুলিশ এনে করাবে নাকি অন‍্য কোনও ব‍্যবস্থা করবে, তা নির্বাচন কমিশন এখন থেকে ভেবে নিক।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement