শাসানি: হুমকির সেই ফুটেজ। —ফাইল চিত্র।
‘‘মার! মার! মার!
এমন মারব না। বাইরে। খুঁজে পাবে না!
বল ভুল হয়েছে! বল!
মারব কিন্তু। বাইরে বেরোতে দেব না।
আরে মার না!’’
একটি ভিডিও-য় নাগাড়ে এমনই আস্ফালন করে চলেছেন দুই যুবক। আর তাঁদের সামনে কম্পিউটার নিয়ে চুপ করে বসে আছেন এক মাঝবয়সি ভদ্রলোক। হুমকি আর ধমকধামকের মধ্যেই আচমকা ডান দিক থেকে এগিয়ে আসা একটি হাত উল্টে দিল কম্পিউটারের কি-বোর্ড। মাঝবয়সি ভদ্রলোক তবু চুপ করে বসে।
৬ ফেব্রুয়ারি রাজাবাজার সায়েন্স কলেজের কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষক ভাস্কর দাসকে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ নেতা গৌরব দত্ত মুস্তাফি সমানে চড়থাপ্পড় মেরেছেন, নানা ভাবে শারীরিক নিগ্রহ করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। ভাস্করবাবুর অভিযোগ, ফেল করা পড়ুয়াদের পাশ করিয়ে দেওয়ার দাবি ঘিরে প্রথমে বাদানুবাদ হয়। তার পরেই আচমকা চড়। একটি নয়, পরপর কয়েকটি। ভিডিও দেখাচ্ছে, গৌরব এক সঙ্গীকে নিয়ে সে-দিন চড়াও হয়েছিলেন ভাস্করবাবুর উপরে।
ভাস্করবাবুর দাবি, এই সেই ভিডিও। যাতে দেখা যাচ্ছে, তিনি বসে আছেন নিজের দফতরে। আর গৌরব এবং তাঁর সঙ্গী তাঁকে সমানে শাসিয়ে চলেছেন। তিনি বলেন, ‘‘ভিডিও-য় যা দেখা যাচ্ছে, তার আগেই গৌরব তাঁর বাঁ গালে সপাটে চড় মারেন। শাসানি চলতে চলতেই মারেন আরও বেশ কয়েকটি চড়।’’
আরও পড়ুন: কোর্টে উঠতেই মামলা তুলে নিলেন ভারতী
গত মঙ্গলবারের ওই শিক্ষক-নিগ্রহের ঘটনা নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়। ভাস্করবাবু বৃহস্পতিবার আমহার্স্ট থানায় গৌরবের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। জামিন-অযোগ্য ধারায় অভিযোগ আনা সত্ত্বেও ওই ছাত্রনেতাকে গ্রেফতার করা হয়নি। আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন পেয়ে যান গৌরব। শুক্রবার কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেটে বিষয়টি ওঠার কথা। তার আগে, বৃহস্পতিবার এই বিষয়ে রাজাবাজার সায়েন্স কলেজে প্রতিবাদসভার ডাক দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সংগঠন কুটা।