ছাত্রস্বার্থ অটুট রেখে তবেই ছুটি পিতৃত্বের

একটি সন্তানের জন্য তার ১৮ বছর বয়সের মধ্যে ৩০ দিনের ওই ছুটি নিতে পারবেন শিক্ষক-বাবা বা শিক্ষাকর্মী-বাবা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৮ জানুয়ারি ২০১৯ ০৫:৩০
Share:

প্রতীকী ছবি।

সন্তান প্রতিপালনের জন্য সরকারি ও সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুলের শিক্ষিকা ও মহিলা শিক্ষাকর্মীরা ছুটি পান। এ বার পিতৃত্বকালীন ছুটি পাবেন ওই ধরনের সব স্কুলের শিক্ষক এবং শিক্ষাকর্মীরাও। একটি সন্তানের জন্য তার ১৮ বছর বয়সের মধ্যে ৩০ দিনের ওই ছুটি নিতে পারবেন শিক্ষক-বাবা বা শিক্ষাকর্মী-বাবা।

Advertisement

তবে পাওনা বলেই হুটহাট পিতৃত্বকালীন ছুটি নেওয়া চলবে না। দেখতে হবে কর্মস্থলের স্বার্থ অর্থাৎ ছাত্রছাত্রীদের স্বার্থ। সন্তান লালনের জন্য শিক্ষক, শিক্ষাকর্মীদের ছুটি নিতে হবে বেঁধে দেওয়া নিয়মবিধি মেনে, স্কুলের সুবিধা-অসুবিধা দেখে। নির্দিষ্ট বিধি ছাড়াও পড়ুয়াদের প্রতি কর্তব্যবোধ সম্পর্কে সজাগ থাকতে হবে। এটা বিশেষ ভাবে মেনে চলতে বলা হচ্ছে স্কুলে পঠনপাঠন অব্যাহত রাখার তাগিদেই। নিয়মবিধি মেনে চলতে বলা হচ্ছে শিক্ষিকা এবং মহিলা শিক্ষাকর্মীদেরও। কেননা মাতৃত্বকালীন ছুটি চালু থাকলেও তা নেওয়ার পদ্ধতিকে ঘিরে নানা ধরনের জটিলতার সৃষ্টি হচ্ছিল। তাই এ বার নতুন করে নিয়ম বেঁধে দিল স্কুলশিক্ষা দফতর। বিকাশ ভবনে শিক্ষা দফতরের জারি করা বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, এর পর থেকে নির্দিষ্ট সূচি মেনে ছুটি দিতে হবে স্কুলগুলিকে। দেখতে হবে, স্কুলে পঠনপাঠন যেন কোনও ভাবেই ক্ষতিগ্রস্ত না-হয়। সন্তান লালনের জন্য ছুটি নেওয়ার ক্ষেত্রে শিক্ষক ও শিক্ষিকা, উভয় পক্ষকেই সেই সূচি মেনে চলতে হবে।

সংখ্য়ালঘু দফতর এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, মাদ্রাসার সঙ্গে যুক্ত শিক্ষা সম্প্রসারক, মাদ্রাসা শিক্ষা কেন্দ্র, শিশু শিক্ষা কেন্দ্র, মাধ্যমিক শিক্ষা কেন্দ্রের শিক্ষিকা ও মহিলা শিক্ষাকর্মীদের জন্যও মাতৃত্বকালীন ছুটি চালু হল। তাঁরা ছু’টি পাবেন ছ’মাস।

Advertisement

সন্তান লালনের ছুটি পাওয়া যাবে পূর্ণ বেতন-সহ। রাজ্যের অর্থ দফতর পিতৃত্বকালীন ছুটির ‘অর্ডার’ বা নির্দেশ দিয়েছিল ২০১৬ সালে ফেব্রুয়ারিতে। বেশ কয়েকটি সরকারি দফতরে এই ছুটি চালুও হয়ে গিয়েছে। কিন্তু স্কুলশিক্ষা দফতর এত দিন তেমন কোনও নির্দেশ দেয়নি। সম্প্রতি বিকাশ ভবন বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানিয়েছে, শিক্ষক ও পুরুষ শিক্ষাকর্মীদের পিতৃত্বকালীন ছুটি হবে সর্বাধিক ৩০ দিনের। ওই ছুটি পাওয়ার জন্য সন্তানের বয়স ১৮ বছরের মধ্য়ে হতে হবে। সন্তান দুর্ঘটনায় আহত হয়ে চিকিৎসাধীন থাকলেও পাওয়া যাবে এই ছুটি। তবে স্কুলের স্বার্থ দেখেই সেই ছুটির জন্য আবেদন করতে হবে। শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের পিতৃত্বকালীন ছুটি মঞ্জুর করার জন্য আগেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছিল। এই ছুটির সূচি তৈরি করতে বলা হয়েছে।’’

পিতৃত্বকালীন ছুটিকে স্বাগত জানিয়েছেন কলেজিয়াম অব অ্যাসিস্ট্যান্ট হেডমাস্টার্স অ্যান্ড অ্যাসিস্ট্যান্ট হেডমিস্ট্রেসেসের সম্পাদক সৌদীপ্ত দাস এবং বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির সহ-সাধারণ সম্পাদক স্বপন মণ্ডল। তবে শিক্ষা শিবিরের বক্তব্য, স্কুলে একই সময়ে একাধিক শিক্ষক পিতৃত্বকালীন ছুটি নিলে বা একাধিক শিক্ষিকা সন্তান প্রতিপালনের ছুটি একসঙ্গে নিলে পঠনপাঠনে বিঘ্ন ঘটতে পারে। তাই এই ধরনের ছুটির জন্য বছরের প্রথমেই একটি সুপরিকল্পিত সূচি তৈরি করা প্রয়োজন বলে মনে করেন পশ্চিমবঙ্গ শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক নবকুমার কর্মকার।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন