‘প্রশাসনের’ নিষেধ, বেতন হল না দাড়িভিটে

ওই ব্যাঙ্কের ইসলামপুর শাখার ম্যানেজার অনাথবন্ধু সাহা বলেন, ‘‘প্রশাসন থেকে নির্দেশ এসেছে। সেই জন্যই ওই শিক্ষক শিক্ষিকাদের বেতনের টাকা তুলতে দেওয়া যায়নি।’’

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ইসলামপুর শেষ আপডেট: ০২ নভেম্বর ২০১৮ ০৪:৩৮
Share:

ইসলামপুরের দাড়িভিট স্কুল।—নিজস্ব চিত্র।

মাস পয়লায় বেতন তুলতে গিয়ে দাড়িভিট স্কুলের শিক্ষক শিক্ষিকারা বৃহস্পতিবার শুনলেন, অক্টোবরের মাইনের টাকা অ্যাকাউন্টে পড়েছে কিন্তু সে টাকা তোলা যাবে না। কেন তাঁরা টাকা তুলতে পারবেন না, জিজ্ঞাসা করলে ব্যাঙ্ক থেকে উত্তর পেলেন, প্রশাসন থেকে নিষেধ রয়েছে। কিন্তু প্রশাসন বলতে কে বা কোন দফতর, তার কোনও সদুত্তর সারা দিনে পাওয়া যায়নি।

Advertisement

দাড়িভিট স্কুলের ১৬ জন শিক্ষক শিক্ষিকার বেতনের অ্যাকাউন্ট রয়েছে রায়গঞ্জ সেন্ট্রাল কো-অপারেটিভ ব্যাঙ্কের ইসলামপুর শাখায়। ওই ব্যাঙ্কের এটিএম থেকেও তাঁরা টাকা তুলতে পারেননি। বেতনের টাকা পড়ার আগে যত টাকা অ্যাকাউন্টে ছিল, শুধু সেইটুকুই তুলতে দেওয়া হচ্ছে। তার বেশি টাকা চাইলেই বলা হচ্ছে, সে টাকা অ্যাকাউন্টে নেই।

ওই ব্যাঙ্কের ইসলামপুর শাখার ম্যানেজার অনাথবন্ধু সাহা বলেন, ‘‘প্রশাসন থেকে নির্দেশ এসেছে। সেই জন্যই ওই শিক্ষক শিক্ষিকাদের বেতনের টাকা তুলতে দেওয়া যায়নি।’’ কিন্তু প্রশাসন বলতে তিনি ঠিক কাকে বা কোন দফতরকে বোঝাচ্ছেন, তা বলতে চাননি। উত্তর দিনাজপুরের জেলাশাসক অরবিন্দ কুমার মিনা বলেন, ‘‘বিষয়টি আমার জানা নেই। পুরো বিষয়টি স্কুল শিক্ষা দফতরই দেখছে।’’ কিন্তু জেলার ভারপ্রাপ্ত স্কুল পরিদর্শক সুজিতকুমার মাইতির এই প্রসঙ্গে কোনও মন্তব্য জানা যায়নি। তাঁর মোবাইল বেজে গিয়েছে। স্কুল পরিদর্শক দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, তিনি কলকাতায় গিয়েছেন। তাঁর সঙ্গে গিয়েছেন স্কুলের সহকারী প্রধান শিক্ষক, স্কুল পরিচালন কমিটির সভাপতি-সহ চার জন।

Advertisement

আরও পড়ুন: ছয় মাসেও সুপারিশ আসবে কি না সন্দেহ

দাড়িভিট স্কুলের শিক্ষক শিক্ষিকাদের সম্প্রতি শো-কজ করেছেন স্কুল পরিদর্শক। তাতে জানতে চাওয়া হচ্ছে, দাড়িভিট কাণ্ডের পর থেকে পুজোর ছুটি পর্যন্ত তাঁরা কেন স্কুলে যাননি। ধর্মঘটের দিন অনুপস্থিত থাকার কারণও জানতে চাওয়া হয়েছে। যথার্থ কারণ দর্শাতে না পারলে বেতন কাটার কথাও জানানো হয়েছিল। তবে শিক্ষক শিক্ষিকাদের একাংশের দাবি, ঘটনার পর থেকে স্কুল যাওয়ার রীতিমতো চেষ্টা করেছেন তাঁরা। ২৬ সেপ্টেম্বর ধর্মঘটের দিনও স্কুলে গিয়েছিলেন। বন্‌ধ সমর্থকেরা তাঁদের আটকে দেন। এক শিক্ষক বলেন, ‘‘ বেতন কেন বন্ধ করা হল, তা বুঝতে পারছি না।’’

শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বক্তব্য, ‘‘বিষয়টি জানি না। না জেনে মন্তব্য করব না।’’ ইসলামপুরের বিধায়ক কানাইয়ালাল আগরওয়ালও বলেন, ‘‘প্রশাসনিক বিষয়। তা নিয়ে কিছু বলতে পারব না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন