নৌকা আর বাইকেই চলাচল চোলাইয়ের

জেলা পুলিশের দাবি, কালনায় বেআইনি মদের ভাটি নেই। কিন্তু তার পরেও শহরের ঠেকে বা ‘ঠিক লোক’কে ফোন করলেই ‘পেপসি’ (‌চোলাইয়ের পাউচ) পৌঁছে যায়, এমনই অভিজ্ঞতা অনেকের। এক পুলিশ কর্তার বক্তব্য, চোলাইয়ের বেশিটাই আসে হুগলির বাকুলিয়া-কুলেপাড়া এলাকার গোপালবাটি গ্রাম থেকে

Advertisement

কেদারনাথ ভট্টাচার্য

কালনা শেষ আপডেট: ২৯ নভেম্বর ২০১৮ ০৪:১৭
Share:

চোলাই পাচার হওয়ার পথ।

সাইকেলে নাইলনের ব্যাগ ঝুলিয়ে ইটভাটার আশপাশে দেখা যায় তাদের। দশ, কুড়ি টাকায় সেই ব্যাগে রাখা চোলাই মদের ‘পাউচ’ কেনেন শ্রমিকেরা। রাত বা ভোরে পূর্ব বর্ধমানের কালনা থেকে নৌকায় চোলাইয়ের ড্রাম নিয়েও ভাগীরথী পেরোয় কিছু লোক। পুলিশ সূত্রের দাবি, এই ‘ক্যারিয়ার’দের হাত ধরেই চলাচল করে চোলাই।

Advertisement

জেলা পুলিশের দাবি, কালনায় বেআইনি মদের ভাটি নেই। কিন্তু তার পরেও শহরের ঠেকে বা ‘ঠিক লোক’কে ফোন করলেই ‘পেপসি’ (‌চোলাইয়ের পাউচ) পৌঁছে যায়, এমনই অভিজ্ঞতা অনেকের। এক পুলিশ কর্তার বক্তব্য, চোলাইয়ের বেশিটাই আসে হুগলির বাকুলিয়া-কুলেপাড়া এলাকার গোপালবাটি গ্রাম থেকে। হুগলি-পাণ্ডুয়া রোড ধরে এসটিকেকে রোড পেরিয়ে পূর্ব সাহাপুর হয়ে শাসপুর, হাঁসপুকুর, কুলিয়াদহের মতো গ্রামে তা ছড়ায়। ড্রাম বা কাচের জারে চোলাই ভরে গোপালবাটি থেকে বাসে, সাইকেলে বা মোটরবাইকে ‘ক্যারিয়ার’রা পৌঁছে যায় আট কিলোমিটার দূরের কালনা শহরে। চোলাইয়ের পাইকারি দাম লিটার প্রতি ৪৯ টাকা। খুচরো কিনলে তা দাঁড়ায় ৭১ টাকায়।

নদিয়ার শান্তিপুরের চৌধুরীপাড়ায় বিষমদ খেয়ে ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে। মৃতদের পরিবারের একাংশের দাবি, কালনার হাঁসপুকুর থেকে চোলাই যেত তাঁদের গ্রামে। যদিও পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘হাঁসপুকুরে এসডিপিও (কালনা) গিয়েছিলেন। তল্লাশিতে কিছু মেলেনি।’’ জেলা পুলিশের একাংশের বক্তব্য, আশপাশের এলাকায় চাহিদা মিটিয়ে তবেই পাচার হয় চোলাই। ফলে বিষমদ থাকলে কালনাতেও কেউ না কেউ অসুস্থ হতেন। সুতরাং শান্তিপুরে যাওয়া চোলাই কালনার নয় বলেই মনে হচ্ছে। আবগারি দফতরের জেলা সুপারিন্টেন্ডেন্ট গৌতন পাখরিন বলেন, ‘‘কালনার যে গ্রামের নাম উঠছে, সেখানে মদ তৈরি বা পাচার করার অভিযোগ আগে ওঠেনি।’’

Advertisement

আরও পড়ুন: বিষমদের হানা এ বার শান্তিপুরে, মৃত ১০

তবে শাসপুর শীতলাতলা, হাঁসপুকুর, মোল্লাপাড়া, বৈদ্যপুর রেলগেটের আশেপাশে সন্ধ্যার পরে চোখে পড়ে ‘ঢোলাফোলা’দের (একটানা চোলাই খেলে চোখ-মুখ ফুলে যায় বলে এই নাম)। স্থানীয়দের দাবি, দাঁতনকাঠিতলা, সুরেরপাড়, বৈদ্যপুর মোড়ের ইটভাটায় সকালে চলে এই কারবার। কারবারিদের অন্যতম জয়দেব সাঁতরা। যিনি এ দিন নদিয়া পুলিশের হাতে ধরা পড়েছেন।

আরও পড়ুন: কান ধরছি, আর ওই বিষ খাব না

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন