কম্যান্ডোরা নামলেন, থামল জ্বলন্ত ভেসেল

পশ্চিমবঙ্গের নৌসেনার ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক কমোডর সুপ্রভকুমার দে জানান, শনিবার সকাল সাড়ে আটটা নাগাদ প্রথমে তিন জন মেরিন কম্যান্ডো (মার্কোস) হেলিকপ্টার থেকে দড়ি বেয়ে ভেসেলের ডেকে নামেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৭ জুন ২০১৮ ০৫:১৬
Share:

কলকাতা বন্দরে আসার পথেই আগুন লেগে যায় কন্টেনার বোঝাই ভেসেলে। ছবি: পিটিআই।

জ্বলন্ত ভেসেলের ভিন্‌ দেশ পাড়ি ঠেকাতে শেষমেশ কম্যান্ডো ‘অপারেশন’-এর পথ বাছল নৌসেনা। তার ফলে মাঝসমুদ্রে জ্বলন্ত ভেসেল ঘিরে যে আশঙ্কা তৈরি হয়েছিল, তাতে আপাতত দাঁড়ি পড়ল।

Advertisement

পশ্চিমবঙ্গের নৌসেনার ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক কমোডর সুপ্রভকুমার দে জানান, শনিবার সকাল সাড়ে আটটা নাগাদ প্রথমে তিন জন মেরিন কম্যান্ডো (মার্কোস) হেলিকপ্টার থেকে দড়ি বেয়ে ভেসেলের ডেকে নামেন। তার পরে ভেসেলের তিন কর্মীকেও নামিয়ে আনা হয়। বাংলাদেশ জলসীমান্ত থেকে ২২ নটিক্যাল মাইল আগে ভেসেলটিকে নোঙর করা হয়েছে। রাত থেকে ভেসেল মালিক সংস্থার নিযুক্ত আগুন নেভানোর কাজ শুরু করবে।

সুপ্রভবাবু বলেন, ‘‘কম্যান্ডো ও ভেসেলের কর্মীরা ইঞ্জিন চালু করার চেষ্টা করছিলেন। সে সময় কন্টেনারে চারটি বিস্ফোরণ হয়।’’ নৌসেনার খবর, নোঙরের মূল কাজটি কম্যান্ডোরা করেছেন। ভেসেলের কোথায় কী রয়েছে, তা চেনানোর জন্য তিন জন কর্মীকে নেওয়া হয়েছিল। তবে বিস্ফোরণের পর ওই কন্টেনারে থাকা রাসায়নিক নিয়ে ধন্দ তৈরি হয়েছে। কী ধরনের রাসায়নিক ছিল, তা স্পষ্ট করেনি নৌসেনা বা ভেসেল মালিক সংস্থা। ভেসেল থেকে এখনও সাগরে তেল ছড়ায়নি বলে নৌসেনা জানিয়েছে। ভেসেলের কোনও ত্রুটি ছিল না বলে দাবি করে মালিক সংস্থার প্রেসিডেন্ট ক্যাপ্টেন রাকেশ প্রসাদ বলেন, ‘‘বিপজ্জনক পণ্য ছিল। কন্টেনারে ঠিক কী ছিল এবং কী ভাবে আগুন লাগল, তা নিয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণও এখনই বলা সম্ভব নয়।’’

Advertisement

বুধবার রাতে স্যান্ড হেডের কাছে কন্টেনার বোঝাই ভেসেলটিতে আগুন লাগে। খবর পেয়ে উপকূলরক্ষী বাহিনী গিয়ে ২২ জন কর্মীকে উদ্ধার করে। কিন্তু আগুন নেভানো যায়নি। জ্বলন্ত জাহাজটি ভাসতে ভাসতে শনিবার সকাল পর্যন্ত বাংলাদেশের দিকে প্রায় ২৫ নটিক্যাল মাইল এগিয়েছিল। কমোডর সুপ্রভকুমার বলেন, ‘‘এক দিকে সুন্দরবন, অন্য দিকে বাংলাদেশ সীমান্ত। তা ছাড়া জ্বলন্ত জাহাজ এ ভাবে ভাসতে থাকলে অন্য জাহাজের পথ আটকে যেতে পারত।’’

এই পরিস্থিতিতে শুক্রবার বিকেলে নৌসেনা, উপকূলরক্ষী বাহিনী, কলকাতা বন্দর এবং ভেসেলের মালিক সংস্থা বৈঠক করে কম্যান্ডো ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নেন। এ দিন সকাল সওয়া সাতটা নাগাদ কলাইকুণ্ডা থেকে কম্যান্ডোদের নিয়ে নৌসেনার একটি ‘সি কিং’ হেলিকপ্টার সাগরের দিকে উড়ে যায়। পৌনে দশটা নাগাদ অপারেশন শেষ করে ঘণ্টাখানেকের মধ্যে কলাইকুণ্ডায় ফেরেন কম্যান্ডোরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন