গর্ভপাতের অনুমতি পেলেন দম্পতি। প্রতীকী ছবি।
লড়াই জেতার আনন্দ জৌলুসহীন হয়ে যাচ্ছে হারানোর বেদনায়। পাওনা বলতে শুধু স্বস্তি।
সোমবার সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পরে এমনই প্রতিক্রিয়া বারাসতের দম্পতি ও পরিবারের। জটিল রোগে ভুগছে গর্ভস্থ ভ্রূণ। ভূমিষ্ঠ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই করতে হবে কমপক্ষে দু’টি জটিল অস্ত্রোপচার। তার পরেও থেকে যাবে নানা সমস্যা। এ কথা জানার পরেই প্রায় দেড় মাস আগে সরকারি নিয়মকে চ্যালেঞ্জ করে ভ্রূণ নষ্ট করতে চেয়ে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেছিলেন ওঁরা। সোমবার কোর্ট তাতে সায় দিয়েছে। মামলা জিতে এক দিকে যেমন স্বস্তি মিলেছে, তেমনই ভূমিষ্ঠ হওয়ার আগেই পেটের সন্তানকে ফিরিয়ে দেওয়ার যন্ত্রণাও কুরে খাচ্ছে ওঁদের।
এ দিন রায় জানার পরেই বারাসতে ওই দম্পতির বাড়িতে সংবাদমাধ্যমের ভিড় উপচে পড়ে। তবে ক্যামেরার মুখোমুখি হতে চাননি তাঁরা কেউই। সবিনয়ে প্রত্যাখ্যান করেছেন অনুরোধ। আবেদনকারিণীর শ্বশুরমশাই নিজে বারাসতের স্বনামধন্য চিকিৎসক। এ দিন তিনি বলেন, ‘‘আজ আমাদের একই সঙ্গে খুশি আর গভীর দুঃখের দিন। তবে ওই শিশু ভূমিষ্ঠ হলে সে কতটা কষ্ট পেত, তার শরীরে কী কী সমস্যা ছিল তার সব রিপোর্টই আমরা কোর্টে দিয়েছিলাম। নিয়ম নেই বলে এ রকম ক্ষেত্রে অনেকে চাইলেও ভ্রূণ নষ্ট করতে পারতেন না। আদালতের রায়ে সে ক্ষেত্রে অনেকেরই সুরাহা হবে।’’
আরও পড়ুন: নাবালিকা বিয়ে রুখতে সহায় নাপিত, পুরোহিত
এই কয়েক মাস গর্ভস্থ শিশুটিকে নিয়ে একের পর এক পরীক্ষা শুধু নয়, মেডিক্যাল টিমের কাছে বিভিন্ন পরীক্ষা করাতে হয়েছে আবেদনকার়িণীকে। তাঁর কথায়, সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করার পর থেকে গত ৪৪ দিন এক ফোঁটাও ঘুমোতে পারেননি তিনি। এ দিন অফিস না গিয়ে বাড়িতেই ছিলেন মহিলার স্বামীও। তাঁর কথায়, ‘‘কাল সারা রাত আমরা কেউ ঘুমোইনি। বারবার ভেবেছি কী রায় হবে, জিতব তো? আবার ভেবেছি, হায় এ কীসের জয়! এ তো আমাদের প্রথম সন্তান!’’