Dearness allowance

ডিএ-দৌড়ে ফের পিছোল রাজ্য, কেন্দ্রের সঙ্গে ব্যবধান বেড়ে দাঁড়াল ৩৫%, পথে নামছেন কর্মীরা

এখন কেন্দ্রীয় কর্মীদের ডিএ-র পরিমাণ বেড়ে হচ্ছে ৩৮%। বঙ্গে ষষ্ঠ বেতন কমিশনের আওতায় ২০২১-এর ১ জানুয়ারি ৩% ডিএ চালু হওয়ায় বাস্তবে কেন্দ্রের সঙ্গে রাজ্যের সেই ব্যবধান বেড়ে হল ৩৫%।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২২ ০৬:৪৭
Share:

পথে নেমে আন্দোলনের হুঁশিয়ারি রাজ্যের বিভিন্ন কর্মচারী সংগঠনের। প্রতীকী ছবি।

পিছিয়ে আছে আগে থেকেই। কেন্দ্রীয় সরকার তার কর্মীদের জন্য আরও ৪% মহার্ঘ ভাতা ঘোষণা করায় ডিএ-দৌড়ে তাদের আরও বেশ খানিকটা পিছনে পড়ে গেল পশ্চিমবঙ্গ সরকার। নতুন ব্যবস্থায় কেন্দ্রের সঙ্গে বাংলার ডিএ-ব্যবধান বেড়ে দাঁড়াচ্ছে ৩৫%।

Advertisement

কলকাতা হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ রাজ্য সরকারের দায়ের করা ডিএ সংক্রান্ত নির্দেশ পুনর্বিবেচনা মামলা খারিজ করে দেওয়ায় তৃণমূল সরকার এমনিতেই অস্বস্তিতে রয়েছে। তার উপরে কেন্দ্রের তরফে নতুন ডিএ ঘোষণার পরে রাজ্যের বিভিন্ন কর্মচারী সংগঠন আইনি লড়াইয়ের সঙ্গে সঙ্গে পথে নেমে আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেওয়ায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের বিড়ম্বনা বাড়ল বলেই রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের অভিমত।

কর্মী সংগঠনগুলি জানাচ্ছে, সপ্তম বেতন কমিশনের আওতায় কেন্দ্র ২০১৬ সালের ১ জুলাই থেকে নতুন হারে ডিএ দিতে শুরু করে। তার পরে জুলাই ও জানুয়ারি, বছরে দু’বার রীতি মেনে ডিএ বাড়াতে থাকে তারা। বুধবার কেন্দ্র যে-ডিএ ঘোষণা করেছে, তা কার্যকর হবে গত জুলাই থেকে। ফলে এখন কেন্দ্রীয় কর্মীদের ডিএ-র পরিমাণ বেড়ে হচ্ছে ৩৮%। বঙ্গে ষষ্ঠ বেতন কমিশনের আওতায় ২০২১-এর ১ জানুয়ারি ৩% ডিএ চালু হওয়ায় বাস্তবে কেন্দ্রের সঙ্গে রাজ্যের সেই ব্যবধান বেড়ে হল ৩৫%।

Advertisement

কর্মী সংগঠনগুলির অভিযোগ, কয়েক বছর চাকরি করা সর্বনিম্ন বেতনভুক কর্মচারীরও ২০২২-এর ১ জুলাই থেকে প্রতি মাসে ৭০০০ টাকা লোকসান হচ্ছে। ‘গ্রুপ সি’ বা তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারীদের মাসে লোকসান হচ্ছে ১০,০০০ টাকারও বেশি।

মামলাকারী কর্মী সংগঠন কনফেডারেশন অব স্টেট গভর্নমেন্ট এমপ্লয়িজ়ের সাধারণ সম্পাদক মলয় মুখোপাধ্যায়ের প্রতিক্রিয়া, “আদালত ডিএ মিটিয়ে দিতে বলা সত্ত্বেও রাজ্য সরকার টালবাহানা করে চলেছে। আমরা অনিচ্ছুক সরকারের হাত থেকে ডিএ আদায় করেই ছাড়ব। আইনি লড়াইয়ের পাশাপাশি পথে নেমে আন্দোলন করব।” কর্মচারী পরিষদের সভাপতি দেবাশিস শীলের অভিযোগ, “রাজ্য সরকারি কর্মচারীরা চরম আর্থিক বঞ্চনার শিকার। প্রতারণা করছে তৃণমূল সরকার। পুজোর ছুটির পরে ফের রাস্তায় নামব আমরা।’’ ভেদাভেদ ভুলে সব রাজ্য সরকারি কর্মচারী সংগঠন, শিক্ষক সংগঠনগুলিকে অবিলম্বে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। রাজ্য কো-অর্ডিনেশন কমিটির সাধারণ সম্পাদক বিজয়শঙ্কর সিংহের বক্তব্য, ২০০৯ সালের রোপা রুলে বামফ্রন্ট সরকার ডিএ-র স্বীকৃতি দেয়। এটা কর্মচারীদের আইনি অধিকার, দয়ার দান নয়। ‘‘রাজ্য সরকারের কাছ থেকে ইতিবাচক সাড়া না-পেলে আগামী দিনে প্রশাসনকে স্তব্ধ করার মতো কর্মসূচিতে যেতে বাধ্য হব। কাল সারা রাজ্যে টিফিনের সময় বিক্ষোভ কর্মসূচি হবে,” বলেন বিজয়শঙ্কর।

আর্থিক পর্যবেক্ষকদের বক্তব্য, ৩১% ডিএ মেটাতে ২৩-২৪ হাজার কোটি টাকার ভার নিতে হবে সরকারকে। আগের বকেয়া ধরলে সেই টাকার পরিমাণ কয়েক গুণ বাড়বে। চলতি আর্থিক পরিস্থিতিতে কেন্দ্রের নতুন ঘোষণা রাজ্য সরকারের উপরে চাপ আরও বাড়িয়ে দিল।

এই বিষয়ে রাজ্য সরকারের তরফে কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। ডিএ নিয়ে হাই কোর্টের সর্বশেষ রায়ের পরে সরকারের অবস্থান কী হবে, সেটাও এখনও স্পষ্ট নয়।

তবে শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস প্রভাবিত রাজ্য সরকারি কর্মচারী ফেডারেশনের প্রবীণ নেতা মনোজ চক্রবর্তীর প্রতিক্রিয়া, “ডিএ নিয়ে দ্রুত ইতিবাচক সিদ্ধান্ত নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি রাজ্য সরকারের কাছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন