মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এক মাস আগে বনগাঁ (উত্তর)-এর বিধায়ককে নির্দেশ দিয়েছিলেন, যশোর রোড সম্প্রসারণ ও ৫টি রেলসেতু তৈরি নিয়ে যে অচলাবস্থা হয়েছে, আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে তা কাটাতে। যশোর রোডে গাছ কাটা নিয়ে একটি মানবাধিকার সংগঠন কলকাতা হাইকোর্টে যে মামলা করেছে, তা-ও আলোচনার মাধ্যমে তুলে নেওয়ার পরামর্শ দেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু এক মাস কেটে গেলেও সেই আলোচনা শুরুই হয়নি।
মুখ্যমন্ত্রী প্রশাসনিক বৈঠকে পরামর্শ দিয়েছিলেন, যশোর রোডের গাছ না কেটে সেগুলি তুলে নিয়ে গিয়ে অন্যত্র বসানো যায় কি না দেখতে। কারণ আধুনিক প্রযুক্তিতে সেটা সম্ভব। যদিও উদ্ভিদ বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, গাছের বয়স ৫০-৬০ বছরের বেশি হলে তাকে তুলে অন্যত্র বসালে বাঁচিয়ে রাখা সহজ নয়।
উত্তর ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, বনগাঁ উত্তরের বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাসকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল ওই সংগঠনের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি আপসে মেটাতে। ওই বিধায়ক সংগঠনটির সঙ্গে একাধিক বার কথাও বলেন। কিন্তু সমস্যা হয়ে দাঁড়ায় একটি চিঠির দাবি। মানবাধিকার সংগঠনটি বিধায়ককে জানায়, বিষয়টি বিচারাধীন। তাই তিনি যেন লিখিত ভাবে আলোচনার প্রস্তাব দেন। কিন্তু বিধায়ক জানিয়ে দেন, তিনি লিখিত ভাবে তা জানাতে পারবেন না।
শিয়ালদহ-বনগাঁ শাখায় কাজীপাড়া, হাবড়া, ১ ও ২নম্বর, অশোকনগর এবং বনগাঁ এই ৫টি রেল গেট সারা দিনে বেশ কিছু ক্ষণ বন্ধ থাকে। এতে নিত্যযাত্রী ও স্থানীয়দের দুর্ভোগ পোহাতে হয়। রাজ্য সরকার তাই ৫টি রেলসেতু তৈরির জন্য রেল বোর্ডের কাছে প্রস্তাব পাঠায়। বছর দুই আগে সেই প্রস্তাব রেল বোর্ড অনুমোদনও করে। বারাসত থেকে পেট্রাপোল পর্যন্ত ৩৫ নম্বর জাতীয় সড়ক সম্প্রসারণের কাজও শুরু হয়। ওই ৫টি রেল ওভারব্রিজ (বারাসত-পেট্রাপোল) জাতীয় সড়কের উপর দিয়েই তৈরি হওয়ার কথা। সড়ক সম্প্রসারণের কাজে যশোর রোডের কয়েকশো প্রাচীন গাছ কাটা পড়বে। সেগুলি বাঁচাতে হাইকোর্টে জনস্বার্থে মামলা করে মানবাধিকার সংগঠনটি।
সংগঠনটির বারাসত শাখার সম্পাদক মানস দাস শুক্রবার বলেন, ‘‘বিধায়ককে বলা হয়েছিল আলোচনায় বসার কথা সংগঠনকে চিঠি দিয়ে জানাতে। কিন্তু তাঁর চিঠি এখনও পাইনি।’’ বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাস বলেন, ‘‘আমি একাধিক বার আলোচনায় বসে বিষয়টি মিটিয়ে ফেলতে চেয়েছি। কিন্তু চিঠি দিয়ে আলোচনায় বসার কথা জানানো আমার পক্ষে সম্ভব নয়।’’ জেলাশাসক অন্তরা আচার্য বলেন, ‘‘আশা করছি, সমস্যার দ্রুত সমাধান হবে।’’