মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
বাবা-মায়ের অভিযোগ, তাঁকে অপহরণ করা হয়েছে। পুলিশও শ্বশুর-শাশুড়িকে জামিন অযোগ্য ধারায় গ্রেফতার করেছে। কিন্তু যাঁকে নিয়ে এত কাণ্ড, সেই তরুণী সাগরিকা নিজেই সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ভিডিওতে পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছেন, ‘‘আমি ভালবেসে বিয়ে করেছি। আমার বাড়ির লোক শ্বশুরবাড়ির লোকজনকে হেনস্থা করছেন। তাই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে আমার আকুতি, শ্বশুরবাড়ির লোককে যেন হেনস্থা না করা হয়।’’
মালদহের রতুয়ার সাগরিকা ও তাঁর স্বামী অভিজিৎ সরকার গোপন জায়গায় লুকিয়ে রয়েছেন। এই ঘটনার সঙ্গে অনেকেই রিজওয়ানুর-প্রিয়ঙ্কার ঘটনার মিল পাচ্ছেন। সাগরিকার বাবা হেমন্ত শর্মা বড় ব্যবসায়ী। অভিজিতের বাবা উত্তম সরকার পেশায় মুহুরি। পুলিশের ভূমিকা নিয়েও এক্ষেত্রে প্রশ্ন উঠেছে। প্রশ্ন উঠেছে, সাবালক দুই তরুণ-তরুণী স্বেচ্ছায় বিয়ে করলে পুলিশ কেন অপহরণ, জোর করে আটকে রাখার মতো জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা করল? কেনই বা উত্তমবাবু ও তাঁর স্ত্রীকে গ্রেফতার করা হল? প্রশ্ন উঠেছে, এক্ষেত্রে ধনী ব্যবসায়ী হেমন্তবাবু পুলিশের কাছে প্রভাব খাটিয়েছেন কি না তা নিয়েও। জেলা তৃণমূলের সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেনও বলেন, ‘‘দু’জনেই যখন সাবালক তখন পুলিশের হস্তক্ষেপের দরকার কী? পুলিশ অন্যায় করেছে।’’ প্রয়োজনে ঘটনার কথা মুখ্যমন্ত্রীর কানে তুলবেন বলেও জানান।
তবে চাঁচলের এসডিপিও সজলকান্তি বিশ্বাস বলেন, ‘‘প্রভাবিত হয়ে গ্রেফতার বা পুলিশি হেফাজতে মারধরের কথা ঠিক নয়। নির্দিষ্ট অভিযোগেই পুলিশ অভিজিতের বাবা-মাকে গ্রেফতার করেছে। কিন্তু একবার মামলা শুরু হলে কিছু করার নেই। এ ক্ষেত্রে মেয়েটিকে আদালতে দাঁড়িয়ে সব বলতে হবে।’’
ওই দম্পতির পরিজনদের সূত্রে জানা গিয়েছে, একই স্কুলে পড়তেন সাগরিকা ও অভিজিৎ। নবম শ্রেণি থেকে প্রেম। প্রথম থেকেই হেমন্তবাবু তাঁদের মেলামেশা মেনে নিতে পারেননি। সম্প্রতি তিনি মেয়ের বিয়ে ঠিক করে ফেলায় গত সোমবার সাগরিকা পালিয়ে গিয়ে অভিজিৎকে বিয়ে করেন। মেয়ে নিখোঁজ বলে ১৩ জুলাই ডায়েরি করেন হেমন্তবাবু। তারপরে শুক্রবার মেয়েকে অপহরণ করা হয়েছে বলে দাবি করেন।