অ্যাপোলোর পরে এ বার মেডিকা।
ডানকুনির এক যুবকের মৃত্যুতে গাফিলতির অভিযোগ ওঠায় স্বাস্থ্য দফতরকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ বার মেডিকায় পাটুলির বাসিন্দা সুনীল পাণ্ডের মৃত্যু নিয়ে ওঠা গাফিলতির অভিযোগের তদন্তে মুখ্যমন্ত্রী তিন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের কমিটি গড়ে দিলেন। তদন্ত শেষ করে তাঁদের সাত দিনের মধ্যে রিপোর্ট পেশ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
হৃদযন্ত্রের সমস্যা নিয়ে মেডিকায় ভর্তি হওয়া সুনীলবাবুর পায়ে রক্ত জমাট বেঁধে যাওয়ায় তা কেটে বাদ দেওয়া হয়। যে সার্জেন এই অপারেশন করেছিলেন, এ দিন তাঁকে ডেকে প্রায় দু’ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করে পুর্ব যাদবপুর থানার পুলিশ। যে অস্থিবিশারদের নির্দেশে এই অপারেশন করা হয়েছিল, কাল তাঁকে ডেকে পাঠিয়েছে পুলিশ।
বুধবারই সুনীলের স্ত্রী মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে গিয়ে দোষীদের শাস্তি দাবি করে এসেছিলেন। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নবান্ন ছাড়ার মুখে মুখ্যমন্ত্রী মেডিকা নিয়ে তিন সদস্যের কমিটি গড়ার কথা জানিয়েছেন। স্বাস্থ্য ভবন সত্রের খবর, ওই তদন্ত কমিটিতে রয়েছেন কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের কার্ডিও থোরাসিক বিভাগের প্রধান প্লাবন মুখোপাধ্যায়, এসএসকেএম হাসপাতালের অর্থোপেডিক বিভাগের প্রধান আনন্দকিশোর পাল এবং এসএসকেএম হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের চিকিৎসক সৌমিত্র ঘোষ। এ দিনই স্বাস্থ্য ভবন থেকে এই সংক্রান্ত নথিপত্র নিয়ে গিয়েছেন তদন্তকারীরা। মেডিকা-কাণ্ডে তদন্ত কমিটিকে সাত দিনে রিপোর্ট দিতে বলা হলেও, অ্যাপোলো-কাণ্ডে দু’দুটি তদন্ত কমিটি গড়া হলেও, এখনও কিন্তু রিপোর্ট মুখ্যমন্ত্রী কাছে জমা পড়েনি। এ দিন নবান্ন থেকে বেরোনোর মুখে মমতা বলেন, ‘‘স্বাস্থ্য দফতরের তদন্তের রিপোর্ট পুলিশের কাছে জমা পড়েছে।’’
স্বাস্থ্য দফতরের তদন্ত রিপোর্ট নিয়ে কি করবে পুলিশ? লালবাজার জানাচ্ছে, অ্যাপোলো হাসপাতালের চিকিৎসক, কর্মী এবং কর্তারা স্বাস্থ্য দফতরের তদন্ত কমিটি এবং ফুলবাগান তদন্তকারী অফিসারদের কাছে আলাদা করে বয়ান দিয়েছেন। এ বার দুই তদন্তকারী দলের কাছে দেওয়া বয়ান মিলিয়ে দেখবেন লালবাজারের গোয়েন্দারা। দুই বয়ানের মধ্যে কোনও ফারাক রয়েছে কি না এখন সেটাই খুঁজে দেখতে চায় লালবাজার।
ডানকুনির যুবক সঞ্জয় রায়ের মৃত্যুর ঘটনায় স্বাস্থ্য দফতর এবং পুলিশের কাছে আলাদা ভাবে গাফিলতি ও জালিয়াতির অভিযোগ করেছে মৃতের পরিবার। লালবাজারের এক তদন্তকারী অফিসার জানান, স্বাস্থ্য দফতরের তদন্ত কমিটির কাছে অ্যাপোলোর বিভিন্ন চিকিৎসক, কর্মী এবং কর্তা কী বয়ান দিয়েছেন তা সংগ্রহ করা হয়েছে। স্বাস্থ্য দফতরের তদন্ত কমিটি এবং পুলিশের কাছে দেওয়া বয়ান মিলিয়ে দেখার কাজ চলছে। যাঁদের বয়ানে অসঙ্গতি মিলবে, তাঁদের ফের ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করবে পুলিশ।