প্রতীকী ছবি।
ষষ্ঠ বেতন কমিশনের মেয়াদ আরও এক বছরের জন্য বাড়াল রাজ্য। ২০১৫-এর অক্টোবরে কমিশন গঠনের পরে এই নিয়ে তিন ধাপে আড়াই বছর মেয়াদ বাড়ল কমিশনের। বুধবার নবান্ন থেকে এই বিজ্ঞপ্তি জারি হওয়ার পরেই সরকার-বিরোধী কর্মী সংগঠনের নেতারা বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী ১৫% মহার্ঘভাতা দেওয়ার কথা ঘোষণা করে কমিশনের রিপোর্ট জমা দেওয়ার মেয়াদ কৌশলে আরও এক বছর বাড়িয়ে দিলেন।’’ এর প্রতিবাদে আজ, বৃহস্পতিবার থেকেই বিক্ষোভ নামছে বিভিন্ন কর্মী-সংগঠন।
প্রশাসনের এক কর্তা জানান, কেন্দ্র জুলাইয়ে এক কিস্তি ডিএ দিয়েছে। রাজ্য জানিয়েছে, ১ জানুয়ারি থেকে তারা এক কিস্তি (১৫%) ডিএ দেবে। সেটা কার্যকর হলে কেন্দ্র ও রাজ্যের ডিএ-এর ফারাক দাঁড়াবে ৩৯%। যদিও তখন কেন্দ্রের আরও এক কিস্তি ডিএ ঘোষণা হওয়ার কথা। অন্য দিকে, কেন্দ্র সপ্তম বেতন কমিশনের সুপারিশ কার্যকর করেছে ২০১৬ সালের ১ জানুয়ারি থেকে। আর রাজ্য পুরনো কমিশনের মেয়াদ বাড়িয়ে চলেছে!
কেন বার বার মেয়াদ বাড়ছে কমিশনের? সরকার কোনও কারণ না-জানালেও অর্থ দফতরের কর্তারা এ জন্য রাজ্যের আর্থিক পরিস্থিতিকেই দায়ী করেছেন। এক কর্তা জানান, পুরনো ঋণের দায় মেটাতেই ভাঁড়ে মা-ভবানী দশা। রাজ্য কর্মচারীদের বর্ধিত বেতন দেওয়ার জন্য চতুর্দশ অর্থ কমিশনের কাছে চার বছরে অতিরিক্ত ৮৩ হাজার ৪৪৫ কোটি টাকা সাহায্য চেয়েছিলেন অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র। তা নাকচ করে কমিশনের পরামর্শ, রাজ্যে আর্থিক শৃঙ্খলা ফিরিয়ে এনে খরচের টাকা নিজেরা তোলার ব্যবস্থা করুক সরকার।
বিভিন্ন সংগঠন অবশ্য সরকারকেই দুষছে। কো-অর্ডিনেশন কমিটি আজ, বৃহস্পতিবার দুপুরে বিরতির সময়ে সব অফিসে বিক্ষোভ দেখাবে। ১৬ নভেম্বর বেতন কমিশন অভিযান করবে তারা। কনফেডারেশন অব স্টেট গভর্নমেন্ট এমপ্লয়িজ, নবপর্যায়, আশা-সহ ১০টি কর্মী সংগঠন বেতন কমিশনের দফতরের সামনে বিক্ষোভ দেখাবে।
এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের নেতা মলয় মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘কর্মীদের প্রতি সীমাহীন বঞ্চনা চলছে।’’ কো-অর্ডিনেশনের নেতা বিজয় সিন্হা বলেন, ‘‘এ সরকার যে কর্মীদের কিছু দেবে না, তা আমরা বুঝে গিয়েছি।’’ বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির নেতা স্বপন মণ্ডল বলেন, ‘‘সবাইকে এক ছাতার তলায় এসে ল়ড়তে হবে।’’
তবে শাসক দলের কর্মী সংগঠন রাজ্য সরকারি কর্মচারী ফেডারেশন-এর নেতা সৌম্য বিশ্বাস বলেন, ‘‘কর্মচারীদের আশা-আকাঙ্ক্ষা প্রত্যাশিত। কিন্তু রাজ্যের পরিকল্পনা ধাক্কা খেয়েছে কেন্দ্রের নীতি, নোটবন্দি এবং জিএসটি-র মতো জনবিরোধী সিদ্ধান্তের কারণে।’’