অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক হরিদয়াল রায়। —নিজস্ব চিত্র।
বৃহস্পতিবার দিনভর চুলো জ্বলল না ময়নাগুড়ির সেই মেধাবী ছাত্রের বাড়িতে৷
ময়নাগুড়ির জল্পেশ মোড় এলাকাতেই বাড়ি সুভাষনগর হাইস্কুলের সেই মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর৷ বরাবর ভাল ফল করে এসেছে স্কুলে। এক ডাকে তাই সকলেই চেনে। পরীক্ষা শেষ হয়ে যাওয়ার পরে কোথায় ছেলে খেলাধুলো, গল্পআড্ডা দেবে, তা নয়, বদলে ঘরবন্দি সে। জ্বরে আক্রান্ত৷ বাড়ির লোকেদের কথায়, প্রশ্ন ফাঁস নিয়ে তুলকালামের মধ্যে অসুস্থ হয়ে পড়েছে সে।
সাধারণ ঘরের ছেলে সে৷ বাড়িতে মোবাইল টাওয়ার রয়েছে। তার থেকে যা কিছু আয়। মা-ও অসুস্থ। তাই বুধবার তাঁকে জলপাইগুড়িতে ডাক্তার দেখাতে নিয়ে এসেছিলেন ছেলেটির বাবা৷ তার মধ্যেই প্রশ্ন ফাঁস নিয়ে এত কিছু ঘটে যায়।
সময়ের আগে প্রশ্নপত্র খুলে ফেলার অভিযোগ উঠেছিল প্রধান শিক্ষক হরিদয়ালের বিরুদ্ধে। সেখানে জড়িয়ে যায় মেধাবী কয়েক জন ছাত্রের নাম। অভিযোগ, পরীক্ষা শুরুর অনেক আগে প্রশ্নপত্র খুলে ফেলেছিলেন হরিদয়াল। ফোনে তা জানিয়ে দেন মেধাবী ছাত্রদের। আরও অভিযোগ, এটা তিনি এ বারে বাংলা পরীক্ষা থেকেই করে আসছিলেন। শেষে অঙ্ক পরীক্ষার দিন ধরা পড়ে যান বলে দাবি স্কুল পরিদর্শক বিশ্বনাথ ভৌমিকের।
এই অভিযোগ কিন্তু মানতে নারাজ ওই মেধাবী ছাত্রটি। তার স্পষ্ট কথা, ‘‘এমন কোনও ঘটনা ঘটেইনি৷ ঘটার প্রশ্নও নেই৷ আমি পরিশ্রম করে যেমনটা পরীক্ষা দিয়েছি তেমন ফলই পাব৷ আমার বিরুদ্ধে এমন কথা রটবে, তা ভাবতেও পারছি না৷’’
এ দিন সকাল থেকেই জ্বর আসে ছেলেটির৷ তার উপরে তার মায়ের অসুস্থতা তো আছেই৷ এর মধ্যে ছেলের নাম সুভাষনগর হাইস্কুলের ঘটনায় জড়িয়ে যাওয়ায় উদ্বিগ্ন বাড়ির লোকেরা৷ ছেলেটির বাবার কথায়, ‘‘সকাল থেকে বাড়িতে রান্না হয়নি৷ কাকার ঘরে দুপুরে এক চামচ ও বিকেলে দু’চামচ ভাত খেয়েছে ছেলে৷ এই মুহূর্তে ওর শরীরে প্রবল জ্বর৷ চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলছি৷ ওঁরা বললে ওকে হাসপাতালে ভর্তি করে দেব৷’’
বাড়ির লোকেদের কথায়, ‘‘আমরা কখনও কোনও দিন অসৎ উপায়ে কিছু করিনি৷ তাই যার বিরুদ্ধে যা-ই অভিযোগ উঠুক, তাতে যেন আমাদের বাড়ির ছেলেটির নাম যেন না জড়ায়, অন্তত এই মুহূর্তে সেটাই আমরা চাই৷’’