আদালত চত্বরে তপন। ছবি: ওমপ্রকাশ সিংহ।
ঘুমন্ত মায়ের মাথায় টানা হাতুড়ির বাড়ি মারছিল বাবা। তাই দেখে কেঁদে ওঠে কিশোরী মেয়ে। এর পর তাঁর মাথাতেও সজোরে হাতুড়ির বাড়ি এসে পড়ে একাধিক বার। সেই আঘাতে মা ও মেয়ে দু’জনেই মেঝেতে লুটিয়ে পড়ে। কিন্তু, তাতেও থামেননি তপন রুইদাস। এর পর ধারালো অস্ত্র দিয়ে দু’জনেরই গলায় কোপ মারেন তিনি। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তাঁদের। ঘটনার পরই অন্ডাল থানায় গিয়ে আত্মসমর্পণ করেন বছর সাতচল্লিশের ওই ব্যক্তি।
বুধবার সকাল ছ’টা নাগাদ অন্ডালের মাধাইপুরের ওই ঘটনায় গ্রেফতার করা হয়েছে তপন রুইদাসকে। তাঁকে এ দিন দুর্গাপুর মহাকুমা আদালতে হাজির করানো হয়। আদালত তাঁকে পুলিশে হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছে।
আরও পড়ুন: ৩২ সপ্তাহে নাবালিকার গর্ভপাতে সায় কোর্টের
পুলিশ জানিয়েছে, এ দিন সকাল সাড়ে ছ’টা নাগাদ থানায় এসে আত্মসমর্পণ করেন তপন। জানান, স্ত্রী এবং মেয়েকে কুপুয়ে খুন করেছেন তিনি। এর পরে পুলিশ তপনের বাড়িতে যায়। সেখান থেকে তপনের স্ত্রী পদ্মা রুইদাস (৪৭) এবং ছোটমেয়ে পাপিয়া রুইদাস (১৭)-এর দেহ উদ্ধার করা হয়। পাপিয়া স্থানীয় স্কুলে একাদশ শ্রেণিতে পড়ত। তপনের বড়মেয়ে পিয়ালি পানাগড়ের কাছে রঘুনাথপুরে মামারবাড়িতে থাকে।
মা-বোনের খুনের খবর পেয়ে পিয়ালি মামারবাড়ি থেকে বাড়ি আসে। পুলিশকে সে জানিয়েছে, সংসারে অভাব বলে অশান্তি লেগেই থাকত। তাই বছর দুয়েক আগে সে মামারবাড়ি চলে গিয়েছিল। ওই কিশোরী এ দিন বাবার কযোর শাস্তিু দাবি করেছে।
আরও পড়ুন: শ্রীলঙ্কায় খেলতে গিয়ে জলে ডুবে মৃত্যু কিশোর ক্রিকেটারের
তপনের প্রতিবেশীরাও জানিয়েছেন, টাকাপয়সার জন্য নিত্য অশান্তি লেগেই থাকত রুইদাস পরিবারে। এ দিন সকালে তপনদের দরজা খোলা দেখে এক প্রতিবেশীর নজরে পড়ে দেহ দু’টি। তিনিও থানায় খবর দেন। তত ক্ষণে তপন থানায় পৌঁছে গিয়েছেন। প্রতিবেশীদের একাংশ জানিয়েছেন, স্ত্রী পদ্মার চরিত্র নিয়ে সন্দেহ করতেন তপন। তার জেরেই এই খুন কি না তা-ও খতিয়ে দেখছে পুলিশ।