সেবায় বাঁচার দিশা হোমের মেয়েদের

স্বজনহারা হয়ে হোমের আশ্রয়ে আবাসিকেরা জীবনটাকে একটু-একটু করে গুছিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। তার পরে আসে সেই সময়, যখন মাথার উপর থেকে হোমের আশ্রয়টুকুও সরে যায়। লড়াইটা তখন হয়ে ওঠে মারাত্মক। পেট ভরাতে হবে আর মাথা গোঁজার জন্য খুঁজতে হবে কাজ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৬ জুলাই ২০১৭ ০৩:২৬
Share:

প্রতীকী ছবি।

এক প্রকল্পেই দু’টি কল্যাণকাজ!

Advertisement

নিঃসঙ্গ, অসুস্থ বৃদ্ধবৃদ্ধাদের সেবা ও সঙ্গ দেওয়ার কাজে সরকারি ও সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত হোমের মেয়েদের নিয়োগের পরিকল্পনা করেছে সমাজকল্যাণ দফতর। দ্বিমুখী এই প্রকল্পে উপকৃত হবে দু’পক্ষই। অসুস্থ, অসহায় বৃদ্ধ ও বৃদ্ধারা পাবেন সেবা, শুশ্রূষা আর সঙ্গ। আর কাজের সুযোগ জোটায় হোমের মেয়েরা পাবে পায়ের তলার মাটি।

স্বজনহারা হয়ে হোমের আশ্রয়ে আবাসিকেরা জীবনটাকে একটু-একটু করে গুছিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। তার পরে আসে সেই সময়, যখন মাথার উপর থেকে হোমের আশ্রয়টুকুও সরে যায়। লড়াইটা তখন হয়ে ওঠে মারাত্মক। পেট ভরাতে হবে আর মাথা গোঁজার জন্য খুঁজতে হবে কাজ। এবং সেই লড়াইয়ে পরিবার-পরিজনের কোনও সাহায্য মিলবে না।

Advertisement

বুধবার এক অনুষ্ঠানে নারী-শিশু ও সমাজকল্যাণ মন্ত্রী শশী পাঁজা জানান, ১৮ বছর পার করার পরে হোমের এই ছেলেমেয়েদের নিয়েই সব চেয়ে বেশি চিন্তায় পড়েন তাঁরা। কারণ, ১৮ বছর বয়স হলে হোম ছেড়ে দিতে হয়। কিন্তু আর্থিক ভাবে ছেলেমেয়েরা স্বনির্ভর না-হলে তাদের হোম থেকে বার করে দেওয়া কার্যত জলে ফেলে দেওয়ার সামিল। তাই তাদের জন্য বিভিন্ন পুনর্বাসন প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। তবে গতানুগতিক বিউটিশিয়ান কোর্স, সূচিশিল্প, আইসিডিএস-কর্মীর মতো বিষয় থেকে বেরিয়ে সমাজকল্যাণ দফতর এ বার এমন কিছু ক্ষেত্রে আবাসিকদের কর্মসংস্থানের চেষ্টা করছে, যেগুলি অপেক্ষাকৃত নতুন।

৪ জুন থেকে উত্তর কলকাতার একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার উদ্যোগে ৬০ জন দুঃস্থ মেয়ের ‘জেরিয়াট্রিক বেডসাইড অ্যাসিস্ট্যান্স অ্যান্ড জেরিয়াট্রিক অ্যানিমেটর’-এর প্রশিক্ষণ চলছে। চার মাসের এই প্রশিক্ষণে মুর্শিদাবাদের শিলায়ন হোমের ১০টি মেয়েও রয়েছে। প্রশিক্ষণ চলাকালীন তাদের থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা হয়েছে কলকাতায় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের অফিসেই।

এই প্রশিক্ষণ পরিদর্শনে গিয়ে শশীদেবী এ দিন বলেন, ‘‘পুলিশের ‘প্রণাম’ প্রকল্পে অনেক প্রবীণ যুক্ত। সেখানে খবর পাঠানো হচ্ছে। তাঁদের সাহায্যকারীর দরকার থাকলে এখান থেকে নিতে পারেন। হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাওয়ার সময়ে অনেকেই সাহায্যকারী খোঁজেন। সেখানেও এই মেয়েরা কাজ পেতে পারেন।’’ সম্প্রতি পশ্চিম মেদিনীপুরে এই ধরনের প্রশিক্ষণের সূত্রে সরকারি হোমের ২২টি মেয়ের কর্মসংস্থান হয়েছে।

মন্ত্রী জানান, হোমের ছেলেদের কর্মসংস্থান প্রকল্পের সংখ্যা কম। সে-দিকেও জোর দেওয়া হবে। কিছু দিন আগে তিনটি হোমের ১৩টি ছেলেকে গাড়ি রং করার প্রশিক্ষণ দিয়ে কাজে নিয়োগ করা হয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement