প্রতীকী ছবি।
দাবিটা প্রায় তিন দশকের। যাত্রী সুরক্ষার কথা ভেবে এত দিনে খড়্গপুর এবং সংলগ্ন এলাকার রেল ব্যবস্থায় পয়েন্ট সিগন্যাল প্রযুক্তির পরিবর্তনের কাজ শুরু হয়েছে।
নাম ‘সলিড স্টেট সিগন্যালিং ইন্টারলক’ প্রযুক্তি। রেলকর্তারা জানান, খড়্গপুরের এই ব্যবস্থা এশিয়ায় বৃহত্তম। নতুন এই প্রযুক্তি লাগানোর পরে এই জংশন স্টেশন থেকে তিন দিকের লাইনে ট্রেন চলাচলে গতি অনেক বাড়বে। অনেক বেশি সুরক্ষাও দেবে যাত্রীদের।
কাজ শুরু হয়েছে ৫ নভেম্বর। দক্ষিণ-পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক সঞ্জয় ঘোষ জানান, শেষের তিন দিন এই কাজের জন্য দক্ষিণ-পূর্ব রেলের ট্রেনযাত্রা ধাক্কা খাবে অনেকটাই। ১৭, ১৮ ও ১৯ নভেম্বরের লোকাল ছাড়াও দূরপাল্লার ট্রেন বাতিল করতে হচ্ছে। যাত্রীদের কাছে তাঁর আবেদন, ‘‘এই কাজের জন্য অনেক অসুবিধা হচ্ছে বা হবে ঠিকই। তবে ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে তাঁরা যেন তা মেনে নেন।’’
হাওড়া থেকে খড়্গপুর যাওয়ার পরে সেখান থেকে তিন দিকে দু’টি করে লাইন গিয়েছে। প্রথমটি মেদিনীপুর হয়ে বাঁকুড়া, দ্বিতীয়টি ভুবনেশ্বর এবং তৃতীয়টি টাটানগরের দিকে। হাওড়া থেকে জকপুর পর্যন্ত তিনটি লাইন থাকলেও পুরনো ব্যবস্থায় তৃতীয় লাইনটিকে খড়্গপুর পর্যন্ত নিয়ে যাওয়া যায়নি। এ বার সেটি খড়্গপুর পর্যন্ত যাবে। ফলে হাওড়া থেকে খড়্গপুর পর্যন্ত একটি লাইন বাড়বে। মেদিনীপুর থেকে আসা দু’টি লাইনের একটি থেমে ছিল গোকুলপুরে এসে। পুরনো ব্যবস্থায় সেটিকেও খড়্গপুর পর্যন্ত আনা সম্ভব হয়নি। নতুন ব্যবস্থায় সেটিকেও খড়্গপুর পর্যন্ত নিয়ে আসা যাবে।
ট্রেন বাতিল
• ১৭ নভেম্বর: ২৩টি মেল ও এক্সপ্রেস। ৩টি স্পেশ্যাল। ১২টি প্যাসেঞ্জার। ২৪টি মেমু। ২৭টি লোকাল।
• ১৮ নভেম্বর: ২২টি মেল ও এক্সপ্রেস। ৪টি স্পেশ্যাল। ১২টি প্যাসেঞ্জার। ১৬টি মেমু। ২৭টি লোকাল।
• ১৯ নভেম্বর: ৪৩টি মেল ও এক্সপ্রেস। ১টি স্পেশ্যাল। ১২টি প্যাসেঞ্জার। ১৩টি মেমু। ৪০টি লোকাল।
রেলকর্তারা জানান, নয়া ব্যবস্থায় খড়্গপুর থেকে নতুন প্রায় ৮০০টি রুট খুলবে। ফলে খড়্গপুরের বিরাট ইয়ার্ড থেকে মালগাড়ি ও দূরপাল্লার ট্রেন চালাতে অনেক সুবিধা হবে। খড়্গপুর দিয়ে এখন লোকাল, দূরপাল্লা) এবং মালগাড়ি মিলিয়ে দৈনিক প্রায় ৩০০ ট্রেন চলে। ১৯৮০ সালে খড়্গপুরের সিগন্যাল প্রযুক্তি বদলানো হয়েছিল। তার পরে ট্রেন বেড়েছে অনেক, কিন্তু ওই ব্যবস্থার বদল হয়নি। রেল মন্ত্রক এ বার যাত্রী-সুরক্ষায় জোর দেওয়ায় বদলানো হচ্ছে ওই ব্যবস্থা।