Partha Chattejee

জটায়ু, রূপঙ্কর আর পার্থের মধ্যে মিল কোথায়? কোনও প্রশ্ন নয়, কোনও প্রশ্ন নয়!

জটায়ুর মুখে শোনা গিয়েছিল স্বগতোক্তি। কিন্তু উচ্চারণ না করে একই কথা বুঝিয়ে দিয়েছেন গায়ক রূপঙ্কর বাগচি এবং মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৬ জুন ২০২২ ২১:০৪
Share:

জটায়ু যদি হাজির থাকতেন ওই দুই সাংবাদিক বৈঠকে? নির্ঘাত বলতেন, ‘’কোনও প্রশ্ন নয়। কোনও প্রশ্ন নয়।‘’

Advertisement

যা শুনে যারপরনাই আহ্লাদিত হতেন সাম্প্রতিক সময়ের দুই আলোচিত ব্যক্তিত্ব— রূপঙ্কর বাগচি এবং পার্থ চট্টোপাধ্যায়। কারণ, এঁরা দু’জনেই প্রশ্ন নেওয়ায়, প্রশ্নের মুখোমুখি হওয়ায় বিশ্বাস করেন না।

সোনার কেল্লায় মরুপথে যেতে যেতে জটায়ুর প্রশ্নবাণ থেকে বাঁচতে ফেলুদা জটায়ুকে প্রশ্ন করতে বারণ করেছিলেন। কিন্তু রহস্য রোমাঞ্চ সিরিজের লেখক প্রশ্ন না করে থাকেন কী করে!! কিন্তু প্রদোষচন্দ্র মিত্রের বারণও তো অগ্রাহ্য করা যায় না। ফলে একের পর এক ঘটনা ঘটে, জটায়ু আড়চোখে দেখেন আর স্বগতোক্তি করেন করেন, ‘’কোনও প্রশ্ন নয়, কোনও প্রশ্ন নয়।’’

Advertisement

জটায়ুর মতোই সম্প্রতি সাংবাদিক বৈঠক ডেকেও প্রশ্ন নেননি গায়ক রূপঙ্কর। অথচ বলিউডের নেপথ্যগায়ক কেকে সম্পর্কে তাঁর উক্তি এবং কালক্রমে কেকে-র মৃত্যুর ঘটনা পরম্পরায় অবাঞ্ছিত বিতর্কে জড়িয়ে পড়া গায়কের কাছে প্রচুর প্রশ্ন ছিল। রূপঙ্কর প্রশ্ন শোনার দিকে যাননি। লিখিত বিবৃতি পাঠ করার পর হাত জোড় করে জানিয়েছেন, তিনি প্রশ্নের জবাব দেবেন না।

শুক্রবার গায়ক রূপঙ্কর। সোমবার মন্ত্রী পার্থ। এসএসসি দুর্নীতির অভিযোগে তাঁকে দু’দফায় জেরা করেছে সিবিআই। তার পর সোমবার প্রথম সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়েছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী।

প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী, অধুনা শিল্পমন্ত্রী পার্থের হাতে রয়েছে রাজ্যের পরিষদীয় দফতরও। সামনেই বিধানসভার বাদল অধিবেশন। তার আগে রীতিমাফিক সাংবাদিক বৈঠক ছিল। এই অধিবেশনে সরকারপক্ষ কী কী করবে মূলত সেটাই বক্তব্য ছিল তাঁর। কিন্তু পাশাপাশিই সাজানো ছিল এসএসসি নিয়োগে দুর্নীতি নিয়ে প্রশ্নও। যা নিয়ে তোলপাড় রাজ্য রাজনীতি। শিক্ষক নিয়োগে অস্বচ্ছতা থাকায় চাকরি খোয়াতে হয়েছে শিক্ষা দফতরের প্রতিমন্ত্রী পরেশ অধিকারীর মেয়ে অঙ্কিতাকে। যে সময়ের অভিযোগ, সেই সময়ে শিক্ষামন্ত্রী ছিলেন পার্থ।

এমন এক পরিস্থিতিতে পার্থকে অনেক প্রশ্ন করতে চেয়েছিল সংবাদমাধ্যম। কিন্তু পার্থ নিজের বক্তব্য শেষ করেই বলে দেন, ‘‘আজ আর কোনও প্রশ্নের উত্তর নয়।’’

সোনার কেল্লার পথে যেতে যেতে জটায়ু খুবই অপ্রতিভ গলায় ফেলুদাকে বলেছিলেন, ‘’উট সংক্রান্ত প্রশ্ন চলবে?’’

ফেলুদা: চলবে।

জটায়ু: উটের খাদ্য কী?

ফেলুদা: মূলত কাঁটাঝোপ।

জটায়ু: কাঁটা কি ওরা বেছে খায়?

ফেলুদা জবাব না দিয়ে সামনের রাস্তার দিকে তাকিয়েছিলেন। সত্যজিৎ রায় বেঁচে থাকলে হয়ত লিখতেন, উট ছাড়াও অনেকে কাঁটা বেছে খান। সে কাঁটার নাম— প্রশ্ন!

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তেফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন