রাজ্য সরকারি কর্মীদের ৪৯% মহার্ঘ ভাতা বকেয়া। সরকারি কর্মীরা ক্ষোভে ফুঁসছেন। যার আঁচ শাসক দল টের পাচ্ছে নিজেদের অনুগত সরকারি কর্মচারী সংগঠনেও। তার মধ্যেও ডব্লিউবিসিএস (এগজিকিউটিভ) স্তরে ১৭ এবং ১৮ নম্বর বেতনক্রমে থাকা আধিকারিকদের দু’টি বাড়তি ইনক্রিমেন্ট ঘোষণা করেছে রাজ্য সরকার। গত মাসেই এই মর্মে নির্দেশিকা জারি করেছে নবান্ন। ওই নির্দেশিকার সুফল পাবেন মূলত বিডিও, এসডিও এবং ডব্লিউবিসিএস (এগজিকিউটিভ) স্তরের যে আধিকারিকরা সচিবালয়ে যুগ্ম সচিব পদে এবং ডিরেক্টোরেটে প্রধান পদে কর্মরত। লোয়ার ডিভিশন অ্যাসিস্ট্যান্ট থেকে পদোন্নতি পেয়ে যাঁরা সচিবালয়ের যুগ্ম সচিব হয়েছেন বা সরকারি দফতরে অন্য যাঁরা ১৭ এবং ১৮ নম্বর বেতনক্রমে রয়েছেন, তাঁরা ওই ইনক্রিমেন্ট পাবেন না। এই নির্দেশিকাকে প্রশাসনের উঁচু তলার একাংশকে ‘বশে রাখা’র কৌশল হিসাবেই প্রশাসনের একাংশ।
রাজ্য কো-অর্ডিনেশন কমিটির শীর্ষ নেতা অনন্ত বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “কারা কত ইনক্রিমেন্ট পাবেন, সে ব্যাপারে নির্দিষ্ট নীতি না মেনে রাজ্য সরকার খেয়ালখুশি মতো চলছে।” পশ্চিমবঙ্গ সরকারি কর্মচারী ইউনিয়নের বক্তব্য, মূল্যবৃদ্ধির সঙ্গে তাল মিলিয়ে মহার্ঘ ভাতা দেওয়াই সরকারের দস্তুর। আর ওই ভাতা সব চেয়ে বেশি দরকার সাধারণ কর্মচারীদের। কারণ মূল্যবৃদ্ধির ফল বেশি ভুগতে হয় তাঁদেরই। কিন্তু এই সিদ্ধান্ত সরকারি কর্মচারীদের মধ্যে বৈষম্য সৃষ্টিরই সামিল বলে তাদের অভিযোগ। প্রশাসনের একাংশের বক্তব্য, ভোটার তালিকা তৈরি, সংশোধন এবং নির্বাচনে স্পর্শকাতর বুথের তালিকা তৈরির কাজে মুখ্য ভূমিকা থাকে বিডিও-সহ সংশ্লিষ্ট ওই আধিকারিকদেরই। সে দিকে লক্ষ রেখেই রাজ্য সরকার এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে ওই অংশের ধারণা।
বিজেপি-র নবগঠিত সরকারি কর্মচারী পরিষদের তরফে দেবাশিস শীলেরও অভিযোগ, জেলা প্রশাসন এবং সচিবালয়ের যে অংশকে শাসক দলের পক্ষে ব্যবহারের বেশি দরকার পড়ে, বিশেষত ভোটের সময়, ওই নির্দেশিকার মাধ্যমে তাঁদেরই আর্থিক সুবিধা পাইয়ে দিয়েছে সরকার। দেবাশিসবাবুর বক্তব্য, “আমরা এই বৈষম্যমূলক সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে রাস্তায় নামব।” বিজেপি বিধায়ক শমীক ভট্টাচার্য বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী গণতান্ত্রিক বিকেন্দ্রীকরণে বিশ্বাস করেন না। স্বৈরতান্ত্রিক ভাবে আমলাদের মাধ্যমে প্রশাসনের সব ক্ষমতা নিদের কুক্ষিগত করতে চান। ওই নির্দেশিকা তাঁর ওই মানসিকতারই প্রতিফলন।” নির্দেশিকা কর্মচারীদের ক্ষোভে কি আরও ইন্ধন দেবে না? তৃণমূলের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারি কর্মচারী ফেডারেশনের শীর্ষ নেতা মনোজ চক্রবর্তীর বক্তব্য, “রাজ্য সরকারি কর্মীদের কোনও স্তরে ইনক্রিমেন্টের আমরা বিরোধী নই। তবে বকেয়া মহার্ঘ ভাতার দাবিতে আমরা অনড়। আবার রাজ্য সরকারের কোষাগারের কথাও বিবেচনা করছি।”
জমি দখল ঘিরে সংঘর্ষ
নিজস্ব সংবাদদাতা • তমলুক ও ডোমকল
রেলের অব্যবহৃত জমির দখল নিয়ে তৃণমূল কর্মীদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ালেন এলাকার গাড়ি চালকেরা। পূর্ব মেদিনীপুরের কোলাঘাটে এই সংঘর্ষে দু’পক্ষের ১২ জন আহত হন। এর মধ্যে ছ’জন ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসাধীন। কোলাঘাটের তৃণমূল বিধায়ক বিপ্লব রায়চৌধুরীর কথায়, “বিজেপির লোকেরা ওই কার্যালয় দখলের পরিকল্পনা করেছিল। ওরাই গোলমাল পাকিয়েছে।” স্থানীয় বিজেপি নেতা উজ্জ্বল ভট্টাচার্যের পাল্টা অভিযোগ, তৃণমূল ওই জায়গায় দোকান বসানোর চেষ্টা করছে। চালকেরা তার প্রতিবাদ করলে তৃণমূল কর্মীরা মারধর করে। পুলিশ সুপার সুকেশ জৈন জানান, তদন্ত শুরু হয়েছে। কিন্তু রেলের জমি দখল করে তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠনের কার্যালয় চলছিল কী করে? রেলের খড়্গপুর বিভাগের জনসংযোগ আধিকারিক মুরলীধর সাহু বলেন, “কোলাঘাটের বিষয়টি ঠিক নজরে নেই।” বিপ্লববাবুর বক্তব্য, “দীর্ঘ দিন ধরেই ওখানে আমাদেরঅস্থায়ী অফিস রয়েছে।” মুর্শিদাবাদের সাদিখাঁরদেয়াড়ে শনিবার রাতে বিজেপির তোরণ ভাঙার অভিযোগ উঠেছে তৃণমূল ও সিপিএমের বিরুদ্ধে। অভিযোগ অস্বীকার করেছে দু’দলই।