Thermal Power Plant

Thermal Power Plant: বিদ্যুতের সঙ্কট এড়াতে বাড়ছে কয়লার রেক

য়লা বোঝাই রেককে পথ ছেড়ে দিতে গিয়ে দূরপাল্লার যাত্রিবাহী এক্সপ্রেস ট্রেন পরিষেবা ব্যাহত হতে পারে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করছেন কেউ কেউ।

Advertisement

ফিরোজ ইসলাম 

শেষ আপডেট: ১৮ এপ্রিল ২০২২ ০৭:২৩
Share:

ফাইল চিত্র।

গ্রীষ্মের রুদ্রমূর্তি এখনই ক্ষেত্রবিশেষে তাপপ্রবাহের রূপ নিয়েছে। ভরা বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠে তার ভয়াবহতা কোন পর্যায়ে পৌঁছবে, অনুমান করতেও ভয় হচ্ছে। ত্রাতা হতে পারে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ। কিন্তু তার জন্য যে-কাঁচামাল না-হলেই নয়, দেশের বিভিন্ন তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে সেই কয়লার মজুত ও জোগান হুহু করে কমে যাচ্ছে বলে অভিযোগ। রেল সূত্রের খবর, গত ন’বছরের মধ্যে ওই মজুতের পরিমাণ এ বার সর্বনিম্ন। কয়লার জোগানের সমস্যা দ্রুত সামাল দিতে না-পারলে সারা দেশে বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের আশঙ্কা আছে। এই অবস্থায় বিভিন্ন তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রে কয়লার চাহিদা মেটাতে নিজেদের বিভিন্ন জ়োনকে কার্যত যুদ্ধকালীন তৎপরতায় রেক জোগান দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে রেল মন্ত্রক।

Advertisement

প্রায় দু’বছরের অতিমারি পর্বের পরে সারা দেশেই শিল্প, কলকারখানা, বাজার, শপিং মল, হোটেল, বিনোদন পার্ক পুরো মাত্রায় চালু হতে শুরু করেছে। খুলেছে স্কুল-কলেজ। বিভিন্ন সংস্থার অফিসও পুরো মাত্রায় চালু হওয়ার পথে। এই পরিস্থিতিতে সারা দেশের তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলিতে মজুত কয়লার পরিমাণ কাঙ্ক্ষিত মাত্রার ২০ শতাংশের নীচে নেমে গিয়েছে বলে অভিযোগ উঠছে। অনেক তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে আগামী ন’দিন কাজ চালানোর মতো কয়লাও মজুত নেই।

রেল মন্ত্রক সূত্রের খবর, মজুত কয়লার সঙ্কট এতটাই তীব্র যে, গত ন’বছরের মধ্যে তাকে নিম্নতম বলছেন আধিকারিকেরা। পরিস্থিতি সামাল দিতে কয়লা পরিবহণের জন্য রেকের সংখ্যা বাড়ানোর পাশাপাশি রেক বোঝাই করা এবং খালি রেক দ্রুত ফিরিয়ে আনার সময় যথাসম্ভব কমিয়ে আনতে বলা হয়েছে। সাইডিংয়ে রেক দ্রুত বোঝাই করার সঙ্গে সঙ্গে যাতায়াতের পথে কয়লা বোঝাই রেককে কোথাও যাতে কোনও ভাবে আটকে থাকতে না-হয়, তা নিশ্চিত করার নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে। খালি রেক যাতে আবার কয়লা নিয়ে যাওয়ার জন্য দ্রুত ফিরে আসতে পারে, লক্ষ রাখতে হবে সে-দিকেও। দেশের মধ্যে বিভিন্ন খনি অঞ্চল ছাড়াও যাদের মাধ্যমে বিদেশ থেকে কয়লা আমদানি করা হয়, সেই সব বন্দরেও চাহিদা অনুযায়ী দ্রুত রেকের ব্যবস্থা করতে বলা হয়েছে।

Advertisement

রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, সামগ্রিক ব্যবস্থাপনায় গতি আনার সঙ্গে সঙ্গে বিপুল সংখ্যায় ওয়াগন কিনছে বিভিন্ন জ়োন। যাতে চাহিদা অনুযায়ী রেকের জোগান দিতে সুবিধা হয়।

পশ্চিমবঙ্গে কোলাঘাট, মেজিয়া, সাঁওতালডিহি তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে কয়লা আসে মহানদী কোল ফিল্ডসের বসুন্ধরা প্রকল্প থেকে। দক্ষিণ-পূর্ব রেল ওই প্রকল্প থেকে কয়লা বহন বাড়াতে বিশেষ রুট (আকারটা বাল‌্‌বের মতো মতো হয় বলে সেই বিকল্প পথকে বলা হয় ‘বাল্‌ব রুট’) তৈরি করেছে। এর ফলে কয়লা নামামোর পরে রেকের ইঞ্জিন খুলে ঘুরিয়ে এনে অন্যা প্রান্তে লাগানোর প্রয়োজন পড়ে না। কয়লা নিয়ে রেক সরাসরি বেরিয়ে আসতে পারে। কয়লা পরিবহণ বাড়াতে তৎপর হয়েছে পূর্ব রেলও।

চলতি গ্রীষ্মে বিদ্যুতের চাহিদা এমন বাড়তে পারে যে, তা প্রায় গত ৩৮ বছরের মধ্যে সর্বাধিক হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে রেল সূত্রের খবর। শুষ্ক এবং তীব্র গ্রীষ্মের দরুন চলতি বছরে বাতানুকূল যন্ত্রের ব্যবহার বাড়তে পারে অনেকটাই। শিল্পের পাশাপাশি চাহিদা বৃদ্ধির অন্যতম কারণ সেটাও। জুনের শেষ পর্যন্ত পর্যাপ্ত কয়লার জোগান অব্যাহত রাখার জন্য কোমর বেঁধে নামতে বলা হয়েছে রেল আধিকারিকদের। কয়লা বোঝাই রেককে পথ ছেড়ে দিতে গিয়ে দূরপাল্লার যাত্রিবাহী এক্সপ্রেস ট্রেন পরিষেবা ব্যাহত হতে পারে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করছেন কেউ কেউ।

এক রেলকর্তা অবশ্য বলেন, ‘‘যাত্রী পরিষেবা যথাসম্ভব অব্যাহত রেখেই কয়লাবাহী রেক ছোটানো হবে। তাই এই বিষয়ে এখনই উদ্বেগের কোনও কারণ নেই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন