মঙ্গলবার রাজ্যে উচ্চ মাধ্যমিকের ফল প্রকাশ হয়েছে। মাধ্যমিক, সিবিএসই, আইএসসি-র মতো উচ্চ মাধ্যমিকে প্রথম না হলেও পাশের হারে ছাত্রদের টেক্কা দিল ছাত্রীরা। কলকাতা, পূর্ব মেদিনীপুর, বর্ধমান, জলপাইগুড়ির মতো ১৫টি জেলায় মেয়েদের পাশের হার ছেলেদের থেকে বেশি বলে জানিয়েছে উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ।
শুধু তাই নয়, ছাত্রীদের পাশের হার আগের বছরের তুলনায় বেড়েছে এক শতাংশ। এ বার ছাত্রদের পাশের হার বেড়েছে মাত্র ০.০৪ শতাংশ। নিজেদের প্রমাণ করার তাগিদই এই সাফল্যের কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন এ বছরের উচ্চমাধ্যমিকে ছাত্রীদের মধ্যে প্রথম হওয়া কলকাতার বিদ্যাভারতী বালিকা বিদ্যালয়ের ছাত্রী মঞ্জিষ্ঠা সাহা।
এ বছরের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় ৯৬.৮০ শতাংশ নম্বর পেয়ে সার্বিক ভাবে ষষ্ঠ এবং ছাত্রীদের মধ্যে প্রথম হয়েছেন মঞ্জিষ্ঠা। এ বার ছাত্রীদের এই সাফল্যের কারণ হিসেবে তাঁর মত, ‘‘আগে মেয়েরা নিজেদের প্রমাণ করার সুযোগ পেত না। এখন সমাজ এবং পরিবার ছাত্রীদের সেই সুযোগ দিচ্ছে। তার ফলে এই সাফল্য।’’ পাশাপাশি ছাত্রীদের জন্য রাজ্য সরকারের সদিচ্ছার কথাও উল্লেখ করেন মঞ্জিষ্ঠা। কন্যাশ্রীর সুফলও পাওয়া যাচ্ছে বলেই মত তাঁর। সে কারণে প্রথম দশে ঠাঁই হয়েছে তেরো জন ছাত্রীর।
আরও পড়ুন: সন্ত্রাস বা এনএসজি, মোদী-মের্কেল একসুর
আইএসসি-তে প্রথম হওয়া অনন্যা মাইতির মতোই মঞ্জিষ্ঠারও মত, সাফল্য পেতে হলে প্রতিযোগিতায় নামার প্রয়োজন নেই। তাঁর মতে, ‘‘নিজের সেরাটা দিলেই সাফল্য পাওয়া যায়। প্রতিযোগিতার মানসিকতা তৈরি হলে মানসিক চাপ আরও বেড়ে যায়। তার প্রভাব পড়ে পড়াশোনাতেও। সেটার কোনও প্রয়োজন নেই।’’
নাবালিকা মেয়েদের বিয়ে বন্ধ করার যে কাজ রাজ্য সরকার শুরু করেছে, সেটাও ছাত্রীদের বাড়তি উৎসাহ দিচ্ছে বলে দাবি বাঁকুড়ার রাজাগ্রাম এস বি রাহা ইনস্টিটিউশন-এর ছাত্রী দশম স্থানাধিকারী জয়শ্রী নন্দীর। এই পড়ুয়ার কথায়, ‘‘মেয়েরা যে শুধু বিয়ে করার জন্যই জন্মায়নি, তাদেরও যে দক্ষতা রয়েছে— সমাজে এখন সেই ধারণা গড়ে উঠছে। কন্যাশ্রী, নাবালিকার বিয়ে বন্ধ করার উদ্যোগে আমরাও মনে অনেক সাহস পাচ্ছি। সেটাই আমাদের এগোতে সাহায্য করছে।’’